শিরোনাম
শুক্রবার, ১৬ ডিসেম্বর, ২০১৬ ০০:০০ টা
সারা বিশ্বে বিস্ময়

বিনামূল্যে এবার ৩৬ কোটি বই পাবে শিক্ষার্থীরা

আকতারুজ্জামান

বিনামূল্যে এবার ৩৬ কোটি বই পাবে শিক্ষার্থীরা

সাত বছর ধরে বছরের প্রথম দিনই বিনামূল্যে বই হাতে পাচ্ছে প্রথম থেকে নবম শ্রেণির ছাত্র-ছাত্রীরা। এ বছরের শুরুতে ৩৩ কোটিরও বেশি বই বিতরণ করা হয়েছে। শিক্ষা মন্ত্রণালয় সূত্র বলছে, পৃথিবীর কোনো দেশে এত বিপুলসংখ্যক বই বিনামূল্যে বিতরণের নজির নেই। শিক্ষামন্ত্রী বলছেন, বিনামূল্যে এত বিপুলসংখ্যক বই বিতরণ সারা বিশ্বে বিস্ময়ের সৃষ্টি করেছে। আগামী বছরও বই উৎসবের মাধ্যমে বিনামূল্যে ছাত্র-ছাত্রীদের হাতে তুলে দেওয়া হবে ৩৬ কোটি ২১ লাখ ৮২ হাজার ২৮৫টি বই। বই উৎসব সামনে রেখে শিক্ষা মন্ত্রণালয় বিষয়টি নিয়মিত তদারক করছে। সূত্র বলছে, ইতিমধ্যে প্রায় ৯০ শতাংশ বই স্কুলে স্কুলে পৌঁছে গেছে। ১ জানুয়ারি স্কুলে স্কুলে করা হবে বই উৎসবের আয়োজন। শিক্ষা বছরের প্রথম দিন থেকেই স্কুলে স্কুলে শিক্ষার্থীদের পাঠ গ্রহণ নিরবচ্ছিন্ন করতে সরকারের শিক্ষা মন্ত্রণালয় বিনামূল্যে বই বিতরণ উপলক্ষে কার্যক্রম হাতে নেয় ২০০৯ সালে। মন্ত্রণালয়ের সার্বিক তত্ত্বাবধানে জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড (এনসিটিবি) ২০১০ সালে স্কুল, মাদ্রাসা ও কারিগরি পদ্ধতির প্রথম থেকে নবম শ্রেণি পর্যন্ত সব শিক্ষার্থীর হাতে বছরের প্রথম দিন বই তুলে দেয়। ২২২টি বিষয়ের মোট ১৯ কোটি ৯০ লাখ ৯৬ হাজার ৫৬১টি নতুন বই বিনামূল্যে বিতরণ করা হয় তখন। এরপর ২০১১ সালে বিতরণ করা হয় ২৩ কোটি ২২ লাখ ২১ হাজার ২৩৪টি বই। ২০১২, ২০১৩, ২০১৪ ও ২০১৫ সালে বিনামূল্যে বই বিতরণ করা হয় যথাক্রমে ২২ কোটি ১০ লাখ ৬৮ হাজার ৩৩৩টি, ২৬ কোটি ১৮ লাখ ৯ হাজার ১০৬টি, ৩১ কোটি ৭৮ লাখ ১২ হাজার ৯৬৬টি ও ৩২ কোটি ৬৩ লাখ ৪৭ হাজার ৯২৩টি বই। এ বছরের শুরুতেই বিনামূল্যে বই বিতরণ করা হয় ৩৩ কোটি ৩৭ লাখ ৪৭ হাজার ৯৭২টি। আগামী বছরের প্রথম দিন শিক্ষার্থীদের হাতে ৩৬ কোটি ২১ লাখ ৮২ হাজার ২৮৫টি বই তুলে দেওয়ার লক্ষ্য নির্ধারণ করেছে সরকার। শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ কেন্দ্রীয়ভাবে ঢাকায় আজিমপুর গভর্নমেন্ট স্কুল অ্যান্ড কলেজ মাঠে বই বিতরণ উৎসবের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করবেন। সারা দেশে সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে এ উৎসব উদ্যাপিত হবে। শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ গতকাল বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, সাত বছর ধরে এই সরকার শিক্ষার্থীদের হাতে বছরের প্রথম দিনই বিনামূল্যে নতুন বই তুলে দিচ্ছে। এটি সারা বিশ্বে বিস্ময়ের সৃষ্টি করেছে। এর আগে শিক্ষার্থীদের বই পেতে নানা ভোগান্তি পোহাতে হতো।

টাকা দিয়েও তারা বই কিনতে পারত না। বছরের অর্ধেক সময় পর্যন্ত তারা বইয়ের জন্য হা-হুতাশ করত। এতে বিলম্বিত হতো শিক্ষার্থীদের পড়াশোনা। তিনি বলেন, ‘আমরা দায়িত্ব নেওয়ার আগে স্কুলে আসার উপযোগী অর্ধেক শিশুও স্কুলে আসত না। আমরা এর কারণ হিসেবে দেখলাম, অনেক পরিবার দরিদ্রতার কারণে বই কিনে দিতে পারে না। শিশুদের স্কুলমুখী করতে আমরা বিনামূল্যে বই দেওয়ার চ্যালেঞ্জ হাতে নিই। সবার সহযোগিতায় এখন আমরা বিপুলসংখ্যক বই বিনামূল্যে পাঠিয়ে দিচ্ছি। এর ফল হিসেবে শিক্ষার্থীরা স্কুলমুখী হয়েছে। ৯৯ শতাংশের বেশি শিশু এখন প্রাথমিক স্কুলে যাচ্ছে। তাদের ঝরে পড়ার হার কমেছে। এ ছাড়া শিক্ষা ক্ষেত্রে অভূতপূর্ব উন্নয়ন সাধিত হয়েছে।’ মন্ত্রী বলেন, সব পাঠ্যবই ই-বুকে রূপান্তর করে তা ওয়েবসাইটে আপলোড করা হয়েছে। ফলে যে-কেউ অনলাইন থেকেও এসব বই সংগ্রহ করতে পারছেন। ২০১৭ সালের জন্য পাঁচটি ভাষায় ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর শিক্ষার্থীদের পাঠ্যপুস্তক ছাপানো হয়েছে। প্রতিবন্ধী শিক্ষার্থীদের জন্য বই ছাপা হয়েছে ব্রেইল পদ্ধতিতে।

সর্বশেষ খবর