শনিবার, ২৪ ডিসেম্বর, ২০১৬ ০০:০০ টা

বিচার বিভাগীয় তদন্ত করুন : রিজভী

নিজস্ব প্রতিবেদক

নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশন (নাসিক) নির্বাচনে ‘কারচুপি’র অভিযোগ করে এর বিচার বিভাগীয় তদন্ত দাবি করেছে বিএনপি। গতকাল সকালে নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে প্রতিক্রিয়ায় দলের সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী দলের পক্ষ থেকে এই দাবি জানান। তিনি বলেন, ‘ধানের শীষের প্রার্থী অ্যাডভোকেট সাখাওয়াত হোসেন খানের কারচুপির অভিযোগকে উড়িয়ে দেওয়া যায় না। অভিযোগ আমলে নিয়ে খতিয়ে দেখা অত্যন্ত জরুরি। সেজন্য গতকালের নির্বাচনের ভোট গ্রহণ, গণনা, ফলাফল ইত্যাদির বিচার বিভাগীয় তদন্তের জন্য আমি বিএনপির পক্ষ  থেকে জোর দাবি জানাচ্ছি।’ সংবাদ সম্মেলনে দলের অন্যদের মধ্যে দলের ভাইস  চেয়ারম্যান অধ্যাপক এজেডএম জাহিদ হোসেন, উপদেষ্টা কাউন্সিলের সদস্য আবদুস সালাম, কেন্দ্রীয়  নেতা খায়রুল কবির খোকন, বিলকিস জাহান শিরিন, অ্যাডভোটেক মাসুদ আহমেদ তালুকদার, আফরোজা আব্বাস, অ্যাডভোকেট আবদুস সালাম আজাদ, অ্যালবার্ট পি কস্টা, মুনির হোসেন প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন। নাসিক নির্বাচনে ১৭৪টির মধ্যে ১৪৪টি স্বাক্ষরকৃত ফলাফল শিট বিএপির এজেন্টদের সরবরাহ করা হয়নি বলে অভিযোগ করেন রিজভী। তিনি বলেন, ‘ধানের শীষ প্রার্থী অভিযোগ করেছেন একটি কেন্দ্রে মোট ভোট পড়েছে এক হাজার, অথচ সেখানে  ঘোষণা করা হয়েছিল নৌকা প্রতীকের ৮০০ এবং ধানের শীষ ৫০০। পরে সাংবাদিক ও সেখানকার নির্বাচনী এজেন্টরা এই অভিযোগটা করলে প্রিসাইডিং অফিসার ফলাফল পাল্টে দেন। রিজভী বলেন, ‘আমরা কয়েকদিন আগে থেকে বলে আসছিলাম যে, এই নির্বাচনের সুষ্ঠু পরিবেশের আড়ালে সরকারি  ভেল্কিবাজির  কোনো মহড়া চলছে কিনা? জনগণের রায়কে পাল্টে ফেলার চেষ্টা হচ্ছে কি না? কারণ, এবারে নাসিক নির্বাচনে ৭২ ঘণ্টা পূর্ব  থেকে এলাকার বাইরের লোকজনকে নির্বাচনী প্রচারণায় নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়। ফলে দলের  কেন্দ্রীয় ও অন্যান্য জেলার নেতারা নির্ধারিত প্রচারণার  শেষ সময়ের দেড়দিন আগে থেকেই এলাকার প্রচার-প্রচারণায় অংশ নিতে পারেননি, যা নজিরবিহীন। এত আগে নির্বাচনী প্রচার-প্রচারণা বন্ধ করাও সন্দেহজনক। এটি আগে ছিল না।’ তিনি বলেন, ‘চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া  যেদিন গণসংযোগের উদ্যোগ নিচ্ছিলেন, এটি বানচাল করার জন্য স্থানীয় প্রশাসন আবার নতুন করে ৭২ ঘণ্টার সেই নিষেধাজ্ঞা আরোপ জারি করে। এ ছাড়া ভয়ভীতির পরিবেশ বিদ্যমান ছিল—যার প্রতিফলন আমরা দেখলাম ভোট কেন্দ্রে স্বল্পসংখ্যক ভোটারের উপস্থিতি। কোনো কোনো কেন্দ্রে ভোট পড়েছে মাত্র ২৫ ভাগ। সার্বিকভাবেও স্থানীয় নির্বাচনে যে পরিমাণ ভোট পড়ার কথা, তার চেয়ে ভোটারদের উপস্থিতি ছিল অনেক কম।’ তিনি বলেন, কোনো কোনো কেন্দ্রে সারাদিন ভোটার উপস্থিতি নগণ্য দেখা গেলেও  ফলাফলে দেখা গেছে শতকরা ৮০ ভাগ ভোট পড়েছে। আবার কোনো কোনো কেন্দ্রে দীর্ঘ লাইন ধরে ভোট দিতে গেলে  দেখা গেছে, তাদের ভোট আগেই দেওয়া হয়ে  গেছে—যে খবরটি আজকে বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশিত হয়েছে। আইন প্রয়োগকারী সংস্থার নজিরবিহীন নিরাপত্তার আড়ালে রাতের অন্ধকারে কী ভূমিকা রেখেছে তা নিয়েও জনমনে সংশয় রয়েছে। কারণ কারফিউর মতো পরিস্থিতিতে কোনো কিছু জনগণের নজরদারিতে থাকার কথা নয়।’

সর্বশেষ খবর