রবিবার, ২৫ ডিসেম্বর, ২০১৬ ০০:০০ টা

শোডাউন করবে জাপা

শফিকুল ইসলাম সোহাগ

শোডাউন করবে জাপা

সংসদের বিরোধী দল জাতীয় পার্টির ৩১তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে আগামী ১ জানুয়ারি রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে মহাসমাবেশ করবে। সমাবেশে ব্যাপক শোডাউন করার জন্য জোর প্রস্তুতি নিয়েছে দলটির নেতা-কর্মীরা। ২২ ডিসেম্বর সুপ্রিম কোর্ট বার অ্যাসোসিয়েশন মিলনায়তনে ঢাকা মহানগর দক্ষিণ জাপার প্রতিনিধি সভায় পার্টি চেয়ারম্যান এইচ এম এরশাদ ঘোষণা দেন, সমাবেশে সারা দেশ থেকে অন্তত দুই লাখ নেতা-কর্মী সমর্থক ও সাধারণ মানুষ অংশ নেবে। সমাবেশ সফল করতে এক মাস ধরে প্রস্তুতি নিয়েছে জাতীয় পার্টি। জানতে চাইলে জাতীয় পার্টির কো-চেয়ারম্যান জিএম কাদের বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, মহাসমাবেশকে ঘিরে আমাদের প্রস্তুতি যথেষ্ট। সারা দেশের নেতা-কর্মীরা মহাসমাবেশে যোগ দেওয়ার জন্য উৎসাহ দেখাচ্ছে। আশা করছি এখান থেকেই আমাদের আরও নতুন উদ্যমে পথচলা শুরু হবে।

জানা যায়, পার্টি চেয়ারম্যান নিজ জেলা রংপুরে দুই দফা সফর করে রংপুর বিভাগের নেতা-কর্মীদের নিয়ে রুদ্ধদ্বার বৈঠক করেছেন। বিরোধীদলীয় নেতা রওশন এরশাদও নিজ জেলা ময়মনসিংহের নেতাদের নিয়ে প্রতিনিধি সভা করেছেন। পার্টির মহাসচিব এ বি এম রুহুল আমিন হাওলাদারও বিভিন্ন জেলা সফর করছেন। শুক্রবার ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় ঢাকা-সিলেট মহাসড়ক সংলগ্ন লাল-শালুক রেস্টুরেন্টে মতবিনিময় সভা করেন রুহুল  আমিন হাওলাদার। জেলা জাতীয় পার্টির আহ্বায়ক জিয়াউল হক মৃধার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত মতবিনিময় সভায় বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন এরশাদের উপদেষ্টা কাজী মো. মামুনুর রশীদসহ কেন্দ্রীয় নেতারা। কেন্দ্রের পাশাপাশি যুব সংহতি, ছাত্রসমাজ, শ্রমিক পার্টি, কৃষক পার্টি, মহিলা পার্টি, স্বেচ্ছাসেবক পার্টি, ক্রীড়া সংহতি দফায় দফায় প্রস্তুতি সভা করেছেন। ঢাকা দক্ষিণের প্রস্তুতি : সমাবেশ সফল করতে ঢাকা মহানগর দক্ষিণ নেতা-কর্মীরা প্রতিদিন প্রতিটি থানায় কর্মিসভা করছে। এরশাদ বলেছেন, দক্ষিণের প্রস্তুতি দেখে মুগ্ধ। আমি আশা করি তোমরা মহাসমাবেশ সফল করার জন্য গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে। এলাকার এমপি বাবলা সমাবেশে দক্ষিণ থেকে পঁয়ত্রিশ হাজার নেতা-কর্মী অংশ নেবে বলে ঘোষণা দেন। গতকাল কদমতলি থানা জাতীয় পার্টির উদ্যোগে বালুর মাঠে সমাবেশ হয়েছে। এতে প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন সৈয়দ আবু হোসেন বাবলা। এ ছাড়া রাজধানীর যাত্রাবাড়ী, মতিঝিল, গেণ্ডারিয়া, বংশাল, লালবাগ, ধানমন্ডি ও শাহজাহানপুর থানায় গতকাল প্রস্তুতি সভা করেছে জাতীয় পার্টি। মতিঝিলের প্রস্তুতি সভায় অংশ নেন দক্ষিণের সাধারণ সম্পাদক জহিরুল আলম রুবেল। তিন ধরনের পোস্টার লাগানো হয়েছে। লক্ষাধিক লিফলেট প্রকাশ করেছে। এ ছাড়াও গুলিস্তান, টিকাটুলি, পোস্তগোলা, জুরাইন, বঙ্গবন্ধু এভিনিউসহ বিভিন্ন স্থানে বিলবোর্ড স্থাপন করা হয়েছে। শ্যামপুর ও কদমতলি ছেয়ে গেছে পোস্টার ও ফেস্টুনে। সৈয়দ আবু হোসেন বাবলা বলেন, ১ জানুয়ারি হবে জাতীয় রাজনীতির টার্নিং পয়েন্ট। এদিন প্রমাণ হবে এরশাদই হবেন ক্ষমতায় যাওয়ার নিয়ামক শক্তি। ঢাকা মহানগর উত্তরের প্রস্তুতি : উত্তরের পক্ষ থেকেও লিফলেট, ব্যানার, পোস্টার লাগানোর কাজ শুরু হচ্ছে। ২২টি পয়েন্টে বিলবোর্ড, ৪০টি ফুটঅভার ব্রিজে ১০০ ফুট লম্বা ব্যানার, ১৫টি তোরণ লাগানোর কাজ শুরু হয়েছে। প্রতিদিনই ওয়ার্ডে ওয়ার্ডে চলছে প্রস্তুতি সভা। উত্তরের সভাপতি এস এম ফয়সল চিশতী বলেন, যে কোনে মূল্যে মহাসমাবেশ সফল করতে চাই। এ জন্য যত ধরনের প্রস্তুতি নেওয়া দরকার নেওয়া হচ্ছে। গতকালও পল্লবীতে ঢাকা মহানগর উত্তরের ৬ নং ওয়ার্ড জাপার সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। এতে প্রধান অতিথির বক্তব্য দেন ফয়সল চিশতী। জানা যায়, মহাসমাবেশকে সফল করার জন্য ৬টি উপ-কমিটি করা হয়েছে। সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে গত সপ্তাহ থেকে মঞ্চ নির্মাণের কাজও শুরু হয়েছে। অর্ধশতাধিক শ্রমিক মঞ্চ নির্মাণের কাজ করছে। লাঙ্গলের আদলে বিশাল আকৃতির মঞ্চ নির্মাণ হচ্ছে। এরশাদের উপদেষ্টা কাজী মামুনুর রশিদ বলেন, এবারের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর সমাবেশ হবে অন্যবারের চেয়ে ব্যতিক্রম। এখান থেকেই আমাদের আগামীর সরকার গঠনের যাত্রা শুরু হবে। তিনি বলেন, পার্টির চেয়ারম্যানের নির্দেশে প্রতিদিন এলাকায় সময় দিচ্ছি। আশা করছি ব্রাক্ষণবাড়িয়া থেকে মহাসমাবেশে বিপুলসংখ্যক নেতা-কর্মী যোগ দেবে। মহাসমাবেশের শৃঙ্খলা কমিটির আহ্বায়ক পার্টির প্রেসিডিয়াম সদস্য মীর আবদুস সবুর আসুদ বলেন, মহাসমাবেশ সফল করতে ঢাকাসহ সারা দেশ থেকে প্রতিটি থানা ও ওয়ার্ডের নেতা-কর্মীরা মাঠে-ময়দানে নেমে পড়েছেন।

সর্বশেষ খবর