রবিবার, ২৫ ডিসেম্বর, ২০১৬ ০০:০০ টা

শেয়ারবাজারে চাঙ্গা মেজাজ

আলী রিয়াজ

হঠাৎ করে চাঙ্গা মেজাজে ফিরেছে শেয়ারবাজার। বছরের শেষ মাসে এসে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) মূল্য সূচক ও লেনদেন বেড়েছে প্রায় দ্বিগুণ। পতনের ধারা থেকে বের হয়ে এখন প্রতিদিন বাড়ছে শেয়ারের দর। এ অবস্থায় বেশির ভাগ কোম্পানি শেয়ার দর। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, বছরের শেষদিকে অনেক কোম্পানির এজিএম থাকে। কোম্পানিগুলো লভ্যাংশ ঘোষণা করে। এর প্রভাবে শেয়ারবাজারও চাঙ্গা হয়ে উঠছে।

ডিএসই সূত্রে জানা গেছে, চলতি বছরের নভেম্বরের আগে প্রায় ১১ মাস ধরেই ডিএসই লেনদেন ছয়শ কোটি টাকার ওপর যায়নি। এর মধ্যে বেশির ভাগ দিনেই লেনদেন হয়েছে তিনশ কোটি টাকার নিচে। ডিসেম্বর মাস শুরু হওয়ার পর লেনদেন হার বেড়ে যায় প্রায় একশ শতাংশ পর্যন্ত। চলতি মাসে বছরের সর্বোচ্চ রেকর্ড পরিমাণ লেনদেন হয়েছে প্রায় দেড় হাজার কোটি টাকা। এ ছাড়াও লেনদেনের গড় হার ছিল প্রায় ৭০০ কোটি টাকা। সর্বশেষ গত বৃহস্পতিবার ডিএসইতে লেনদেন হয়েছে ৯০০ কোটি টাকার বেশি। অন্যদিকে ডিএসইর মূল্যসূচক ডিএসইএক্সও বছরের সর্বোচ্চ অবস্থানে পৌঁছেছে। চলতি বছরের ডিএসইএক্স চার হাজার পয়েন্টের ঘরেই ছিল দীর্ঘদিন। কিন্তু সর্বশেষ ডিএসইএক্স সূচক দাঁড়িয়েছে প্রায় পাঁচ হাজার পয়েন্টে। যা চলতি বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ। ডিএসই সূত্রে জানা গেছে, গত এক মাসে ডিএসইর লেনদেনে দেখা গেছে তালিকাভুক্ত প্রায় তিনশ কোম্পানির শেয়ার দর বেড়েছে। এর মধ্যে কয়েকটি কোম্পানির দর বেড়েছে কয়েকগুণ। এর মধ্যে সিমেন্ট, টেক্সটাইল, ব্যাংক খাতের শেয়ার দর বেড়েছে। অন্যান্য খাতের কোম্পানির শেয়ার দরও তুলনামূলক বেড়েছে। ডিএসইর লেনদেনে চাঙ্গা মেজাজ ফিরে আসায় বেড়েছে বাজার মূলধনও। পরিসংখ্যানে দেখা গেছে, চলতি মাসে ১৬ দিনের লেনদেনে বাজার মূলধন বেড়েছে ৫০০০ কোটি টাকার বেশি। গত ৩০ নভেম্বর ডিএসইর মোট বাজার মূলধন ছিল তিন লাখ ৩২ হাজার কোটি টাকা। সর্বশেষ তা দাঁড়িয়েছে তিন লাখ ৩৭ কোটি টাকায়। ডিএসইর ব্লু চিফস বা শীর্ষ ২০ কোম্পানির শেয়ার দর দেখা গেছে ১০ থেকে ২০ শতাংশ পর্যন্ত বেড়েছে। জানতে চাইলে অর্থনীতিবিদ অধ্যাপক আবু আহমেদ বলেন, বছরের শেষ সময় হওয়ায় বেশির ভাগ কোম্পানির ডিভিডেন্ড ঘোষণা দিয়েছে। এজিএম মৌসুম বলা যায়। এর ইতিবাচক প্রভাবই পড়েছে শেয়ারবাজার। এ ছাড়া বেশির ভাগ কোম্পানির শেয়ার দর ধারাবাহিকভাবেই কম ছিল। সেসব কোম্পানিও এ বছর ডিভিডেন্ড দিয়েছে। ব্যাংকিং খাত কয়েক বছর ধরেই খুব নিচের দিকে ছিল। এখন ব্যাংকিং ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোর বিনিয়োগ সীমা নিয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের সিদ্ধান্তের প্রভাব পড়েছে। কারণ কয়েক মাস ধরে তারা হয়তো কিছু শেয়ার কিনেছে। এই ইতিবাচক ধারা ধরে রাখতে হলে কার্যকর পদক্ষেপ নিতে হবে। এ জন্য বিএসইসিকে কঠোর ভূমিকা নিতে হবে। যেসব শেয়ার এ বছর আইপিও এসেছে তার অনেকগুলো নিয়েই প্রশ্ন আছে। এ ছাড়া আস্থা ধরে রাখতে হলে বহুজাতিক কোম্পানিকে বিশেষ সুবিধা দিয়ে বাজারে নিয়ে আসতে হবে।

সর্বশেষ খবর