বুধবার, ২৮ ডিসেম্বর, ২০১৬ ০০:০০ টা

হঠাৎ বেড়েছে সোনা চোরাচালান

রুহুল আমিন রাসেল

হঠাৎ বেড়েছে সোনা চোরাচালান

দেশে হঠাৎ সোনা চোরাচালান বেড়েছে। চলতি বছর কিছুটা নিয়ন্ত্রণে থাকলেও বছর শেষে গত কয়েকদিনে ব্যাপক আটক হয়েছে অবৈধ পথে আসা সোনা। এ বছর ৩৪ কোটি টাকা দামের ৬৯ কেজির বেশি সোনা আটক করে শুল্ক গোয়েন্দা। সংস্থাটি বিগত ৪ বছরে ১৩১ জন আসামিসহ মোট ১ হাজার ৬৫ কেজি ৭২৬ গ্রাম সোনা আটক করে। এই সোনার দাম ৫০১ কোটি ৭ লাখ ৪৫ হাজার টাকা। তথ্য মতে, ঢাকার হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর দিয়ে গত ২৫ ডিসেম্বর আসা চোরাচালানের সাড়ে ১১ কেজি সোনা আটক করা হয়। এর আগের দুই দিনে ২৪ ডিসেম্বর সাড়ে ৪ কেজি ও ২৩ ডিসেম্বর ৬ কেজি ৬৬৫ গ্রাম সোনা আটক হয়। তারও আগে গত ১৭ ডিসেম্বর সিলেট বিমানবন্দরে ১ কেজি ৮০০ গ্রাম সোনা আটক করা হয়। এ প্রসঙ্গে গতকাল শুল্ক গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদফতরের মহাপরিচালক ড. মইনুল খান বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, গত কয়েক দিনে সোনা চোরাচালান বেড়ে যাওয়ায় আমরা শঙ্কিত। কারণ-প্রতিবেশী দেশে ডিমনিটাইজেশন পলিসি চলছে। মুদ্রা বহির্ভূত অর্থনীতিতে (ক্যাশলেস ইকোনমি) তারা চলে যাচ্ছে। ফলে সোনার মাধ্যমে অবৈধ বাণিজ্যিক লেনদেন হওয়ার সম্ভাবনা আছে। এতে বাংলাদেশ সোনা চোরাচালানের ট্রানজিট হিসেবে ব্যবহার হওয়ার আশঙ্কা করছি। এই আশঙ্কা থেকেই অন্য সংস্থাগুলোর সঙ্গে আমরা কাজ করছি। জানা গেছে, বিগত চার বছরের মধ্যে চলতি বছরই কম চোরাচালানের সোনা আটকের ঘটনা ঘটেছে। তবে বিগত ২০১৩ সালে ১৫১ কেজি ৫৪ গ্রাম সোনা আটক হলেও পরের বছর ২০১৪ সালে সোনা চোরাচালান অনেক বেড়ে যায়। এ সময় দেশের ইতিহাসে সবচেয়ে বড় বড় সোনার চালান আটক হয়। সব মিলিয়ে ২০১৪      সালে ৬৪১ কেজি ৯০৮ গ্রাম সোনা আটক হয়। এরপরের দুই বছরে অবৈধ পথে সোনার চোরাচালান তুলনামূলক কমে যায়। ফলে ২০১৫ সালে যেখানে ২০৩ কেজি ২৫৪ গ্রাম সোনা আটক হয়েছে, সেখানে চলতি বছরের গত ২৪ ডিসেম্বর পর্যন্ত চোরাচালানে আসা আটক সোনার পরিমাণ ৬৯ কেজি ২৪ গ্রাম। এ ছাড়াও গত চার বছরে গোয়েন্দা তত্পরতায় আরও প্রায় ৫০০ মণ সোনা চোরাচালান প্রতিরোধ করা হয়েছে বলে দাবি শুল্ক গোয়েন্দার। তথ্যমতে, অবৈধভাবে চোরাচালানের মাধ্যমে আসা অধিকাংশ সোনাই ঢাকার হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে আটক হয়। অন্যান্য বন্দর দিয়ে আসা সোনার  চালানও আটক করেছে শুল্ক গোয়েন্দারা। সূত্র জানায়, আটক হওয়া সোনা বাংলাদেশ ব্যাংকের গুদামে অস্থায়ীভাবে জমা হয় এবং মামলা নিষ্পত্তি শেষে বাজেয়াপ্ত হলে তা বিক্রি করে পাওয়া টাকা রাজস্ব হিসেবে এনবিআরে জমা হয়। নজরদারি অব্যাহত থাকার ফলে সোনা চোরাচালান অনেকাংশে নিয়ন্ত্রণে এসেছে বলে দাবি শুল্ক গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদফতরের।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর