বুধবার, ২৮ ডিসেম্বর, ২০১৬ ০০:০০ টা

রোগী জিম্মি করে ধর্মঘট

রামেকে দিনভর ভোগান্তি রাতে প্রত্যাহার

নিজস্ব প্রতিবেদক, রাজশাহী

রোগী জিম্মি করে ধর্মঘট

রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে (রামেক) ইন্টার্ন চিকিৎসকদের ডাকা অনির্দিষ্টকালের ধর্মঘট প্রত্যাহার করা হয়েছে। গতকাল রাত ৯টার দিকে স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতাদের মধ্যস্থতায় ধর্মঘট প্রত্যাহার করা হয়। ধর্মঘট প্রত্যাহারের ফলে অবসান হয়েছে রোগীদের ভোগান্তির। এর আগে সোমবার রোগীর স্বজনদের হাতে লাঞ্ছিত  হওয়ার প্রতিবাদে  অনির্দিষ্টকালের ধর্মঘট শুরু করেন রামেক হাসপাতালে ইন্টার্ন চিকিৎসকরা। সোমবার রাতে ডাকা এ ধর্মঘট গতকালও অব্যাহত ছিল। এতে চরম ভোগান্তিতে পড়েন রোগীরা। গতকাল সকাল সাড়ে ১০টায় হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল এ এফ এম রফিকুল ইসলাম জানান, তিনি ইন্টার্নদের সঙ্গে বসে কর্মবিরতি প্রত্যাহারের চেষ্টা করছেন। তবে বৈঠক শেষে ইন্টার্ন চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, তাদের নিরাপত্তা নিশ্চিত না করা পর্যন্ত ধর্মঘট চলবে।

এদিকে ইন্টার্নরা কর্মবিরতিতে যাওয়ায় হাসপাতালে চিকিৎসাসেবা প্রায় বন্ধ হয়ে যায়। সোমবার রাত ১০টা থেকে ১১টা পর্যন্ত জরুরি বিভাগের প্রধান ফটকে তালা ঝুলিয়ে ইন্টার্ন চিকিৎসকরা ঘটনার প্রতিবাদ জানান। এ সময় হাসপাতালে এক ঘণ্টা ধরে বন্ধ থাকে জরুরি সেবা। পরে জরুরি বিভাগের তালা খুলে দেওয়া হয়। তবে কর্মবিরতি চলছিল। রামেক হাসপাতাল সূত্র জানায়, ২২ নম্বর ওয়ার্ডে ইতি নামে এক নারী ভর্তি ছিলেন। সোমবার রাত ৮টার দিকে স্বজনরা ইতিকে দেখতে যান। ওই সময় আবু নাইম পরাগ নামে এক ইন্টার্ন চিকিৎসক রোগীর কাছে স্বজনদের ভিড় দেখে গালাগালি শুরু করেন। একপর্যায়ে রোগীর স্বজনরা ক্ষিপ্ত হয়ে ইন্টার্ন চিকিৎসক পরাগকে মারধর করেন। এতে পরাগের ডান হাতের হাড় ভেঙে যায় ও ডান চোখে আঘাত পান। তাকে ডক্টরস ওয়ার্ডে ভর্তি করা হয়। পরাগ লাঞ্ছিত হওয়ার খবর ছড়িয়ে পড়লে ইন্টার্ন চিকিৎসকরা ক্ষিপ্ত হয়ে কর্মবিরতিতে যান। চিকিৎসক লাঞ্ছিতের ঘটনায় হাসপাতাল প্রশাসনের পক্ষ থেকে থানায় মামলা করা হয়। রাজপাড়া থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আমান উল্লাহ জানান, সোমবার রাত ১০টার দিকে হাসপাতাল প্রশাসনের পক্ষ থেকে ইসমাইল মজুমদার বাদী হয়ে শাহিন ও জিমি নামে দুজনকে আসামি করে থানায় মামলা করেন। আসামিরা রোগীর ভাই। এদের মধ্যে জিমিকে গ্রেফতার করা হয়েছে। অন্যদিকে গতকাল এ ঘটনার প্রতিবাদে মানববন্ধন করে ইন্টার্ন চিকিৎসক পরিষদ। তারা দায়ীদের শাস্তি ও তাদের নিরাপত্তা নিশ্চিত না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দেয়।

কিন্তু গতকাল রাত ৯টার দিকে স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতাদের মধ্যস্থতায় ধর্মঘট প্রত্যাহার করা হয়। সন্ধ্যায় নগর আওয়ামী লীগের সভাপতি এ এইচ এম খায়রুজ্জামান লিটন, সাধারণ সম্পাদক ডাবলু সরকার ও হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার রফিকুল আলম ইন্টার্ন চিকিৎসকদের সঙ্গে বৈঠকে বসেন। পরে ইন্টার্ন চিকিৎসকরা তাদের দাবি তুলে ধরেন। দাবি পূরণের আশ্বাসের পর তারা ধর্মঘট প্রত্যাহার করে নেন। নগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ডাবলু সরকার জানান, বৈঠকে ইন্টার্ন চিকিৎসকরা তাদের নিরাপত্তা, রোগীর সঙ্গে স্বজন কম প্রবেশ ও হামলাকারীদের দ্রুত গ্রেফতারের দাবি জানান। দাবিগুলো পূরণের আশ্বাস দেওয়ার পর ধর্মঘট প্রত্যাহার করে নেন ইন্টার্নরা।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর