শুক্রবার, ৩০ ডিসেম্বর, ২০১৬ ০০:০০ টা

বেকায়দায় রাজশাহী নগর বিএনপি

বুলবুলের সামনে তিন চ্যালেঞ্জ

কাজী শাহেদ, রাজশাহী

নতুন কমিটি নিয়ে রাজশাহী বিএনপিতে চলছে কোন্দল। বুধবার রাতে দলীয় কার্যালয়ে তালা ঝুলিয়েছে মিনুর সমর্থকরা। আর সিনিয়র নেতারা বাদ যাওয়ায় ক্ষোভ আছে তৃণমূলে। ফলে দায়িত্ব পেয়ে মোসাদ্দেক হোসেন বুলবুল পড়েছেন বেকায়দায়। তার সামনে এখন তিন চ্যালেঞ্জ।

এমনিতে মামলায় বিপর্যস্ত বিএনপি। এবার নতুন করে বেকায়দায় পড়েছে সদ্য পাওয়া কমিটি নিয়ে। সিনিয়র নেতা মিজানুর রহমান মিনুকে বাদ দিয়ে নগর বিএনপির সভাপতি করা হয়েছে রাজশাহী সিটি করপোরেশনের বরখাস্ত হওয়া মেয়র মোসাদ্দেক হোসেন বুলবুলকে। আর এতে ক্ষোভ দলের একাংশের। ইতিমধ্যে মিজানুর রহমান মিনুর সমর্থক হিসেবে পরিচিত দলের সাবেক সহ-সভাপতি নজরুল হুদার নেতৃত্বে একটি পক্ষ দলীয় কার্যালয়ে তালা ঝুলিয়েছে। গতকাল তালা ঝুলানো হয়েছে রাজপাড়া ও শাহ মখদুম থানা কার্যালয়ে। দলের এই ক্ষুব্ধ অংশকে ম্যানেজ করতে বেগ পেতে হবে বুলবুলকে।

দলটির আগের কমিটির সহ-সভাপতি নজরুল হুদা জানান, দলের অনেক সিনিয়র নেতা বাদ পড়েছেন। রাজনীতিতে নিষ্ক্রিয় থেকেও অনেককে পদ দেওয়া হয়েছে। বিএনপি বাঁচাতে তারা দলীয় কার্যালয়ে তালা দিয়েছেন। এতে করে কেন্দ্র এখানকার অবস্থা যাতে বুঝতে পারে।

আগের কাউন্সিল নিয়ে নগর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক শফিকুল হক মিলনের সঙ্গে দ্বন্দ্ব ছিল মোসাদ্দেক হোসেন বুলবুলের। এবার বুলবুলের সঙ্গে ওই কমিটিতে মিলনকেই সাধারণ সম্পাদক রাখা হয়েছে। এ ছাড়া সিটি করপোরেশন নির্বাচনে দলীয় সমর্থন নিয়েও প্রকাশ্যে বিরোধে ছিলেন তারা। মিলনের সঙ্গে সম্পর্ক উন্নয়নও বুলবুলের জন্য চ্যালেঞ্জ বলে মনে করছেন স্থানীয়রা। বিএনপির আগের কমিটির সহ-সভাপতি ফজলে এলাহি খান জানান, মিনুকে বাদ দিয়ে কমিটি গঠন করায় দল ক্ষতিগ্রস্ত হবে। কারণ দীর্ঘদিন ধরে এমপি ও মেয়র থাকার ফলে মিনুর রাজনৈতিক বলয় ও প্রভাব তৈরি হয়েছে। নতুন কমিটি নিয়ে হতাশ নগর বিএনপির আগের কমিটিতে গুরুত্বপূর্ণ পদে থাকা নেতারা। তাদের দাবি, এই কমিটিতে মিনু ছাড়াও সিনিয়র নেতারা স্থান পাননি। তবে মিজানুর রহমান মিনু মনে করেন, দল তাকে মাইনাস করেনি। তিনি এখনো দলের গুরুত্বপূর্ণ পদে আছেন। তিনি বলেন, তাকে যে পদে রাখা হয়েছে, তাতে তিনি সন্তুষ্ট। নতুন কমিটি গঠন নিয়ে কার্যালয়ে তালা ঝুলানোয় অস্বস্তিতে পড়েছেন বিএনপির এই সিনিয়র নেতা। তিনি বলেন, ‘কার্যালয়ে তালা দেওয়ার ঘটনাটি বিব্রতকর। তবে শিগগিরই এটি সমাধান হয়ে যাবে।’ এদিকে নতুন কমিটি নিয়ে ক্ষোভে কেন্দ্রীয় বিএনপির সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক সৈয়দ শাহীন শওকতের ব্যক্তিগত কার্যালয়ে ভাঙচুর করেছে ক্ষুব্ধ নেতা-কর্মীরা। এ সময় কার্যালয়ের বেশকিছু আসবাবপত্র নষ্ট হয়। এ ঘটনায় কার্যালয় এলাকায় উত্তেজনা বিরাজ করছে। গতকাল দুপুর ২টার দিকে গণকপাড়া কার্যালয়ে এ ভাঙচুর চালানো হয়। তবে মোসাদ্দেক হোসেন বুলবুল এখনকার বিরোধ প্রসঙ্গে বলেন, ‘ধীরে ধীরে সব ঠিক হয়ে যাবে।’

সর্বশেষ খবর