শনিবার, ৩১ ডিসেম্বর, ২০১৬ ০০:০০ টা

ভয়ঙ্কর জামান কাহিনী

শাহ্ দিদার আলম নবেল, সিলেট

ভয়ঙ্কর জামান কাহিনী

তার চরিত্রের ভয়ঙ্কর রূপ যারা দেখেননি, তাদের কাছে সজ্জন হিসেবেই পরিচিত এম কে জামান। যারা তার ভিতরের কুিসত রূপ দেখেছেন, তাদের কাছে মূর্তিমান এক আতঙ্ক তিনি। আন্তর্জাতিক ভিসা জালিয়াত হিসেবে পরিচিতি পাওয়া পঞ্চাশোর্ধ্ব জামানের অপকর্মের শেষ নেই। ভিসা জালিয়াতির পর এবার ধরা পড়েছে তার ভয়ঙ্কর আরেক রূপ। শিশু ও নারীদের ব্ল্যাকমেইলিং, যৌন নির্যাতন, হয়রানি ও পর্নোগ্রাফির মতো তার ভয়ঙ্কর অপরাধ প্রকাশ পেয়েছে র‍্যাবের খাঁচায় বন্দী হওয়ার পর। বৃহস্পতিবার র‍্যাবের হাতে ধরা পড়েছেন বেশ কয়েকটি মামলার আসামি জামান।

অনুসন্ধানে জানা যায়, আশির দশকে লালমনিরহাট থেকে সিলেট শহরে আসেন এম কে জামান। ওই সময় তার নাম ছিল দুলাল। সিলেটে এসে নগরীর সুরমা মার্কেটে প্রিন্টিং প্রেসের ব্যবসা শুরু করেন। একপর্যায়ে জড়িয়ে যান পাসপোর্ট ও ভিসা জালিয়াতিতে। কিন্তু ফুলে ফেঁপে ওঠে জামানের আর্থিক অবস্থা। ইতিমধ্যে নিজের নাম পাল্টে ফেলে ‘দুলাল’ থেকে ‘এম কে জামান’ পরিচয় ধারণ করেন তিনি। ২০১১ সালে জামানের জালিয়াতির বিষয়টি প্রথম বেরিয়ে আসে। মার্কিন দূতাবাস, ব্রিটিশ হাইকমিশন ও পুলিশের করা তিনটি পৃথক মামলায় ওই বছরের ১৯ জুন র‍্যাবের হাতে ধরা পড়েন জামান। কিছু দিন জেল খেটে জামিনে মুক্ত হন তিনি।

র‍্যাব-৯-এর সহকারী পরিচালক এএসপি সুজনচন্দ্র সরকার জানান, জালিয়াতির টাকা দিয়ে সিলেট নগরীর শাপলাবাগে দুটি বাড়ি নির্মাণ করেন জামান। এর মধ্যে ছয় তলা একটি বাড়ির তিন থেকে ষষ্ঠতলা পর্যন্ত রয়েছে ছাত্রীদের মেস। মেসের বাথরুমে গোপন ক্যামেরা লাগিয়ে মেয়েদের নগ্ন ছবি তুলতেন তিনি। পরে সেসব ছবি দেখিয়ে মেসের বিভিন্ন মেয়েকে তার (জামান) সঙ্গে যৌন সম্পর্ক গড়ে তুলতে বাধ্য করতেন। শিশুদেরও যৌন নির্যাতনের টার্গেটে পরিণত করেছিলেন। নিজের আত্মীয়স্বজন কিংবা প্রতিবেশী শিশুদের ভয়ভীতি দেখিয়ে, মারধর করে, লোভে ফেলে যৌন নির্যাতন চালাতেন জামান। র‍্যাবের অনুসন্ধানে অন্তত সাতটি শিশুর ওপর জামানের অত্যাচারের তথ্য বেরিয়ে এসেছে। ব্যক্তিজীবনে পাঁচ বিয়ে করা জামান তার বাসায় বেড়াতে আসা নারীদের ফাঁদে ফেলে হয়রানি করতেন। গোপনে তাদের ভিডিওচিত্র ও ছবি ধারণ করে পরে ব্ল্যাকমেইলিং করতেন জামান।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর