সোমবার, ২ জানুয়ারি, ২০১৭ ০০:০০ টা

রাজধানীতে নিরাপত্তা ও গ্যারেজকর্মী খুন

অজ্ঞাত যুবকের লাশ উদ্ধার

নিজস্ব প্রতিবেদক

রাজধানীতে পৃথক ঘটনায় তিনজনকে হত্যার অভিযোগ উঠেছে। তারা হলেন—তুরাগের সাহাবুদ্দিন (৩৫), মোহাম্মদপুরে আসিফ (১৮) ও পুরান ঢাকায় অজ্ঞাত যুবক। মরদেহগুলো উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য সংশ্লিষ্ট থানা পুলিশ ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতাল মর্গে পাঠিয়েছে।

তুরাগ থানার এসআই নূর আলম শিকদার বলেন, যে রুম থেকে সাহাবুদ্দিনের মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে সে রুমে এক চা দোকানি প্রায়ই মালামাল রাখতেন। সকালে তিনি ওই রুমে মালামাল রাখতে গেলে বাহির থেকে তালা দেওয়া অবস্থায় ভিতরে সাহাবুদ্দিনের রক্তাক্ত লাশ দেখতে পান। পরে থানায় খবর দিলে বাটুলিয়া খেয়াঘাট এলাকার মেটকো এন্টারপ্রাইজ নামক একটি প্রকল্পের টিন শেডের ওই রুম থেকে সাহাবুদ্দিনের মরদেহ উদ্ধার করা হয়। সাহাবুদ্দিন ওই প্রকল্পের নিরাপত্তাকর্মী। তার বাড়ি শরীয়তপুর জেলার সখিপুরের বালাকান্দি গ্রামে। বাবার নাম দানু মোল্লা। সাহাবুদ্দিন স্ত্রী, দুই ছেলে ও এক মেয়েকে নিয়ে বাটুলিয়া এলাকায় কাদিরের বাড়িতে থাকতেন। নিহতের বাবা দানু মোল্লা জানান, সাহাবুদ্দিন প্রায় এক বছর ধরে মেটকো এন্টারপ্রাইজে নিরাপত্তাকর্মী হিসেবে কাজ করছেন। টঙ্গীর চেরাগআলীর বাবুল নামের এক ব্যক্তির কাছ থেকে ১৪ হাজার টাকা ধার নেয় সাহাবুদ্দিন। পরবর্তীতে ৮ হাজার টাকা পরিশোধ করে। পরে প্রতি মাসে ১ হাজার টাকা করে দিতে চাইলে বাবুল সাহাবুদ্দিনকে তুলে নিয়ে যাওয়ার হুমকি দেয়। দানু মোল্লা অভিযোগ করে বলেন, বাবুলই পাওনা টাকার জন্য আমার ছেলেকে হত্যা করেছে। নিহতের চাচাতো ভাই রেজাউল করিম জানান, সাহাবুদ্দিনের সঙ্গে সেলিম নামে আরেক ব্যক্তি নিরাপত্তাকর্মী হিসেবে কাজ করত। যেদিন যার ডিউটি থাকত সেদিন সে ডিউটি শেষে ডিউটি রুমে ঘুমাত। তিনি জানান, সেলিম ও আল আমিন নামে ওখানকার এক যুবক প্রায় সাহাবুদ্দিনের সঙ্গে রাতে ঘুমাত। সকালে ভাইয়ের মৃত্যুর সংবাদ পেয়ে ওই এলাকায় এসে আল আমিনকে খুঁজে পাওয়া যায়নি। তুরাগ থানার ওসি মাহবুব-এ-খোদা বলেন, নিহতের গলায় কাটা চিহ্ন, পুরুষাঙ্গ বিচ্ছিন্ন, বাম কানের উপরে ৪টি জখমের চিহ্নসহ শরীরের বিভিন্ন স্থানে কাটা দাগ রয়েছে। প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, শনিবার রাত ৯টা থেকে সকাল ৭টার মধ্যে যে কোনো সময় তাকে হত্যা করেছে। এদিকে, মোহাম্মদপুরে নিহত আসিফের খালাতো ভাই আরমান হোসেন জানান, আসিফ মোহাম্মদপুর জেনেভা ক্যাম্পের এইচ ব্লকের ৫৪৪ নম্বর বাসায় থাকত। তার বাবার নাম আবদুল কুদ্দুস। মোহাম্মদপুর সুলতান অটো গ্যারেজে কাজ করত আসিফ। রুবেল ও শমসের নামে তার দুই বন্ধু শ্যামলী রিং রোডে আরেকটি গ্যারেজে কাজ করে। তাদের গ্যারেজ থেকে কিছু দিন আগে গাড়ির যন্ত্রাংশ চুরি হয়। এ নিয়ে তাদের মধ্যে ঝগড়া বাধে। বিষয়টি নিয়ে শনিবার রাতে আল বশির মসজিদের সামনে তারা আবার ঝগড়ায় লিপ্ত হয়। এ সময় আসিফ ও তার বন্ধু সজীব থামাতে যায়। এতে শমসের আসিফকে ছুরিকাঘাত করে পালিয়ে যায়। আসিফকে উদ্ধার করে সোহরাওয়ার্দী হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। পরে তারা লাশ বাসায় নিয়ে যাওয়া হয়। পুলিশ বিষয়টি জানতে পেরে গতকাল ভোরে লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে পাঠায়। মোহাম্মদপুর থানার ওসি জামাল উদ্দিন মীর জানান, আসিফকে তার সহকর্মীরা ছুরিকাঘাত করে হত্যা করেছে বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে। এদিকে, গতকাল দুপুরে পুরান ঢাকার কোতোয়ালি থানার কাজী জিয়া উদ্দিন রোডের একটি বাড়ি থেকে অজ্ঞাত যুবকের লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। কোতোয়ালি থানার ওসি আবুল হাসান বলেন, দুপুরে কাজী জিয়া উদ্দিন রোডের একটি বাড়ি থেকে ওই যুবকের লাশ উদ্ধার করা হয়। তার মৃত্যুর কারণ জানা যায়নি।

সর্বশেষ খবর