বুধবার, ৪ জানুয়ারি, ২০১৭ ০০:০০ টা

নাসিরনগর নিয়ে পিবিআইর প্রতিবেদন

জামিন মেলেনি রসরাজের

প্রতিদিন ডেস্ক

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নাসিরনগরে যে ছবিটির বিরুদ্ধে ‘ইসলাম অবমাননা’র অভিযোগ তোলা হয়েছে, সেই ছবির সঙ্গে আটক ও অভিযুক্ত রসরাজের কোনো সম্পৃক্ততা পায়নি সংস্থা পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)। বরং রসরাজকে দায়ী করে অপপ্রচার চালানো  জাহাঙ্গীরের কম্পিউটারে এই ছবি এডিট করার প্রমাণ পাওয়া গেছে। পিবিআইর দুই তদন্ত প্রতিবেদনে সুনির্দিষ্টভাবে এ তথ্য উল্লেখ করা হয়েছে। তবে জাহাঙ্গীরের কম্পিউটার থেকে তার ফেসবুকে ছবি আপলোড হয়েছে কিনা তাও নিশ্চিত করা যায়নি। খবর ্বিডিনিউজ।

পিবিআইর দুই তদন্ত প্রতিবেদনের প্রথমটিতে উল্লেখ করা হয়েছে, সেই ছবির কোনো অস্তিত্ব রসরাজের মোবাইল ফোন ও মেমোরি কার্ডে পাওয়া যায়নি। রসরাজের তদন্ত প্রতিবেদন গতকাল ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আদালতে জমা দিয়েছে জেলা গোয়েন্দা পুলিশ। তবে জাহাঙ্গীরের প্রতিবেদন এখনও জমা দেওয়া হয়নি। এদিকে রসরাজ দাসের জামিন হয়নি। গতকাল জেলা ও দায়রা জজ আদালতে শুনানিতে তার জামিনের বিরোধিতা করে রাষ্ট্রপক্ষ। ১৬ জানুয়ারি আবার শুনানির দিন রেখেছেন আদালত।

গত বছরের ২৯ অক্টোবর ফেসবুকে ‘ইসলাম অবমাননার’ ছবি পোস্ট করার অভিযোগে ৩০ বছর বয়সী রসরাজকে  গ্রেফতার করে পুলিশ। একই অভিযোগ তুলে পরদিন ৩০ অক্টোবর নাসিরনগরে ১৫টি মন্দিরসহ হিন্দুদের শতাধিক ঘরে ভাংচুর ও লুটপাট চালানো হয়। পরে আরও কয়েক দফায় হামলা ও অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটে। এ পর্যন্ত আটটি মামলায় ১০৪ জন গ্রেফতার রয়েছেন। জেলা গোয়েন্দা পুলিশের ওসি মফিজ উদ্দিন ও মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই মিজানুর রহমান জানান, রসরাজের মোবাইল ফোন ও মেমোরি কার্ড জব্দ করে পরীক্ষার জন্য আলামত ও নমুনা ছবি গত ১৬ ডিসেম্বর পিবিআইয়ের সাইবার ক্রাইম ইউনিটের পুলিশ পরিদর্শকের কাছে পাঠানো হয়েছিল। পিবিআইয়ের সাইবার ক্রাইম ইউনিট তার প্রতিবেদন জেলা  গোয়েন্দা পুলিশের কাছে পাঠিয়েছে। জেলা গোয়েন্দা পুলিশ ওই প্রতিবেদন ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আদালতে জমা দেয়। পিবিআইয়ের প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়, গৃহীত আলামত ও ধর্মীয় অবমাননাকর ছবিটির কোনো অস্তিত্ব রসরাজের মোবাইল ফোন ও মেমোরি কার্ডে পাওয়া যায়নি। অপর রিপোর্টে জাহাঙ্গীরের কম্পিউটারে ছবিটি এডিট করা হয় এবং কিছুক্ষণ সংরক্ষণের পর তা মুছে ফেলা হয়। তবে এই ছবিটি তার কম্পিউাঁর থেকে পোস্ট হয়েছে কি না তা নিশ্চিত করা হয়নি প্রতিবেদনে। ঘটনার শুরু থেকেই অভিযোগ ওঠে, জাহাঙ্গীর আলম তার আল আমিন সাইবার পয়েন্ট অ্যান্ড স্টুডিও থেকে ধর্মীয় অবমাননাকর ছবিটি প্রিন্ট করে লিফলেট আকারে এলাকায় বিতরণ করেন। জাহাঙ্গীর আলম ১৬৪ ধারার স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিতে এটি স্বীকারও করেন। রসরাজ ও জাহাঙ্গীর এখন ব্রাহ্মণবাড়িয়া কারাগারে আটক আছেন।

সর্বশেষ খবর