শুক্রবার, ৬ জানুয়ারি, ২০১৭ ০০:০০ টা
বায়োগ্যাস ল্যাব

বিদ্যুৎ খাতে সাফল্যের হাতছানি

সৈয়দ নোমান, ময়মনসিংহ

বিদ্যুৎ খাতে সাফল্যের হাতছানি

একের পর এক সাফল্যে বিশ্বব্যাপী বিস্ময়ের নাম এখন বাংলাদেশ। সাফল্যের সম্ভাবনা সূচিত হচ্ছে বিদ্যুৎ খাতেও। বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে (বাকৃবি) প্রতিষ্ঠিত হয়েছে দেশের প্রথম বায়োগ্যাস ল্যাব। যার সাহায্যে শিল্প-প্রতিষ্ঠানের চাহিদা মিটিয়ে ২০৩০ সালের মধ্যে ২০ ভাগ নবায়নযোগ্য বিদ্যুৎ উৎপাদন সম্ভব বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।

২০১৬ সালে ডেনিডা এবং আইএফসির আর্থিক সহযোগিতায় ‘গ্রিন এনার্জি নলেজ হাব’ নামে ল্যাবরেটরিটি বাকৃবিতে স্থাপিত হয়। ইতিমধ্যে সংশ্লিষ্ট বিজ্ঞানীরা  মাঠপর্যায়ে বায়োগ্যাস প্লান্টের বিভিন্ন সমস্যা চিহ্নিত করেছেন। গবেষকরা বলছেন, এই ল্যাবের পরামর্শে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে বায়োগ্যাস স্থাপন করলে, যে পরিমাণ বিদ্যুৎ উৎপাদন হবে তা নিজেদের চাহিদা মিটিয়ে জাতীয় গ্রিডেও যোগ করা সম্ভব।

প্রকল্প সূত্রে জানা যায়, দেশে এ পর্যন্ত প্রায় লক্ষাধিক শিল্প কারখানায় বায়োগ্যাস প্রতিষ্ঠা হলেও অর্ধেকেরও বেশি প্লান্ট অচল রয়েছে। কারণ হিসেবে তারা বলছেন, কী ধরনের বায়োগ্যাস প্লান্ট বসানো দরকার তা নির্ধারণ না করায় যে পরিমাণ মিথেন গ্যাস উৎপন্ন হওয়ার কথা সেই পরিমাণে উৎপন্ন হচ্ছে না। রয়েছে দক্ষ লোকজন এবং রক্ষণাবেক্ষণের অভাব। সেই সঙ্গে কী ধরনের কাঁচামাল ব্যবহার করলে সব থেকে বেশি গ্যাস উৎপন্ন হয় সে বিষয়গুলো অনেকেরই অজানা। দেশে প্রায় এক লাখের উপরে পোলট্রি ও ডেইরি ফার্ম রয়েছে। এ থেকে প্রতিদিন প্রায় দুই লাখ মেট্রিক টনের মতো বর্জ্য তৈরি হচ্ছে। এই বর্জ্য থেকে সঠিক নিয়মে বায়োগ্যাস উৎপাদন করলে প্রতি ঘণ্টায় প্রায় সাড়ে তিন মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন সম্ভব বলে মনে করছেন প্রকল্প সংশ্লিষ্টরা। সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের চাহিদা মিটিয়ে উৎপাদিত অতিরিক্ত বিদ্যুৎ সরাসরি আমাদের জাতীয় গ্রিডেও দেওয়া সম্ভব বলে জানিয়েছেন তারা। প্রকল্পের গবেষণা সমন্বয়কারী ড. চয়ন কুমার সাহা জানান, এটি বাংলাদেশের প্রথম বায়োগ্যাস ল্যাব। বর্জ্য পদার্থ থেকে যে গ্যাস তৈরি করা যেতে পারে তার গুণগত মান নির্ধারণ করা, কী পরিমাণ গ্যাস থেকে বিদ্যুৎ উৎপন্ন হতে পারে সেগুলোকে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করা এবং যিনি বায়োগ্যাস প্লান্ট তৈরি করবেন তার জন্য যে সমস্ত কারিগরী নির্দেশনা প্রয়োজন সেটিও এখান থেকে দেওয়া সম্ভব। শুধু তাই নয়, কীভাবে পরিশোধন করে বিদ্যুৎ উৎপাদন করা যাবে এমনকি ভবিষ্যতে আমাদের যানবাহনে ব্যবহার করা যায়, সে ধরনের প্রযুক্তিগত তথ্যগুলোও এখান থেকে দেওয়া সম্ভব। প্রকল্প পরিচালক ড. মঞ্জুরুল আলম বলছেন, আমাদের দেশে শুধু পোলট্রি এবং ডেইরি ফার্ম থেকে ২০ হাজারেরও বেশি বাণিজ্যিকভাবে বায়োগ্যাস প্লান্ট বসানো সম্ভব। এতে করে ২০২০ সালের মধ্যে ১০ ভাগ নবায়নযোগ্য শক্তি এবং ২০৩০ সালের মধ্যে অন্তত ২০ ভাগ নবায়নযোগ্য শক্তিতে রুপান্তরিত করা সম্ভব। এমনকি উৎপাদিত বিদ্যুৎ দিয়ে ওইসব শিল্প প্রতিষ্ঠানের চাহিদা মিটিয়ে জাতীয় গ্রিডেও বিদ্যুৎ সরবরাহ করা সম্ভব।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর