সাঁওতালদের ওপর হামলার ঘটনায় একটি প্রতিবেদনে বাঙালিদের ‘দুষ্কৃতকারী’ হিসেবে উল্লেখ করার ঘটনায় হাই কোর্টে নিঃশর্ত ক্ষমা চেয়ে অভিযোগ থেকে অব্যাহতি পেলেন গাইবান্ধার পুলিশ সুপার মো. আশরাফুল আলম। গতকাল আদালতে সশরীরে হাজির হয়ে তিনি ক্ষমা চান। পরে বিচারপতি ওবায়দুল হাসান ও বিচারপতি কৃষ্ণা দেবনাথের সমন্বয়ে গঠিত হাই কোর্ট বেঞ্চ ভবিষ্যতের জন্য সতর্ক করে তাকে অভিযোগ থেকে অব্যাহতি দেন। এ ছাড়া পুলিশের গুলির ঘটনায় বিচারিক তদন্তের জন্য গাইবান্ধার চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট এক মাসের সময় চেয়েছেন। এ কারণে ওই প্রতিবেদন দাখিলের জন্য ৩১ জানুয়ারি দিন নির্ধারণ করেছে আদালত। আদালতে এসপি আশরাফুল আলমের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী নুরুল ইসলাম সুজন। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল মোতাহার হোসেন সাজু। পরে আদেশের বিষয়টি ডিএজি মোতাহার হোসেন সাজু সাংবাদিকদের নিশ্চিত করেন। এর আগে ২ জানুয়ারি এসপি আদালতে হাজির হলেও সেদিন উচ্চ আদালতে তাত্ক্ষণিক ছুটি ঘোষণা করা হয়। এ কারণে সুপ্রিম কোর্টের রেজিস্ট্রার জেনারেলের কার্যালয়ে তিনি হাজিরা দেন। পরে ৪ জানুয়ারি মামলার শুনানিকালে ৮ জানুয়ারি আবারও তাকে হাজিরের নির্দেশ দেয় হাই কোর্ট। সে অনুযায়ী গতকাল তিনি আদালতে হাজির হন। সাঁওতালদের ওপর হামলার ঘটনায় বর্তমানে দুটি রিট বিচারাধীন।
রিটের শুনানিকালে সংঘর্ষের ঘটনা নিয়ে দাখিল করা এক প্রতিবেদনে বাঙালিদের দুষ্কৃতকারী হিসেবে উল্লেখ করেন গাইবান্ধার জেলা প্রশাসক (ডিসি)। এরপর তলবের পরিপ্রেক্ষিতে ১২ ডিসেম্বর ডিসি নিঃশর্ত ক্ষমা চেয়ে রেহাই পান। ওই সময় আদালতকে ডিসি অবহিত করেন, পুলিশের দেওয়া এক প্রতিবেদনের ভিত্তিতে তিনি এ শব্দ ব্যবহার করেছেন। এ জন্য ওই দিনই গাইবান্ধার পুলিশ সুপারকে তলব করে হাই কোর্ট। ৬ নভেম্বর গোবিন্দগঞ্জে রংপুর চিনিকলের জমিতে আখ কাটাকে কেন্দ্র করে পুলিশ ও চিনিকল শ্রমিক-কর্মচারীদের সঙ্গে সাঁওতালদের সংঘর্ষ হয়। এতে তিন সাঁওতালের মৃত্যু হয়। পুলিশসহ উভয় পক্ষের অন্তত ৩০ জন আহত হন।
