বৃহস্পতিবার, ১২ জানুয়ারি, ২০১৭ ০০:০০ টা

জমজমাট কৃষিমেলা

নিজস্ব প্রতিবেদক

জমজমাট কৃষিমেলা

কৃষিপণ্য প্রক্রিয়াকরণ হবে স্বয়ংক্রিয় মেশিনে। এক মেশিনেই ধান কাটা, মাড়াই, বস্তাজাত করা হচ্ছে। একই বস্তা থেকে আরেকটি মেশিনে দিলে চাল হয়ে বের হবে। মাত্র কয়েক ঘণ্টার ব্যবধানে পুরো প্রক্রিয়াটি সম্পন্ন হবে। শুধু ধান নয়, গম, ভুট্টা, তেলবীজ প্রক্রিয়াকরণে এমন আধুনিক প্রযুক্তির মেশিনের প্রদর্শনী শুরু হয়েছে রাজধানীর ইন্টারন্যাশনাল কনভেনশন সিটি বসুন্ধরায় (আইসিসিবি)। গতকাল শুরু হওয়া কৃষিশিল্প মেলার উদ্বোধন করেন স্থানীয় সরকার ও পল্লী  উন্নয়নমন্ত্রী ইঞ্জিনিয়ার খন্দকার মোশাররফ হোসেন। সরেজমিন মেলায় দেখা গেছে, দেশি-বিদেশি তিন শতাধিক প্রতিষ্ঠান তাদের কৃষি যন্ত্রপাতি নিয়ে হাজির হয়েছে। এমনই একটি প্রতিষ্ঠান এসিআই চীনের তৈরি স্বয়ংক্রিয় ধান কাটার মেশিন প্রদর্শন করছে। এ মেশিনের মাধ্যমে জমিতে ধান কাটা থেকে শুরু করে বস্তাজাত করা যাবে। ১ একর জমির ধান বস্তাজাত করতে লাগবে মাত্র ৩ ঘণ্টা। একটি মেশিনের দাম পড়বে ৭ লাখ টাকা। তবে কৃষক বা উৎপাদনকারীকে দিতে হবে মাত্র সাড়ে ৩ লাখ টাকা। বাকি টাকা সরকার ভর্তুকি দেবে। আরেকটি মেশিন শস্য রিজার্ভ করার। এ মেশিনে বছরের যে কোনো সময় শস্য তুলে প্রিজার্ভ করা যাবে। এসব পণ্যেও সরকার ভর্তুকি দেয়। মেলায় অটো রাইস মিল, ফিড মিল, ফ্লাওয়ার মিল, অয়েল, ডাল, কোল্ড স্টোরেজ, সাইলো, বেকারি মেশিনারি, চা, কফি, খাদ্য ও কোমল পানীয় উৎপাদন প্রযুক্তি; ট্রাক্টর, পাওয়ার টিলার, কৃষি যন্ত্রপাতি, হারভেস্টার, সৌরবিদ্যুৎ প্রযুক্তিপণ্যের সমাহার দেখা গেছে। সারা দেশ থেকে এসেছেন উদ্যোক্তারা। ঘুরে ঘুরে দেখছেন স্টল। এসব প্রযুক্তিপণ্য কিনে নিজের গ্রামেই দেওয়া যাবে শিল্প কারখানা। যেখানে দেশের কৃষিজাত পণ্যের আধুনিক শিল্প গড়ে দেবেন মেলার উদ্যোক্তারা। বিভিন্ন স্টেকহোল্ডার, যন্ত্রপাতি আমদানিকারকরাই সরাসরি গিয়ে স্থাপন করে দেবেন শিল্প। গ্রাহকদের চাহিদা অনুযায়ী পণ্যের মূল্য নির্ধারণ এমনকি ব্যাংক ঋণের ব্যবস্থাও করে দেবেন তারা। মেলার উদ্বোধন করে স্থানীয় সরকারমন্ত্রী বলেন, ‘ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়তে আমাদের প্রযুক্তিনির্ভর হতে হবে। দেশের সবচেয়ে বড় খাত কৃষিশিল্প। এ খাতের উন্নয়নে সরকার জোর দিয়েছে। সারা দেশে কৃষিজাত শিল্প ছড়িয়ে দিতে সরকার কৃষিঋণ, এসএমই ঋণ দিচ্ছে।’ তিনি বলেন, ‘২০৪১ সালের মধ্যে উন্নত বাংলাদেশ গড়তে কৃষিজাত শিল্পের বিকল্প নেই। কৃষি উৎপাদন, কৃষিজাত শিল্পপণ্যের বাজারজাত করতেও সরকার সহায়তা দিচ্ছে। যে কোনো উদ্যোক্তাকে সরকার সরাসরি আর্থিক সহায়তা দেবে। সারা দেশেই এ মেলার আয়োজন করা হবে। আগামীতে সরকারি উদ্যোগে উদ্যোক্তাদের কাছে যাওয়া হবে।’ রুরাল ডেভেলপমেন্ট বোর্ডের পরিচালক নজরুল ইসলাম খানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে এলজিআরডি মন্ত্রণালয়ের সচিব প্রশান্ত কুমার রায়, আয়োজক কাজী সারওয়ার উদ্দিন প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন। তিন দিনব্যাপী মেলা প্রতিদিন সকাল ১০টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত সবার জন্য উন্মুক্ত।

সর্বশেষ খবর