শুক্রবার, ১৩ জানুয়ারি, ২০১৭ ০০:০০ টা

চার লেনে পাঁচ সমস্যা

ঢাকা থেকে চট্টগ্রাম ঘাটে ঘাটে যত দুর্ভোগ

মোস্তফা কাজল

পাঁচ সমস্যায় আক্রান্ত ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক চার লেনে রূপান্তরের পূর্ণাঙ্গ সুফল পাওয়া যাচ্ছে না। এ মহাসড়কের পাশে যত্রতত্র অবৈধ পার্কিং; মালপত্রের স্তূপ; ফিটনেসবিহীন যানবাহনের চলাচল; বাস, লরি, ট্রাকসহ বড় বড় গাড়ির উল্টোপথে যাত্রা; যেখানে সেখানে খানাখন্দ। এ পাঁচ কারণে মিলছে না মেগা প্রকল্পের সুফল। কমছে না দুর্ঘটনাও। মহাসড়কটিতে কার্যকর তদারকি নেই। ফলে সপ্তাহের সাত দিনই নিয়ম ভেঙে উল্টো দিক থেকে গাড়ি চলাচল করে। এজন্য যানজট লেগে থাকে বিভিন্ন পয়েন্টে। দেশের লাইফলাইন হিসেবে পরিচিত ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের চার লেনে সমস্যা লেগেই রয়েছে। দুর্ভোগের পাশাপাশি দুর্ঘটনা কমাতে ও সময় সাশ্রয়ের লক্ষ্যে চার লেনে রূপান্তর করা হয় ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক। হাইওয়ে পুলিশ জানায়, চার লেন প্রকল্প উদ্বোধনের সাড়ে ৬ মাসের মধ্যে এ মহাসড়কে ৫৫টি দুর্ঘটনায় নিহত হয়েছেন ৪১ জন।

মহাসড়কের চট্টগ্রাম জেলার প্রবেশদ্বার মিরসরাই উপজেলার ফকিরহাট বাজারের কয়েক কিলোমিটার এলাকায় থাকে পার্কিং করা বালুভর্তি ট্রাকের সারি। আরও থাকে কাঠবোঝাই ট্রাক। এ ছাড়া কুমিল্লা, ফেনী ও সীতাকুণ্ডের সড়কের যেখানে সেখানে পার্কিংয়ের ফলে মহাসড়কটির এসব অংশে এসেই যানবাহন প্রথম তার স্বাভাবিক গতি হারায়। সড়কের একপাশে যখন এমন অবৈধ পার্কিং তখন বিপরীতে সড়কের ওপরই স্তূপ করে রাখা হয় ইট, বালু, রড আর বাঁশ। আবার উল্টোপথে চলছে রিকশা-ভ্যানের পাশাপাশি ট্রাক-লরির মতো ভারী যানবাহন। মহাসড়কের বিভিন্ন অংশে দাপট দেখা যায় নিষিদ্ধ সিএনজি অটোরিকশার। সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রীর কঠোর হুঁশিয়ারিকে তোয়াক্কা না করে চলছে এসব যানবাহন। এ ছাড়া ফুটওভার ব্রিজ ব্যবহার না করে সড়ক পারাপার হওয়ার পাশাপাশি ছোট-বড় খানাখন্দের কারণে গাড়ি ধীরে চালাতে বাধ্য হন চালকরা। এ ছাড়া বড় দারোগার হাট, পন্থিচিলা জামে মসজিদের সামনে, মিরসরাই সদর, মস্তাননগর বাইপাস, মিঠাছড়া বাইপাস, বারইয়ার হাট পৌরসভা, ধুমঘাট সেতু এলাকা, ফেনীর পাঁচগাছিয়া, চৌমুহনী বাজারসহ মোট ২০টি স্থানেও রয়েছে নানা ধরনের সমস্যা। এসব স্থানের অব্যবস্থাপনার কারণেই সুফল মিলছে না এই           মেগা প্রকল্পের। ফলে একদিকে যেমন যাত্রা আগের মতো দীর্ঘায়িত ও বিরক্তিকর হচ্ছে, অন্যদিকে ঘটছে প্রাণহানিও। ঢাকা-চট্টগ্রাম রুটে চলাচলকারী শ্যামলী পরিবহনের বাসচালক আকবর আলী বলেন, ‘যেখানে সেখানে পার্কিং আর ইট-বালুর স্তূপের কারণে মিরসরাই উপজেলা অংশে কিছুটা যানজট হয়। আবার সিএনজি অটোরিকশা ও খানাখন্দের কারণে ফেনীতেও আটকে থাকতে হয় অনেকক্ষণ। চার লেন হওয়ার পর আশা করেছিলাম, আগের চেয়ে অনেক কম সময়ে যাত্রীদের ঢাকায় পৌঁছে দেব। কিন্তু সপ্তাহের সাত দিনই আগের মতো সময় ক্ষেপণ হচ্ছে। এ ছাড়া বড় দারোগার হাট, বড় কমলদহ, মিঠাছড়ায় সড়কঘেঁষে বালু ও ইটের স্তূপ রয়েছে।’ সড়ক ও জনপথ (সওজ) অধিদফতরের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. রাশেদুল আলম বলেন, যে কোনো মেগা প্রকল্পের শুরুতেই কিছু ত্রুটি থাকে। এগুলো চিহ্নিত করে কাজ শুরু হয়েছে।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর