শনিবার, ১৪ জানুয়ারি, ২০১৭ ০০:০০ টা

১৮ সালের মধ্যে সবকিছু দৃশ্যমান চান খোকন

১৮ সালের মধ্যে সবকিছু দৃশ্যমান চান খোকন

ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মেয়র মোহাম্মদ সাঈদ খোকন বলেছেন, দায়িত্ব গ্রহণের পর থেকে নানা চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করেই অগ্রসর হচ্ছি। প্রতিশ্রুতির ২৫ ভাগ কাজ ইতিমধ্যে শেষ হয়েছে। অনেক প্রকল্প শুরু হয়েছে। ২০১৮ সালের মাঝামাঝিতে কাজগুলো দৃশ্যমান হবে। গতকাল বাংলাদেশ প্রতিদিনের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এসব  কথা বলেন। মেয়র নির্বাচিত হওয়ার পর তার নেওয়া উন্নয়নমূলক কর্মকাণ্ড, সামনে প্রতিবন্ধকতাগুলো কী ছিল এবং আগামী চ্যালেঞ্জগুলো কী হতে পারে এমন নানা দিক নিয়ে এ প্রতিবেদকের সঙ্গে কথা হয় ঢাকার প্রথম নির্বাচিত মেয়র মোহাম্মদ হানিফের ছেলে সাঈদ খোকনের সঙ্গে। ঢাকা দক্ষিণ সিটির মেয়র সাঈদ খোকন বলেন, ঋণের বোঝা মাথায় নিয়ে আমাকে দায়িত্ব বুঝে নিতে হয়। রাজধানীতে যে পরিমাণ রাজস্ব আসে তার ৬৫ ভাগ ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন এলাকায়। দক্ষিণের আসে ৩৫ ভাগ। খরচের দিকে আমার এলাকায় ৬৫ ভাগ এবং উত্তরে ৩৫ ভাগ। তাহলে দিন দিন আমি ঋণগ্রস্ত হওয়ার পথে। তারপরও দায়িত্ব গ্রহণের পর একদিনও বসে থাকিনি। নগরবাসীকে সেবা দিতে রাত-দিন কাজ করছি। ইতিমধ্যে অনেক কাজ সম্পন্ন হয়েছে। বলা চলে আমার নির্বাচনী প্রতিশ্রুতির ২৫ ভাগ কাজ ইতিমধ্যে শেষ করেছি। এর মধ্যে রাস্তাঘাট সংস্কার, সড়কে বাতি, পাবলিক টয়লেট, হকার উচ্ছেদ, পার্কের উন্নয়নসহ বেশ কিছু কাজের অগ্রগতি হয়েছে। আমাদের সক্ষমতা বেড়েছে, সম্ভাবনার পাশাপাশি চ্যালেঞ্জও রয়েছে।  তিনি বলেন, যানজট ঢাকার অন্যতম সমস্যা। এ কাজের দায়িত্ব সিটি করপোরেশনের নয়। এটা ট্রাফিক বিভাগের কাজ। তারপরও আমরা ট্রাফিক বিভাগের সঙ্গে সমন্বয় করে যানজট নিরসনে কাজ করছি। যানজট কমাতে বাসচালকরা যাতে নির্ধারিত স্থানে গিয়ে বাস থামান, সে জন্য দক্ষিণের ৫০টি স্থানে ‘বাস বে’ নির্মাণ করা হবে। নির্ধারিত ওই স্থানে গিয়ে চালকরা বাস থামিয়ে যাত্রী উঠানো-নামানোর কাজ করবেন। কয়েক বছরের ব্যবধানে রাজধানীতে বাইসাইকেলের ব্যবহার বহুগুণ বেড়েছে। সাইকেলের জন্য আলাদা লেন করতে সংসদ সদস্য ও নাগরিক সমাজ দীর্ঘদিন ধরেই দাবি জানিয়ে আসছে। এমন বাস্তবতায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ও ধানমন্ডি এলাকায় ৩০ কিলোমিটারজুড়ে সাইকেলের জন্য আলাদা লেনের পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। হাঁটার জন্যও থাকবে নান্দনিক ওয়াকওয়ে। দক্ষিণের মেয়র সাঈদ খোকন বলেন, বুড়িগঙ্গাকে দূষণমুক্ত করে ঢাকার ঐতিহ্য ফিরিয়ে আনতে এবং নয়নাভিরাম ও দৃষ্টিনন্দনরূপে সাজাতে প্রকল্প হাতে নেওয়া হয়েছে। এ প্রকল্পের মাধ্যমে বুড়িগঙ্গার তীর ঘেঁষে হাজারীবাগ থেকে পাগলা পর্যন্ত দখলমুক্ত করার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। প্রকল্পের মধ্যে থাকবে হাঁটাপথ, পার্ক, বসার জায়গা, প্রমোদতরী, রেস্তোরাঁ ও ভাসমান বিনোদনকেন্দ্র। ধুপখোলায় অত্যাধুনিক শিশুপার্ক নির্মাণসহ ১২টি খেলার মাঠ এবং ১৯টি পার্কের উন্নয়ন ‘জল সবুজের ঢাকা’ প্রকল্প গ্রহণ করা হয়েছে। মেয়র বলেন, সরকার সিটি করপোরেশনকে সড়ক খোঁড়াখুঁড়ির বিষয়ে সমন্বয়কের দায়িত্ব দেওয়ায় ভবিষ্যতে রাস্তা খোঁড়াখুঁড়ির বিড়ম্বনা থেকে নগরবাসী মুক্তি পাবে। ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের বিভিন্ন অবকাঠামো উন্নয়ন প্রকল্পে ১৩৫ দশমিক ৩৪ কিলোমিটার রাস্তা উন্নয়ন, ২৬ দশমিক ৯০ কিলোমিটার ফুটপাথ, ১৪০ দশমিক ২৪ কিলোমিটার ড্রেন নির্মাণ এবং ৩০৯ দশমিক ৭৬ কিলোমিটার ড্রেন পরিষ্কারের পরিকল্পনা করেছি। এর মধ্যে অনেক কাজের অগ্রসর হয়েছে। সামনে  ডিএসসিসির সব সেবা কার্যক্রম ডিজিটাল করা হবে। বর্তমানে ডিজিটাল পদ্ধতিতে জন্মনিবন্ধন সনদ দেওয়া হচ্ছে। সব টেন্ডার ই-টেন্ডারিং করা হচ্ছে। নগর ভবনসহ তিনটি ওয়ার্ডে বিনামূল্যে ইন্টারনেট বা ওয়াইফাই চালু করা হয়েছে। এই বছরের মধ্যে জনসমাগম হয় এমন ৫০টি জায়গায় বিনামূল্যে ইন্টারনেট সেবা চালু করা হবে। তাছাড়া সোডিয়াম সড়কবাতি বদলে বিভিন্ন সড়কে আধুনিক এলইডি বাতি বসানো হচ্ছে। গত বছর ডিএসসিসির আওতাভুক্ত বিভিন্ন প্রধান সড়কে প্রায় সাড়ে তিন হাজার এলইডি বাতি লাগানো হয়েছে। পর্যায়ক্রমে পুরো ডিএসসিসি এলাকায় ৩৪ হাজার এলইডি বাতি লাগানো হবে। তিনি বলেন, নগরীতে গণশৌচাগারের সংখ্যা অপ্রতুল। যেগুলো আছে, সেগুলো শিশু ও নারীদের ব্যবহার উপযোগী নয়। তাই নারী শিশুসহ যানজটে আটকে থাকা পথচারীদের সুবিধার্থে চলতি বছরের মধ্যে আরও ১০০ অত্যাধুনিক পাবলিক টয়লেট (গণশৌচাগার) তৈরি করা হবে। ইতিমধ্যে প্রায় ১৮টি অত্যাধুনিক পাবলিক টয়লেট জনসাধারণের জন্য উন্মুক্ত করা হয়েছে। বিদ্যমান ১৭টি গণশৌচাগার সংস্কারের প্রকল্প হাতে নেওয়া হয়েছে। তাছাড়া ডিএসসিসি এলাকার সব রাস্তার পাশে পথচারীদের জন্য বিনামূল্যে বিশুদ্ধ পানির ব্যবস্থা করা হয়েছে।

 

সর্বশেষ খবর