শনিবার, ১৪ জানুয়ারি, ২০১৭ ০০:০০ টা
কৃষি

বদলে যাচ্ছে সিলেটের কৃষি

শাহ্ দিদার আলম নবেল, সিলেট

বদলে যাচ্ছে সিলেটের কৃষি

সিলেটে কৃষিকাজে বাড়ছে প্রযুক্তির ব্যবহার। সনাতন পদ্ধতি ছেড়ে কৃষকরা ঝুঁকছেন প্রযুক্তিনির্ভর চাষাবাদে। এতে সময় ও খরচ দুটোই সাশ্রয় হচ্ছে। প্রযুক্তির ব্যবহারে ফসল উৎপাদন হওয়ায় নতুন প্রজন্মও উদ্যোগী হচ্ছে কৃষিকাজে। ফলে দিন দিন বাড়ছে আবাদি জমির পরিমাণ ও ফসল উৎপাদন। একসময় গরু আর লাঙ্গলই ছিল কৃষকের চাষাবাদের উপকরণ। কৃষিকাজে প্রযুক্তির ব্যবহারকে তারা বাড়তি ঝামেলা ও ব্যয়সাপেক্ষ বলেই মনে করতেন। সময়ের ব্যবধানে দেশের কৃষিক্ষেত্রে লেগেছে প্রযুক্তির ছোঁয়া। পিছিয়ে নেই সিলেটের কৃষকরাও। জমি চাষ থেকে শুরু করে সেচ, ধানকাটা, মাড়াই ও বীজ রোপণে ব্যবহার করছেন আধুনিক কৃষিযন্ত্র। ফলে প্রতিবছরই বাড়ছে আবাদি জমি ও ফসল উৎপাদনের পরিমাণ। গত ২০১৩-১৪ সালে কৃষি মৌসুমে সিলেটে বোরো ও আউশ ধান চাষ হয়েছিল প্রায় সাড়ে ৫ লাখ হেক্টর জমিতে। ২০১৫-১৬ সালে তা বেড়ে দাঁড়ায় ৬ লাখ হেক্টরে। প্রযুক্তির সহজলভ্যতার কারণে মানুষ কৃষিকাজে আগ্রহী হওয়ায় বাড়ছে আবাদি জমির পরিমাণ এমনটা মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা। কৃষিকাজে প্রযুক্তির ব্যবহার বাড়াতে স্থানীয় কৃষি যন্ত্রপাতি উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠানগুলোও এগিয়ে এসেছে। নতুন প্রজন্মকে কৃষিকাজে আগ্রহী করতে হলে প্রযুক্তির ব্যবহারের বিকল্প নেই বলে মনে করছেন তারা। এ ব্যাপারে সিলেটের কৃষি যন্ত্রপাতি উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান আলিম ইন্ডাস্ট্রিজের ভাইস চেয়ারম্যান আলিমুস সাদাত চৌধুরী বলেন, একসময় কৃষিকাজ ছিল গরিব মানুষদের পেশা। এখন কৃষিকাজে শিক্ষিত যুবকরা এগিয়ে আসছেন। প্রবাসীরাও কৃষিতে বিনিয়োগ করছেন। ফলে সিলেটে কৃষিতে বিপ্লব ঘটতে যাচ্ছে। আর এটা সম্ভব হয়েছে প্রযুক্তির ব্যবহার ও কৃষিকাজ সহজীকরণের জন্য। কৃষিতে প্রযুক্তির ব্যবহারের কারণে খরচ ও সময় কমেছে জানিয়ে সিলেটের মোগলাবাজারের কৃষক শফি আহমদ জানান, আগে গরু ও লাঙ্গল দিয়ে হালচাষ, শ্রমিক দিয়ে চারা লাগানো, ধানকাটা ও মাড়াই করতে যে খরচ হতো এখন যন্ত্রপাতির মাধ্যমে এ কাজ করায় খরচ অর্ধেকের চেয়ে কম লাগছে। এ ছাড়া স্বল্প সময়ে কাজগুলো করতে পারায় শ্রমিক সংকটেও ভুগতে হচ্ছে না। কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর সিলেট অঞ্চলের অতিরিক্ত পরিচালক কৃষ্ণ চন্দ্র হোড় জানান, প্রযুক্তির ব্যবহার ছাড়া কৃষিতে উৎপাদন বাড়ানো সম্ভব নয়। তাই সনাতন পদ্ধতির পরিবর্তে প্রযুক্তির ব্যবহার বাড়াতে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর কাজ করে যাচ্ছে। এজন্য খামার যান্ত্রিকীকরণ প্রকল্পের মাধ্যমে কৃষকদের মধ্যে ভর্তুকি দিয়ে কৃষি যন্ত্রপাতি সরবরাহের পাশাপাশি কৃষকদের প্রযুক্তির প্রতি আগ্রহ বাড়াতে নিয়মিত মাঠ দিবস পালন করা হচ্ছে।

সর্বশেষ খবর