রবিবার, ১৫ জানুয়ারি, ২০১৭ ০০:০০ টা

বাঘ কাঁপানো শীতে মাঘের শুরু

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকৃতিতে ধীরে বয়ে চলেছে শৈত্যপ্রবাহ। দিন-রাতের তাপমাত্রা ক্রমেই কমছে। শেষরাত থেকে দুপুর অবধি ঘন কুয়াশা চারদিকে। মেঘমুক্ত আকাশে জলীয় বাষ্পও কমেছে। সঙ্গে আছে উত্তুরে হাওয়া। এরই মধ্যে চলে এসেছে ‘বাঘ কাঁপানো মাঘ’। আবহাওয়া অধিদফতর বলছে, পঞ্জিকার পাতায় গতকালই শুরু হয়েছে মাঘ মাস। এরই মধ্যে রংপুর, রাজশাহী ও সিলেটে মাঝারি থেকে তীব্র শৈত্যপ্রবাহ বইছে। অন্য সব বিভাগেও রয়েছে মৃদু শৈত্যপ্রবাহের আমেজ। সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ১০ ডিগ্রি সেলসিয়াস ছুঁইছুঁই। একজন আবহাওয়াবিদ জানান, কনকনে এমন শীতে রাজধানীসহ পুরো দেশ যেন জবুথবু। সবখানে বইছে কনকনে হিমেল হাওয়া। ইতিমধ্যে শীতের তীব্রতা অনুভূত হচ্ছেও বেশ। আকাশ মেঘমুক্ত, জলীয় বাষ্পও কমেছে, উত্তুরি হাওয়ার বেগ বেড়েছে। আরও দুই দিন পর তাপমাত্রা কমবে। বলা যায়, মাঘের প্রথম দিনই শীতে তীব্রতা ছিল। মাঘে বাঘ কাঁপানো শীত হবে এবার। এদিকে গতকাল মাঘ মাসের শুরুর দিনে চট্টগ্রামের কিছু এলাকা বাদ দিয়ে দেশব্যাপী শৈত্যপ্রবাহ শুরু হয়েছে। টাঙ্গাইল, শ্রীমঙ্গল, যশোর, পাবনা, দিনাজপুর, নীলফামারী, পঞ্চগড় ও চুয়াডাঙ্গা জেলার ওপর দিয়ে বয়ে চলেছে তীব্র শৈত্যপ্রবাহ। শৈত্যপ্রবাহের সঙ্গে বইছে শীতল বাতাস। ফলে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে জনজীবন। দেশে বর্তমানে সবচেয়ে কম তাপমাত্রা পঞ্চগড়ে, মাত্র ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস। আবহাওয়া অধিদফতর জানিয়েছে, বরিশাল বিভাগ, ফরিদপুর, মাদারীপুর, গোপলগঞ্জ, ময়মনসিংহ, নেত্রকোনা, সীতাকুণ্ড, রাঙামাটি, কুমিল্লা, ফেনী, খুলনা, সাতক্ষীরা ও যশোরে মৃদু থেকে মাঝারি আকারে শৈত্যপ্রবাহ বইছে। ১৩ জানুয়ারি থেকে শুরু হওয়া শৈত্যপ্রবাহ কিছুদিন অব্যাহত থাকবে। উপমহাদেশীয় উচ্চচাপ বলয় বাংলাদেশের উত্তর-পশ্চিমাংশ পর্যন্ত বিস্তৃত রয়েছে। মৌসুমি লঘুচাপ দক্ষিণ বঙ্গোপসাগর এলাকায় অবস্থান করছে, যে কারণে দেশব্যাপী চলছে শৈত্যপ্রবাহ। সারা দেশের আবহাওয়া শুষ্ক থাকার পাশাপাশি মধ্যরাত থেকে সকাল পর্যন্ত হালকা থেকে মাঝারি ধরনের কুয়াশা পড়তে পারে বলে জানিয়েছে আবহাওয়া অধিদফতর। রংপুরের রাজারহাটে ও পঞ্চগড়ের তেঁতুলিয়ায় তাপমাত্রা মাত্র ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস। খুলনা বিভাগে কম তাপমাত্রা চুয়াডাঙ্গায় ৫ দশমিক ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস। বরিশালের ভোলায় ৭ দশমিক ৫ ডিগ্রি তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে। রাজশাহী ও ঈশ্বরদীতেও চলছে তীব্র শৈত্যপ্রবাহ। এখানে তাপমাত্রা ৫ ডিগ্রিতে ওঠানামা করছে। সিলেটের শ্রীমঙ্গলের তাপমাত্রা ৫ দশমিক ৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস রেকর্ড করা হয়েছে। আমাদের প্রতিনিধিরা জানান— কুড়িগ্রাম : কুড়িগ্রাম জেলায় ঠাণ্ডার প্রভাবে বেড়েছে ডায়রিয়া, সর্দি, কাশি, নিউমোনিয়াসহ শীতজনিত রোগ। সদর হাসপাতালে গত ২৪ ঘণ্টায় ২৯ জন ডায়রিয়ার রোগী ভর্তি হয়েছেন। এ ছাড়া আউটডোরে প্রতিদিন গড়ে দেড়শ থেকে দুইশ জন চিকিৎসাসেবা নিচ্ছেন। হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসক শাহিনুর রহমান জানান, চিকিৎসকের সংকট থাকায় রোগীদের চিকিৎসাসেবা দিতে হিমশিম খেতে হচ্ছে। দিনাজপুর : বিকালের পর থেকে অতি প্রয়োজন ছাড়া কেউ বাইরে বের হচ্ছেন না। সন্ধ্যার পর শীতের প্রকোপ বেড়ে যায়। রাত যত গভীর হয় শীত তত বাড়ে। ঘন কুয়াশার কারণে দিনাজপুরে দিনের বেলায়ও যানবাহন হেডলাইট জ্বালিয়ে চলাচল করতে দেখা যায়। পঞ্চগড় : পঞ্চগড়ে সন্ধ্যা থেকেই কুয়াশায় ঢেকে যায় সবকিছু। শীত থেকে রেহাই পেতে কাঠখড় পুড়িয়ে আগুনের উত্তাপ নিচ্ছেন খেটে খাওয়া মানুষ। কয়েক দিন ধরেই জেলায় সূর্যের দেখা মেলে বেলা ১২টার দিকে। বরিশাল : জেলায় গতকাল চলতি মৌসুমের সর্বনিম্ন ৭ দশমিক ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করেছে স্থানীয় আবহাওয়া অফিস। দুপুরের দিকে সূর্যের দেখা মিললেও শীতের তীব্রতা কমেনি।

সর্বশেষ খবর