বুধবার, ১৮ জানুয়ারি, ২০১৭ ০০:০০ টা

ভালো নেই শতবর্ষী দম্পতি, বয়স্ক ভাতা পান একজন

মহিউদ্দিন মোল্লা, কুমিল্লা

ভালো নেই শতবর্ষী দম্পতি, বয়স্ক ভাতা পান একজন

ভালো নেই শতবর্ষী দম্পতি মোখলেছুর রহমান ও রহিমার নেছা। কুমিল্লার লাকসাম উপজেলার মনপাল গ্রামে বাস তাদের। দিন কাটে অর্ধাহারে, অনাহারে। দেখভালের তেমন সচ্ছল স্বজনও নেই। ১৯ শতকের প্রথম দিকে মোখলেছুর রহমানের জন্ম। দেখেছেন ব্রিটিশ ও পাকিস্তানি শাসন। মোখলেছুর রহমানের     দাবি, তার এখন বয়স ১২১ বছর। স্ত্রীর বয়সও শত বছরের কাছাকাছি। তিনি যখন বিয়ে করেন তখন বয়স ছিল ২৬ আর স্ত্রীর ছিল ৭ বছর। তাদের দাম্পত্য জীবনে তিন ছেলে ও তিন মেয়ে। দুই ছেলে মারা গেছেন। অন্য ছেলেরাও অসচ্ছল। স্বামী-স্ত্রী দুজনের দিন কাটছে নানা দুর্ভোগে। মোখলেছুর রহমান বলেন, ‘ভোটার আইডিতে আমার বয়স কম উঠেছে। এখন বয়স ১২১। গরিব ঘরের ছেলে, লেখাপড়া করতে পারিনি। সারা জীবন কঠোর পরিশ্রম করেছি। বাংলা ১৩৪৮ সালে ভারতের আসামে গিয়ে কাজ করেছি। আমার সমবয়সী ছিল গ্রামের ফজলের রহমান মোল্লা, আবদুল করিম, আবদুল গফুর। তারা ২৫-৩০ বছর আগে মারা গেছে। গ্রামে হাজী বাড়ি আর মোল্লা বাড়ির নামডাক ছিল। গ্রামের শিক্ষাবিদ হাজী আবদুল জব্বার একশর বেশি বয়স পেয়েছিলেন। গ্রামে তার দুটি জানাজা হয়েছিল। গ্রামের সব পরিবর্তন হয়েছে- শুধু মোল্লা বাড়ির পাশের গাব গাছটা আগের মতোই আছে। এটার বয়সও তিন-চারশ বছর হবে। এখন বয়স হয়েছে, কাজ করতে পারি না। একবেলা-দুবেলা খেয়ে দিন কাটে আমার আর স্ত্রীর। অল্প কিছুদিন ধরে মাসে চারশ টাকা করে ভাতা পাই। স্ত্রীও একটা ভাতা পেলে আমাদের একটু উপকার হতো।’  মনপাল গ্রামের বাসিন্দা উত্তরদা ইউপির প্যানেল চেয়ারম্যান মো. বেলাল হোসেন বলেন, তিনি এই এলাকার সবচেয়ে প্রবীণ মানুষ। তাদের পরিবার অভাব-অনটনে রয়েছে। আমার ওয়ার্ডের তিন গ্রামে একশজনের মতো লোক বয়স্ক ভাতা পাওয়ার উপযোগী। কিন্তু মাত্র দুজন বয়স্ক ভাতা পাচ্ছেন। উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা মো. সায়েফউদ্দিন বলেন, এগুলো ইউপি চেয়ারম্যানরা নির্ধারণ করেন। এক ঘরে দুজনকে ভাতা দেওয়ার নিয়ম নেই। তবে বিশেষ ব্যবস্থায় দেওয়া যেতে পারে। উত্তরদা ইউপি চেয়ারম্যান মো. হারুন-অর রশিদ বলেন, আমাদের চাহিদার অনুপাতে ভাতার কার্ডের বরাদ্দ কম। কাকে রেখে কাকে দেব বুঝতে পারছি না। ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ কার্ড  বেশি করে দিলে মানুষের উপকার হতো। জেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা হাসিনা মোরশেদ বলেন, জনসংখ্যা অনুপাতে কার্ড দেওয়া হয়। অসচ্ছল ৬৫ বছর বয়সের পুরুষ এবং ৬২ বছর বয়সের মহিলাদের এ ভাতা দেওয়া হয়। ইউনিয়ন ও উপজেলা থেকে তাদের সিলেকশন করা হয়।

সর্বশেষ খবর