বৃহস্পতিবার, ১৯ জানুয়ারি, ২০১৭ ০০:০০ টা

হকারমুক্ত গুলিস্তানে স্বচ্ছন্দে পথচারীরা

নিজস্ব প্রতিবেদক

রাজধানীর ব্যস্ততম গুলিস্তানের ফুটপাথ এখন হকারমুক্ত। ফলে ফুটপাথ দিয়ে গন্তব্যে যেতে দারুণ স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করছেন পথচারীরা।

দেখা গেছে, কোনো যানজট নেই। পথচারীরা নির্দিষ্ট গন্তব্যের বাস ধরছেন অনায়াসে। এ চিত্র শুধু গুলিস্তানের নয়, জিরো পয়েন্ট, বায়তুল মোকাররম, দৈনিক বাংলা মোড়, মতিঝিল, দিলকুশা ও পল্টন এলাকার। হকাররা যেন ফুটপাথে নির্দিষ্ট সময়ের আগে দোকান বসাতে না পারেন, সেজন্য সতর্ক রয়েছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী।

১১ জানুয়ারি নগর ভবনে এক বৈঠক শেষে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) মেয়র সাঈদ খোকন ঘোষণা দেন, ১৫ জানুয়ারি থেকে সাপ্তাহিক কোনো কর্মদিবসে গুলিস্তান ও আশপাশের এলাকায় দিনের বেলায় ফুটপাথে হকার বসতে দেওয়া হবে না। হকাররা দোকান নিয়ে বসতে পারবেন       

সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার পর। তবে ছুটির দিনে এ নিয়ম প্রযোজ?্য হবে না। এর পরই সিটি করপোরেশনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটরা হকার উচ্ছেদ অভিযান শুরু করেন।

জিরো পয়েন্টে গতকাল কথা হয় পথচারী আচ্চু মিয়ার সঙ্গে। তিনি জানান, পল্টনে একটি বেসরকারি প্রাইভেট ফার্মে চাকরি করেন। তার বাসা চিটাগং রোডে। অফিস থেকে বের হলে তিনি ফুটপাথ দিয়ে হাঁটতে পারতেন না। রাস্তায় হাঁটলে যানবাহনের ঝামেলা। অতিষ্ঠ হয়ে পড়েছিলেন। কিন্তু ফুটপাথ থেকে হকার উচ্ছেদ করায় এখন স্বচ্ছন্দে বাসায় যেতে পারছেন।

সুপ্রভাত পরিবহনের কলম নামে এক চালক জানান, তাদের বেশির ভাগ বাসই সিটিং সার্ভিসের। তারা সদরঘাট থেকে গাজীপুর চৌরাস্তা পর্যন্ত যাতায়াত করেন। কিন্তু প্রতিদিনই গুলিস্তানে এসে যানজটে পড়েন। ফুটপাথ থেকে হকার উচ্ছেদের ফলে গুলিস্তান যানজটমুক্ত হয়েছে। দুপুরে কথা হয় মতিঝিল শাপলা চত্বর মোড়ে কর্মরত এক ট্রাফিক কনস্টেবলের সঙ্গে। তিনি বলেন, ফুটপাথ থেকে হকার উচ্ছেদের ফলে মতিঝিলের যানজট অনেকাংশে কমে গেছে। তবে কিছু বাসের স্টপেজ থাকায় এখনো কিছুটা যানজট রয়ে গেছে।

আইন প্রণয়নের দাবি : হকারদের জন্য আইন প্রণয়নের দাবি জানিয়েছে বাংলাদেশ হকার্স ইউনিয়ন। একই সঙ্গে ফুটপাথের এক-চতুর্থাংশ জায়গা হকারদের বরাদ্দ দেওয়ারও দাবি জানিয়েছে সংগঠনটি। গতকাল সকালে পুরানা পল্টনের মুক্তি ভবনের মৈত্রী মিলনায়তনে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ দাবি জানানো হয়। দাবি আদায়ে ১০ দফা কর্মসূচিও ঘোষণা করেছেন সংগঠনের নেতারা। এর মধ্যে রয়েছে ১৯ জানুয়ারি বেলা ১১টায় মৈত্রী মিলনায়তনে প্রতিনিধি সভা। ২০ থেকে ২৫ জানুয়ারি স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের সঙ্গে মতবিনিময় ও স্মারকলিপি প্রদান। ২১ জানুয়ারি সমস্যা সমাধানে করণীয় শীর্ষক গোলটেবিল বৈঠক, ২২ জানুয়ারি সংবাদ সম্মেলন, ২৭ জানুয়ারি প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় অভিমুখে মিছিল ও স্মারকলিপি প্রদান।

হকার্স লীগের মানববন্ধন : পুনর্বাসন ছাড়া রাজধানীতে হকার উচ্ছেদের প্রতিবাদ জানিয়েছে বাংলাদেশ আওয়ামী হকার্স লীগ। সংগঠনটির উদ্যোগে গতকাল জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে মানববন্ধনের আয়োজন করা হয়। এ সময় নেতারা বলেন, ‘বাংলাদেশকে মধ্য আয়ের দেশে পরিণত করতে হলে হকারদের পুনর্বাসন ছাড়া উচ্ছেদ করা যাবে না। পুনর্বাসন ছাড়া ঢাকা মহানগরীর ১১ লাখ হকারকে উচ্ছেদ করবেন না। বঙ্গবন্ধু হকারদের উচ্ছেদ করেছিলেন তবে বিভিন্ন মার্কেটে দোকান তৈরি করে পুনর্বাসনও করেছিলেন। আমরা আশা রাখি, প্রধানমন্ত্রী বঙ্গবন্ধুর পথ অনুসরণ করেই হকারদের পুনর্বাসনের ব্যবস্থা করবেন।’

সর্বশেষ খবর