শনিবার, ২১ জানুয়ারি, ২০১৭ ০০:০০ টা

ছুটির দিনে উপচে পড়া ভিড় বাণিজ্য মেলায়

নিজস্ব প্রতিবেদক

ছুটির দিনে উপচে পড়া ভিড় বাণিজ্য মেলায়

ছুটির দিনে গতকাল সকাল থেকে বাণিজ্য মেলায় ছিল নানা শ্রেণি-পেশার মানুষের উপচে পড়া ভিড়। রোদের তীব্রতা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে বাড়তে থাকে দর্শনার্থী। বিকাল থেকে ঢল নামে দর্শনার্থীর। লক্ষাধিক মানুষের সমাগম ঘটে এ দিন। সরেজমিন দেখা গেছে, দেশি-বিদেশি পণ্যের পসরায় জমজমাট ছিল বিভিন্ন স্টল। মেলায় হাঁড়ি-পাতিল থেকে ক্রোকারিজ পণ্য, ইলেকট্রনিক দ্রব্যাদি, প্লাস্টিক পণ্য, খেলনা, তৈরি পোশাক, জুয়েলারি ও ফ্যাশনেবল বিভিন্ন পোশাকের সবকিছুরই সমাহার ছিল। মেলায় মোট ৫৭০টি স্টল থাকলেও ব্লেজার ও শীতের চাদর বা শালের স্টল বেশি লক্ষ্য করা গেছে। এক হাজার ২০০ থেকে শুরু করে ১ হাজার ৭০০ টাকায় মিলছে বাহারি রঙের বিভিন্ন ব্লেজার। মাত্র ২০০ থেকে শুরু করে আড়াই হাজার টাকায় মিলছে হাতের কারুকাজসহ দেশি-বিদেশি শাল ও চাদর। ছুটির দিন হওয়ায় এ দিন পরিবারসহ মেলায় কেনাকাটা করতে এসেছিলেন আশিকুর রহমান। তিনি জানান, ‘বাণিজ্য মেলায় মানসম্মত পোশাকপণ্য মিলছে সাধ্যের মধ্যেই। বিদেশি বিভিন্ন বোরখা, নেকাব মিলেছে ইরানি পণ্য সমাহার প্যাভিলিয়নে। মিলেছে দেশীয় বিভিন্ন ক্রোকারিজ পণ্যও। ৫৭ নম্বর স্টলের এফজি ও ৫০ নম্বর স্টলের কে জেড স্টলে মিলেছে বাহারি আর মনকাড়া ডিজাইনের ঘড়ি আর জুয়েলারি পণ্য। মাত্র সাড়ে ৪০০ টাকা থেকে শুরু করে দুই হাজার টাকায় এ ঘড়ি পাওয়া গেছে।’ ক্রেতারা জানান, নামকরা ব্র্যান্ডের প্লাস্টিক পণ্যের চাহিদা তাদের কাছে তুলনামূলকভাবে বেশি। দেখা গেছে, আরএফএল, বেঙ্গল, তানিন, পার্টেক্স ও হ্যামকো ব্র্যান্ডের বিশাল প্যাভিলিয়ন রয়েছে বাণিজ্য মেলায়। এ ছাড়া অন্য নিত্যপণ্যের সঙ্গে মেলায় আসা প্রতিষ্ঠানগুলো প্লাস্টিক পণ্যও বিক্রি করছে। মেলা উপলক্ষে প্রতিটি প্যাভিলিয়নে চলছিল নির্দিষ্ট আইটেমের ওপর নানা অঙ্কের ছাড়। আরএফএল টেলর (টয় অ্যান্ড প্লাস্টিক) সেলসের দায়িত্বে থাকা আনিসুর রহমান জানান, প্রতিটি খেলনা পণ্যের সঙ্গে দশ থেকে বিশ শতাংশ ছাড় রয়েছে। প্রাণ-এর ২২টি প্যাভিলিয়ন ও স্টলে ১০ থেকে ৫০ শতাংশ ছাড়ে পণ্য কিনতে পারছেন ক্রেতারা। সর্বনিম্ন ১০০ থেকে ৫০০ টাকার নির্দিষ্ট প্যাকেজের আওতায় রয়েছে নগদ মূল্য ছাড়। এ ছাড়া মেলায় আনা হয়েছে ২০০টিরও বেশি নতুন পণ্য। মেয়েদের হ্যান্ডব্যাগ, ট্রলিব্যাগসহ বিভিন্ন ব্যাগের সমাহার ঘটেছে মেলায়। ৫২ নম্বর স্টলে সুরভি গিফট কর্নারসহ অন্তত ১০টি স্টলে মিলছে মনোলোভা ডিজাইনের ব্যাগগুলো। রাজধানীর একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ুয়া অহনা আহনাফ অঙ্কিতা পছন্দের একটি হ্যান্ডব্যাগ কিনে জানান, বাহারি ডিজাইনের ব্যাগটি বাজারের চেয়ে সহনীয় দামে পাওয়া গেছে।

মেলায় বাংলাদেশ ট্যুরিজম বোর্ড দেশের বিভিন্ন দর্শনীয় স্থান প্রমোট করতে স্টল বসিয়েছে। একই সঙ্গে দর্শনীয় স্থানগুলোর ছবি সংবলিত রং-বেরঙের ফেস্টুন ও ক্যালেন্ডারও বিনামূল্যে বিতরণ করা হচ্ছে। এ প্যাভিলিয়নে স্বেচ্ছাসেবীর দায়িত্বে থাকা নাসরিন জাহান মুন্নী বলেন, দর্শনীয় স্থানগুলোকে প্রমোট করাই আমাদের লক্ষ্য। ১৬১ স্টলে চায়না ইন্দো হোম কালেকশনসহ নানা স্টলে মিলছে রং-বেরঙের সব কুশন, বেড শিট। রান্না-বান্নার কাজে ব্যবহার্য দেশি-বিদেশি বিভিন্ন মসলাজাত দ্রব্য। টিকিট বিক্রির ইজারাপ্রাপ্ত প্রতিষ্ঠানের মালিক মীর শহীদুল আলম বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, এ বছর এখন পর্যন্ত মোট ৯ লাখের বেশি টিকিট বিক্রি হয়েছে। এর আগের শুক্রবার ৮৫ হাজার মানুষের সমাগম ঘটেছিল। এখন বাকি দিনগুলোকে সামনে রেখে দর্শনার্থীর সংখ্যা প্রতিদিনই বাড়ছে। জানা গেছে, মেলায় ৬৪টি প্রিমিয়ার প্যাভিলিয়ন (পিপি), ১৭টি জেনারেল প্যাভিলিয়ন (জিপি), ২৮টি ফরেন প্যাভিলিয়ন (এফপি), ৩৭টি প্রিমিয়ার মিনি প্যাভিলিয়ন (পিএমপি), ২৫টি জেনারেল মিনি প্যাভিলিয়ন (জিএমপি), ৮টি ফরেন মিনি প্যাভিলিয়ন (এফএমপি), ৭৬টি প্রিমিয়ার স্টল (পিএস), ১৪টি ফরেন প্রিমিয়ার স্টল, ২৯২টি জেনারেল স্টল বসানো হয়েছে। এ ছাড়া ৮টি রিজার্ভ প্যাভিলিয়ন, ২৪টি খাবারের স্টল ও কয়েকটি রেস্তোরাঁ রাখা হয়েছে। গত বছরের তুলনায় খাবারের স্টলের সংখ্যা ও রেস্তোরাঁ দুটি করে কমানো হয়েছে।

সর্বশেষ খবর