রবিবার, ২২ জানুয়ারি, ২০১৭ ০০:০০ টা

ঢাকা কলেজে ছাত্রলীগের দুই গ্রুপে গোলাগুলি

সাত মোটরসাইকেলে আগুন

নিজস্ব প্রতিবেদক

আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে ঢাকা কলেজ শাখা ছাত্রলীগের দুই গ্রুপে সংঘর্ষ ও গোলাগুলির ঘটনা  ঘটেছে। এ সময় সাতটি মোটরসাইকেল পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। গতকাল সন্ধ্যায় এ সংঘর্ষে রাসেল ও মামুন নামে দুজন কর্মী গুলিবিদ্ধ হয়েছেন। তাদের ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। পরে  কলেজের নর্থ হলে ব্যাপক তল্লাশি চালানো হয়।

প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা গেছে, কলেজ ছাত্রলীগের আহ্বায়ক নূরে আলম ভূঁইয়া রাজুর অনুসারীরা একসঙ্গে পাঁচটি হলে হামলা চালায়। পরে যুগ্ম-আহ্বায়কের অনুসারীরা পাল্টা আক্রমণ করলে উভয় পক্ষে সংঘর্ষ বাধে। এ সময় এক যুগ্ম-আহ্বায়কসহ অন্তত ১০ নেতা-কর্মী আহত হন। এ বিষয়ে নিউমার্কেট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আতিকুর রহমান জানান, ঘটনা তদন্ত করে দেখা হচ্ছে। তল্লাশি চালিয়ে কয়েকজনকে আটক করা হয়েছে।

কলেজ ছাত্রলীগের যুগ্ম আহ্বায়ক মো. হিরন ভূঁইয়া বলেন, ছাত্রলীগের পুনর্মিলনী উপলক্ষে কলেজ শাখার অপর দুই যুগ্ম আহ্বায়ক রাসেল মাহমুদ ও হুমায়ূন কবির রানাসহ তিনি সন্ধ্যার দিকে  কেন্দ্রীয় সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের সঙ্গে দেখা করতে যান। তখন জানতে পারি কলেজ ছাত্রলীগের আহ্বায়ক নূরে আলম ভূঁইয়া রাজু বহিরাগত ২০ থেকে ২৫ জনকে নিয়ে পাঁচটি হলে আক্রমণ করেছে। তারা এই সময় নর্থ হলের আরেক যুগ্ম আহ্বায়ক শেখ রাসেলকে ঘুমন্ত অবস্থায় পিটিয়ে ও ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে আহত করেছে। এ সময় গুলির শব্দে শিক্ষার্থীদের মধ্যে  আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে বলে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ঢাকা কলেজের এক শিক্ষার্থী জানান।

তিনি বলেন, সংঘর্ষের সময় বেশ কয়েকটি মটরসাইকেলে আগুন দেওয়া হয়। অনেকেই তাত্ক্ষণিকভাবে হল ছেড়ে চলে গেছেন। হামলার অভিযোগ অস্বীকার করে কলেজ ছাত্রলীগ আহ্বায়ক রাজু বলেন, ‘ঘটনার সময় আমি কলেজেই ছিলাম না। সাধারণ কিছু ছাত্রের মধ্যে ঝামেলা হয়েছে। আমি প্রশাসনের সঙ্গে কথা বলে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করছি।’

নাম প্রকাশ না করার শর্তে ছাত্রলীগের এক নেতা বলেন, কয়েকদিন আগে নূরে আলম ভূঁইয়া রাজুকে আহ্বায়ক এবং ৩৫ জনকে যুগ্ম আহ্বায়ক করে ঢাকা কলেজ ছাত্রলীগের কমিটি হয়। কলেজের পাঁচটি হলের নিয়ন্ত্রণ ছয়জন যুগ্ম আহ্বায়কের হাতে থাকায় রাজু অনেকটাই কোণঠাসা ছিলেন। ওই ছয় যুগ্ম আহ্বায়ক হলেন- হিরন ভূঁইয়া, রাসেল মাহমুদ, হুমায়ূন কবির রানা, শেখ রাসেল, সুলতান মাহমুদ ও ইমরুল হাসান লেনিন। পুলিশের তল্লাশির সময় ছয় যুগ্ম আহ্বায়কই হলের বাইরে অবস্থান করছিলেন।

কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের নেতারা পুলিশের সহায়তা নিয়ে আমাদের হলে উঠতে বলেছেন। হলে এখন পুলিশের তল্লাশি চলছে। আমরা হলে ওঠার জন্য অপেক্ষায় আছি। এ বিষয়ে ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় সভাপতি সাইফুর রহমান বলেন, ‘শুনেছি বহিরাগত কিছু সন্ত্রাসী কলেজে প্রবেশ করে সাধারণ শিক্ষার্থী ও ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের উপর হামলা করেছে।’

ঘটনাটি খতিয়ে দেখতে তাত্ক্ষণিকভাবে কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি কাজী এনায়েত হোসেনকে ঘটনাস্থলে পাঠানো হয়েছে বলে জানান তিনি। সংঘর্ষে ছাত্রলীগের কেউ জড়িত থাকলে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলেও জানান ছাত্রলীগ সভাপতি।

সর্বশেষ খবর