শিরোনাম
মঙ্গলবার, ২৪ জানুয়ারি, ২০১৭ ০০:০০ টা

রোহিঙ্গা ক্যাম্প ঘিরে জঙ্গি তৎপরতা

রোহিঙ্গা হালচাল ১

মুহাম্মদ সেলিম, চট্টগ্রাম

কক্সবাজার ও বান্দরবানে শরণার্থী ক্যাম্পে বসবাসরত রোহিঙ্গাদের টার্গেট করে চলছে জঙ্গি তত্পরতা। মিয়ানমারের সেনা অভিযানের নির্যাতনকে পুঁজি করে রোহিঙ্গাদের দলে ভেড়ানোর চেষ্টা চালাচ্ছে ৩০টির মতো সংগঠন। জঙ্গি সংগঠনগুলোর দেখানো নির্যাতনের ভিডিও দেখে বাংলাদেশে বসবাসরত শত শত রোহিঙ্গা ওই সব সংগঠনে যোগ দিচ্ছে। র‌্যাব-৭ অধিনায়ক লে. কর্নেল মিফতাহ উদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘রোহিঙ্গা ক্যাম্পগুলোতে মিয়ানমারভিত্তিক জঙ্গি সংগঠনগুলো সংগঠিত হওয়ার চেষ্টা করে বলে আমরা সব সময় সেগুলো গোয়েন্দা নজরদারির মধ্যে রাখি। মিয়ানমারের সেনা অভিযানকে পুঁজি করে যাতে রোহিঙ্গা ক্যাম্পগুলোতে জঙ্গি সংগঠনগুলো কার্যক্রম চালাতে না পারে সেদিকে নজর রাখা হয়েছে।’

এক যুগ ধরে বাংলাদেশের জঙ্গিবাদের ওপর গবেষণা করছেন জঙ্গিবাদ প্রতিরোধ আন্দোলন বাংলাদেশের মহাসচিব হাসান রফিক। বাংলাদেশে জঙ্গিবাদের উত্থান নিয়ে তিনি লিখেছেন কয়েকটি বই। মিয়ানমারভিত্তিক জঙ্গি সংগঠনের কার্যক্রমের ওপর নজর রাখছেন দীর্ঘদিন ধরে। রোহিঙ্গা ক্যাম্পে জঙ্গি তত্পরতা নিয়ে তিনি বলেন, ‘দীর্ঘদিন ধরে রোহিঙ্গা শরণার্থী ক্যাম্পে জঙ্গি তত্পরতা চলছে। সাম্প্রতিক সময়ে মিয়ানমারের আরাকান রাজ্যে দেশটির সেনাবাহিনীর অভিযান ও নির্যাতনের চিত্র তুলে ধরে রোহিঙ্গা শরণার্থী ক্যাম্পে প্রচারণা চালাচ্ছে ৩০টির বেশি জঙ্গি সংগঠন। নির্যাতনের ভিডিওচিত্র দেখে বাংলাদেশে বসবাসরত শত শত রোহিঙ্গা নাগরিক জঙ্গি সংগঠনগুলোতে যোগ দিচ্ছে।’ জানা যায়, কক্সবাজার ও বান্দরবানে বসবাসরত প্রায় আড়াই লাখ রোহিঙ্গাকে টার্গেট করে পুরোদমে সক্রিয় হয়ে উঠেছে ৩০টির বেশি জঙ্গি সংগঠন। উখিয়া, টেকনাফ, রামু,  চকরিয়া থেকে শুরু করে বান্দরবানের অরণ্যঘেরা সীমান্ত নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় সক্রিয় রয়েছে জঙ্গি সংগঠনগুলো। তারা রোহিঙ্গা নির্যাতনের বিভিন্ন ভিডিওচিত্র ও নির্যাতনের বর্ণনা দিয়ে রোহিঙ্গাদের দলে টানার চেষ্টা করছে। এ সংগঠনগুলো পৃথক কার্যক্রম চালালেও তাদের লক্ষ্য অভিন্ন। এ জঙ্গি সংগঠনগুলোর অন্যতম নেতৃত্বে রয়েছেন নয়াপাড়া শরণার্থী ক্যাম্পের মাস্টার আইয়ুব, মৌলভী নুর হোসেন, আবু বক্কর, মৌলভী শফিক, ড. ইউনুস, ড. ইউনুসের সহোদর আবু তাহের, মেয়ের জামাই মো. ইউনুছ, মৌলভী মো. সেলিম ওরফে আবু আবদুল্লাহ, মোস্তাক মাঝি, রুহুল আমিন, হারুন, নেজাম, জকির আহমদ, আবদুর রাজ্জাক, রশিদ উল্লাহ, হাসান, মো. আয়াছ, নুর আলম, আবদুল হাকিম, তার ভাই নজির আহমদ ও বশির আহমদ, হোসেন আহমদ, কেফায়েত উল্লাহ, মাস্টার রশিদ, খোরশেদ, মাহামুদুল হাসান ও দুদু মিয়া। রোহিঙ্গাদের টার্গেট করে সক্রিয় জঙ্গি সংগঠনগুলোর অন্যতম হচ্ছে রোহিঙ্গা সলিডারিটি অর্গানাইজেশন (আরএসও), হরকাতুল ইয়াকিন, আকামুল মুজাহিদিন আরাকান, ফেইথ মুভমেন্ট অব আরাকান, রোহিঙ্গা আজাদি ফোর্স, জমিয়তে ইত্তেহাদুল রোহিঙ্গা, জমিয়তে ইত্তেহাদুল ইসলাম, আরাকান রোহিঙ্গা ইউনিয়ন, বার্মা আরাকান অর্গানাইজেশন ইউকে, ভয়েস অব রোহিঙ্গা ইউনাইটেড, রোহিঙ্গা রিফিউজি হিউম্যান রাইটস, আরাকান পিপলস ফ্রিডম পার্টি, অ্যাসেম্বলি অব রোহিঙ্গা অ্যাসোসিয়েশন, আরাকান রোহিঙ্গা স্টুডেন্ট ডেমোক্রেসি অ্যাসোসিয়েশন, আরাকান ইউনাইটেড ফোর্স, আরাকান আর্মি (এএ), আরাকান লিবারেশন ফ্রন্ট (এএলপি), আরাকান পিপলস আর্মি, আরাকান রোহিঙ্গা ফোর্স প্রভৃতি।

 

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর