মঙ্গলবার, ২৪ জানুয়ারি, ২০১৭ ০০:০০ টা

শিল্পকলায় পিঠা উৎসব

সাংস্কৃতিক প্রতিবেদক

শিল্পকলায় পিঠা উৎসব

বাঙালির জীবন ও সংস্কৃতির এক অবিচ্ছেদ্য অংশ পিঠা। বার্গার, পিত্জা, হটডগ, স্যান্ডউইচ ইত্যাদির জোয়ারে শহুরে নাগরিকদের কাছে বাঙালির চিরায়ত ঐতিহ্য পিঠা বর্তমানে রূপকথা। শীতে পিঠা বাঙালির পরানের গহীনে নাড়া দেয় পরম মমতার সঙ্গে। বাঙালির চিরায়ত এ ঐতিহ্যের সঙ্গে শহুরে নাগরিকদের পরিচয় করিয়ে দিতে এবং পিঠার সঙ্গে মেলবন্ধন ঘটাতে শিল্পকলা একাডেমিতে শুরু হলো দশম জাতীয় পিঠা উৎসব ১৪২৩’।

নীলাকাশে রংবেরঙের বেলুন ও শান্তির পায়রা উড়িয়ে গতকাল সন্ধ্যায় শিল্পকলা একাডেমির কফি হাউসের           উন্মুক্ত মঞ্চে ৮ দিনব্যাপী এ উৎসবের উদ্বোধন করেন অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত। উদ্বোধনী সন্ধ্যায় বিশেষ অতিথি ছিলেন সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব রামেন্দু মজুমদার, সংগীতশিল্পী সৈয়দ আবদুল হাদী, নৃত্যশিল্পী আমানুল হক প্রমুখ। উৎসব উদযাপন পর্ষদের আহ্বায়ক ম. হামিদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন পর্ষদের সদস্য সচিব খন্দকার শাহ আলম। উৎসব উদ্বোধনকালে অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত বলেন, পিঠা শীতের এক অনিবার্য অনুষঙ্গ। বাংলার সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের ধারকও পিঠা। ছোটবেলা থেকেই পিঠা বানানো দেখেছি নিজের বাসায় এবং আত্মীয়-স্বজনদের বাসায়। পিঠা উৎসব উদযাপন পরিষদের সদস্য সচিব খন্দকার শাহ আলম বলেন, ২০০৮ সালে যখন দেশে সব সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ড স্থবির তখন পিঠা উৎসবের আয়োজন করা হয়। বন্ধু ও শুভানুধ্যায়ীদের সহযোগিতায় শুরু করা সেই উৎসব গত দশ বছরে মানুষের কাছে গ্রহণযোগ্য হয়ে উঠেছে। ভাঁপা পিঠা, ঝাল পিঠা, ছাঁচ পিঠা, ছিটকা পিঠা, চিতই পিঠা, দুধ চিতই, বিবিখানা, চুটকি পিঠা, চাপড়ি পিঠা, চাঁদ পাকান পিঠা, ছিট পিঠা, সুন্দরী পাকান, সরভাজা, পুলি পিঠা, পাতা পিঠা, পাটিসাপটা, পাকান পিঠা, পানতোয়া, মালপোয়া, মেরা পিঠা, মালাই পিঠা, মুঠি পিঠা, আন্দশা, কুলশি, কাটা পিঠা, কলা পিঠা, খেজুরের পিঠা, ক্ষীর কুলি, গোকুল পিঠা, গোলাপ ফুল পিঠা, লবঙ্গ লতিকা, রসফুল পিঠা, জামদানি পিঠা, হাঁড়ি পিঠা, ঝালপোয়া পিঠা, ঝুরি পিঠা, ঝিনুক পিঠা, সূর্যমুখী পিঠা, নকশি পিঠা, নারকেল পিঠা, নারকেলের ভাজা পুলি, নারকেলের সেদ্ধ পুলি, নারকেল জেলাফি, তেজপাতা পিঠা, তেলের পিঠা, তেলপোয়া পিঠা, দুধরাজ, ফুল ঝুরি পিঠা, ফুল পিঠা, বিবিয়ানা পিঠা, সেমাই পিঠাসহ প্রায় ১৭৮ রকমের পিঠা দিয়ে সাজানো হয়েছে উৎসবের ৪০টি পিঠা স্টল।

পিঠা বানানোর পাশাপাশি উৎসবে একই সঙ্গে চলছে পিঠা প্রদর্শনী ও বিক্রি। উৎসবের উন্মুক্ত মঞ্চে প্রতিদিন বিকাল চারটা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত নাচ, গান, আবৃত্তি ও পথনাটকসহ নানা সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ড অনুষ্ঠিত হচ্ছে। উদ্বোধনী আলোচনা শেষে অনুষ্ঠিত হয় সাংস্কৃতিক আয়োজন। এ পর্বের শুরুতেই ভাওয়াইয়া শিল্পী সফিউল আলম রাজা পরিবেশন করেন ‘মনটা মোর পিঠা খাবার চায়’  ‘ও কি গাড়িয়াল ভাই’সহ দুটি গান। এরপর সংগীত পরিবেশন করেন সনৎ কুমার বিশ্বাস, ওমর আলী, দেলোয়ার বয়াতি, শিমুল খান প্রমুখ। এতে দলীয় নৃত্য পরিবেশন করেন ফাল্গুনী সামাজিক সাংস্কৃতিক সংস্থার শিল্পীরা।

অমর একুশে গ্রন্থমেলার  লটারি অনুষ্ঠিত

একুশের চেতনায় ঋদ্ধ হয়ে আর কদিন পরই শুরু হচ্ছ অমর একুশে গ্রন্থমেলা ২০১৭। স্টল বরাদ্দের প্রক্রিয়া হিসাবে গতকাল বিকালে বাংলা একাডেমির আবদুল করিম সাহিত্যবশারদ মিলনায়তনে লটারি অনুষ্ঠিত হলো। আর গ্রন্থমেলার ইতিহাসে এবারই প্রথম ডিজিটাল লটারি অনুষ্ঠিত হলো। একাডেমির মহাপরিচালক শামসুজ্জামান খান এ লটারি কার্যক্রমের উদ্বোধন করেন। এ সময় উপস্থিত ছিলেন মেলা পরিচালনা কমিটির সদস্য সচিব ড. জালাল আহমেদ ও প্রকাশকরা।

এবারের মেলায় অংশগ্রহণের জন্য প্যাভিলিয়ন পেয়েছে ১১টি প্রকাশনা সংস্থা, বাংলা একাডেমির প্যাভিলিয়ন থাকছে ২টি, ১ ইউনিট পেয়েছে ১৪২টি প্রতিষ্ঠান, ২ ইউনিট পেয়েছে ১১৪টি, ৩ ইউনিট পেয়েছে ৩১টি এবং চার ইউনিট বরাদ্দ পেয়েছে ১৯টি প্রকাশনা প্রতিষ্ঠান।

 

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর