বুধবার, ২৫ জানুয়ারি, ২০১৭ ০০:০০ টা

সাংবাদিক নাজমুলকে নতুন মামলায় ফাঁসানোর পাঁয়তারা

নিজস্ব প্রতিবেদক

বাংলাদেশ প্রতিদিনের সাংবাদিক নাজমুল হুদাকে নতুন মামলায় ফাঁসানোর পাঁয়তারা করছে আশুলিয়া থানা পুলিশ। আশুলিয়া থানা নাজমুল সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য জানাতে রাজবাড়ীর বোয়ালিয়া থানাকে তাগাদাপত্র দিয়েছে। এর পরিপ্রেক্ষিতে বোয়ালিয়া থানার এসআই সোহেল সোমবার তার গ্রামের বাড়িতে যান এবং নাজমুল ও তার পরিবারের সদস্যদের সম্পর্কে খোঁজখবর নেন।

এদিকে নাজমুলের বিরুদ্ধে করা সব মামলার রিমান্ড নাকচ হলেও জামিন মিলেছে শুধু একটি মামলায়। এ কারণে তার স্বজনদের মধ্যে হতাশা দেখা দিয়েছে। অন্যদিকে এক মামলার রিমান্ড শুনানির জন্য এ পর্যন্ত বহুবার কারাগার থেকে সাংবাদিক নাজমুলকে আদালতে আনা হয়েছে। এমনকি কোনো মামলার ধার্য তারিখ ছাড়াই তাকে কারাগার থেকে আদালতে আনা হয়। অতি উৎসাহী ঢাকা জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আশরাফুল আজিম ও আশুলিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোহসিনুল কাদিরসহ তিন পুলিশ কর্মকর্তা সাংবাদিক নাজমুলের বিরুদ্ধে এসব হয়রানিমূলক মামলা করেন। এটি সরকার ও পুলিশ বাহিনীর ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করার ষড়যন্ত্র বলে অভিজ্ঞ মহলের অভিমত। এ বিষয়ে নাজমুলের আইনজীবী তুহিন হাওলাদার বাংলাদেশ প্রতিদিনকে জানান, সাংবাদিক নাজমুলকে নানাভাবে হয়রানি করছে পুলিশ। তবে আশার কথা, গতকালও আশুলিয়া থানার একটি মামলায় রিমান্ড আবেদন নাকচ হয়েছে। এখন আর কোনো মামলায় রিমান্ডে নেওয়ার আবেদন নেই। এ ছাড়া পুলিশের করা ঢাকার আশুলিয়া থানার তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি আইনের মামলায় জামিন পেয়েছেন সাংবাদিক নাজমুল। ঢাকায় অবস্থিত বাংলাদেশের একমাত্র সাইবার ট্রাইব্যুনালের বিচারক কে এম শামসুল আলম ২৩ জানুয়ারি তাকে জামিন দেন। এ ছাড়া আশুলিয়া থানার প্যান্ট চুরিসহ পাঁচ মামলার জামিন আবেদন একের পর এক নাকচ করে দেয় ঢাকার মুখ্য বিচারিক হাকিম আদালত। এখন ওই আদালতের আদেশের বিরুদ্ধে নিয়মানুযায়ী ঢাকার জেলা ও দায়রা জজ আদালতে জামিনের আবেদন করা হবে। এর আগে ২৩ ডিসেম্বর রাতে আশুলিয়া থানা পুলিশ বাদী হয়ে বাংলাদেশ প্রতিদিনের সাভার প্রতিনিধি নাজমুল হুদার বিরুদ্ধে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি আইনে মামলা করে। এর কিছুক্ষণ পরই তাকে গ্রেফতার করা হয়। পরে প্যান্ট চুরির মামলাসহ পুরনো আরও পাঁচ মামলায় গ্রেফতার দেখিয়ে দফায় দফায় রিমান্ডে নেওয়ার আবেদন করা হয়। কিন্তু আদালত প্যান্ট চুরির মামলাসহ পুরনো পাঁচ মামলার সব কটির রিমান্ড আবেদন নাকচ করে দেয়। এদিকে রিমান্ডে থাকাকালীন সময়ে সাভারের বাংলাদেশ প্রতিদিন প্রতিনিধি নাজমুল হুদাকে ব্যাপক নির্যাতন করা হয়। এমনকি কোর্ট থেকে তাকে থানায় নেওয়ার পথেও সাঈদ নামের এক ইন্সপেক্টর ব্যাপকভাবে মারধর করেন। ঘুষি মেরে তার কান ফাটিয়ে দেন। নাজমুলের এখন কানে শুনতে সমস্যা হচ্ছে। তার আইনজীবীরা জানান, কারান্তরীণ নাজমুল গুরুতর অসুস্থ। রিমান্ড শেষে জেলখানায় নেওয়ার পরও তাকে হয়রানি করা হয়। তার সব শীতের কাপড় ও নিত্যপ্রয়োজনীয় সামগ্রী চুরি হয়ে যায়। এ ব্যাপারে জেলকর্তৃপক্ষও কোনো সদুত্তর দিতে পারেননি। কতিপয় পুলিশ কর্মকর্তার প্রতিহিংসার শিকার হয়ে নাজমুলের বিরুদ্ধে প্রথমে আইসিটি পরে বিভিন্ন রহস্যজনক মামলা দায়ের করা হয়। এর মধ্যে প্যান্ট চুরিসহ পাঁচটি মামলা রয়েছে। আটকের পর থেকেই নিত্যনতুন অভিযোগ আনা হচ্ছে তার বিরুদ্ধে। অথচ এক সময় এই পুলিশ সদস্যরাই নাজমুলের সঙ্গে ঘুরে বেড়াত এবং ব্যাডমিন্টন খেলত।

সর্বশেষ খবর