শনিবার, ২৮ জানুয়ারি, ২০১৭ ০০:০০ টা

পোশাক শ্রমিক নির্যাতন-ছাঁটাই বন্ধে প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ চায় অ্যাকর্ড

ষড়যন্ত্রের শিকার নিরীহ শ্রমিক, শ্রমিক নেতা ও সাংবাদিক নাজমুল হুদা

রুহুল আমিন রাসেল

পোশাকশিল্প শ্রমিকদের ওপর নির্যাতন, দমন-পীড়ন ও অন্যায়ভাবে শ্রমিক ছাঁটাই বন্ধ করা এবং তাদের মজুরি বাড়াতে প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ চেয়েছে ইউরোপীয় ইউনিয়নের ক্রেতা জোট অ্যাকর্ড অন ফায়ার অ্যান্ড বিল্ডিং সেফটি ইন বাংলাদেশ। সম্প্রতি পোশাকশিল্প অধ্যুষিত আশুলিয়ায় শ্রমিকরা যখন মজুরি বাড়ানোর আন্দোলনে নামেন, তখন মালিকপক্ষ ব্যস্ত থাকে অন্যায়ভাবে ছাঁটাইয়ে। পুলিশের নিষ্ঠুর নির্যাতন নেমে আসে নিরীহ শ্রমিকদের ওপর। অনেকে গ্রেফতার হন। শ্রমিক আন্দোলনের সত্য সংবাদ লেখায় এ থেকে রেহাই পাননি বাংলাদেশ প্রতিদিনের সাভার প্রতিনিধি নাজমুল হুদাও। পোশাক মালিক ও প্রশাসনের ষড়যন্ত্রে প্যান্ট চুরিসহ ছয়টি মামলায় পুলিশি নির্যাতন এবং গ্রেফতারের খড়্গ নামে নাজমুলের ওপর।

জানা গেছে, দেশে রপ্তানি আয়ের প্রধান খাত তৈরি পোশাকশিল্পের শ্রমিকরা তাদের চলমান জীবন-যাপনের গভীর সংকট উত্তরণে সরকার ও মালিকদের কাছে দীর্ঘদিন ধরে প্রধান পাঁচটি দাবি জানিয়ে আসছেন। এসব দাবিতে আশুলিয়ায় গত ডিসেম্বর মাসে মজুরি বাড়ানোর আন্দোলন তীব্র রূপ নেয়। আর তাতেই অন্যায়ভাবে দেড় হাজার পোশাক শ্রমিক ছাঁটাইয়ের শিকার হন। অনেক শ্রমিক ও তাদের নেতা আটক  হন। গ্রেফতার-নির্যাতন আর হামলা-মামলার শিকার হন অনেকে। এ ঘটনায় শ্রমিকদের মৌলিক অধিকার ক্ষুণ্ন হওয়ায় চলতি মাসের ১২ তারিখ গভীর উদ্বেগ জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে চিঠি দেন অ্যাকর্ডের নির্বাহী পরিচালক রব ওয়েজ। প্রসঙ্গত, ২০১৩ সালে রানা প্লাজা ধসের পর পোশাক খাতের কর্মপরিবেশ উন্নয়নে ইউরোপীয় ২২০ ব্র্যান্ড ও খুচরা বিক্রেতা এবং দেশি-বিদেশি শ্রমিক সংগঠনের চুক্তির মাধ্যমে অ্যাকর্ড গঠিত হয়।  ওই চিঠির সত্যতা স্বীকার করেছেন বিজিএমইএ সভাপতি সিদ্দিকুর রহমান।

প্রধানমন্ত্রীকে লেখা অ্যাকর্ডের ওই চিঠিতে বাংলাদেশের পোশাকশিল্পে কর্মরত শ্রমিকদের বেতন-ভাতা বাড়াতে নতুন মজুরি বোর্ড গঠন করতে সরকারের প্রতি অনুরোধ জানিয়ে বলা হয়— শ্রমিকদের নতুন মজুরি বোর্ড গঠনের পাশাপাশি নিয়মিত পর্যালোচনা করা হলে পোশাক খাতে স্থিতাবস্থা বজায় রাখা সহজ হবে। এই স্থিতাবস্থা সাম্প্রতিক সময়ে পোশাকশিল্পে যে অনভিপ্রেত ও অপ্রত্যাশিত ঘটনা ঘটেছে, তা-ও এড়ানো যাবে। এ ধরনের পরিস্থিতি শিল্পের ভাবমূর্তি ও আস্থা ক্ষুণ্ন করে, যা সরকারসহ সবাই কঠোর পরিশ্রম করে অর্জন করেছে। তথ্য মতে, গত চার দশকে গড়ে ওঠা বাংলাদেশের অর্থনীতির অন্যতম অংশীদার পোশাকশিল্প দেশের আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে ব্যাপক ভূমিকা পালন করে আসছে। সর্বশেষ ২০১৩ সালের ডিসেম্বরে শ্রমিকদের মজুরি বাড়ে। সে সময় এ খাতের ন্যূনতম মজুরি মাসিক ৩ হাজার টাকা থেকে বাড়িয়ে ৫ হাজার ৩০০ টাকা করা হয়। শ্রম আইন অনুযায়ী, মজুরি ঘোষণার এক বছর পর ও তিন বছরের মধ্যে মজুরি পুনর্নির্ধারণের সুযোগ আছে।

সর্বশেষ খবর