রবিবার, ২৯ জানুয়ারি, ২০১৭ ০০:০০ টা

১২ টাকার জন্য গৃহবধূকে পিটিয়ে হত্যা

বগুড়া প্রতিনিধি

বগুড়ার ধুনটে মাত্র ১২ টাকা চুরির অভিযোগে পৈশাচিক নির্যাতনের শিকার হয়ে প্রাণ হারাতে হয়েছে গৃহবধূ আরজিনা খাতুনকে (৩৭)। গতকাল সকালে বাড়ির পাশের বাঁশবাগান থেকে তার ঝুলন্ত লাশ পাওয়া গেছে। আরজিনার ভাইয়ের অভিযোগ, স্বামী রেজাউল করিম দফায় দফায় নির্যাতনের পর ঘটনাকে আত্মহত্যা বলে চালানোর জন্য লাশ ঝুলিয়ে রাখেন।

প্রতিবেশী সূত্রে জানা গেছে, প্রায় ২০ বছর আগে চৌকিবাড়ি ইউনিয়নের বিষপুর গ্রামের মজিবর রহমানের মেয়ে আরজিনা খাতুনের সঙ্গে একই ইউনিয়নের বিশ্বহরিগাছা গ্রামের শুকুর আলীর ছেলে রেজাউল করিমের বিয়ে হয়। এর পর থেকে কারণে-অকারণে আরজিনাকে নির্যাতন করতেন রেজাউল। বাড়িতে শুধু রেজাউল ও তার স্ত্রী এবং তাদের তিন সন্তান থাকত। পরশু বিছানার নিচ থেকে ১২ টাকা হারিয়ে যায়। এ নিয়ে আরজিনাকে কয়েক দফা মারধর করেন রেজাউল। গতকাল সকালে বাড়ির পাশে বাঁশবাগানে তার ঝুলন্ত লাশ দেখা যায়। এ ঘটনায় আরজিনার বড় ভাই আবদুর রাজ্জাক বাদী হয়ে থানায় একটি অস্বাভাবিক মৃত্যুর মামলা করেছেন। আরজিনা খাতুনের বড় মেয়ে সপ্তম শ্রেণির আদুরী খাতুনের ভাষ্য, এই ১২ টাকা গতকাল দুপুরে বাবার বিছানার নিচ থেকে সে নিয়েছিল। বাবা এই টাকা খুঁজে না পেয়ে মাকে টাকা চুরির অভিযোগে মারধর করে। এ ঘটনা নিয়ে দিনভর মা-বাবার মধ্যে ঝগড়া হয়। এরপর রাতে বাড়ির সবাই ঘুমিয়ে পড়ে। পরে কী হয়েছে, তা সে জানে না। আরজিনার বড় ভাই আবদুর রাজ্জাকের ভাষ্য, ‘বিয়ের পর থেকে রেজাউল করিম আমার বোনকে মিথ্যা অপবাদে মারধর করত। এসব ঘটনা নিয়ে দফায় দফায় সালিস বেঠক করে মীমাংসা হয়েছে। গতকাল দুপুরে টাকা চুরির অভিযোগে আমার বোনকে কয়েক দফা মারধর ও নির্যাতন করা হয়েছে।’ আবদুর রাজ্জাকের দাবি, এ ঘটনার  জের ধরে রাতে রেজাউল করিম আরজিনাকে পিটিয়ে ও লোহার রড দিয়ে খুঁচিয়ে হত্যা করেছেন। পরে তিনি এই হত্যাকাণ্ডকে আত্মহত্যা বলে প্রমাণ করতে লাশ বাঁশবাগানের ভিতর ঝুলিয়ে রেখে পালিয়েছেন। ধুনট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মিজানুর রহমান বলেন, নিহত আরজিনা খাতুনের শরীরে ও দুই পায়ে আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। এ কারণে লাশ ময়নাতদন্তের জন্য বগুড়ার শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।

সর্বশেষ খবর