মঙ্গলবার, ৩১ জানুয়ারি, ২০১৭ ০০:০০ টা

লতিফ সিদ্দিকীর শূন্য আসনে আমেজহীন উপনির্বাচন আজ

টাঙ্গাইল প্রতিনিধি

আজ অনুষ্ঠিত হচ্ছে সেই আবদুল লতিফ সিদ্দিকীর শূন্য টাঙ্গাইল-৪ (কালিহাতী) আসনের উপনির্বাচন। নির্বাচনে শক্তিশালী কোনো প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী না থাকায় আওয়ামী লীগের সরকারদলীয় প্রার্থী হাসান ইমাম খান সোহেল হাজারী এককভাবে ভোট পেয়ে নির্বাচিত হওয়ার পথে রয়েছেন। অন্যদিকে বাংলাদেশ ন্যাশনালিস্ট ফ্রন্টের (বিএনএফ) আতাউর রহমান খান (বড়ভাই) ও ন্যাশনাল পিপলস পার্টির ইমরুল কায়েস মাঠে থাকলেও তাদের কোনো কার্যক্রম নেই। নেই কোনো প্রচার-প্রচারণা। নির্বাচনে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী ছাড়া তেমন কোনো শক্তিশালী প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী না থাকায় আমেজহীন হয়ে পড়েছে এই উপনির্বাচন। ভোটাররা মনে করছেন, নির্বাচনে যদি কাদের সিদ্দিকী থাকতেন তাহলে অন্য রকম আমেজ থাকত। ভোটের লড়াইটাও হতো হাড্ডাহাড্ডি। ধর্ম নিয়ে কটূক্তি করায় সাবেক মন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য আবদুল লতিফ সিদ্দিকীকে দল থেকে বহিষ্কার করা হলে আসনটি শূন্য হয়। শূন্য আসনে ২০১৫ সালের ১০ নভেম্বর ভোট গ্রহণের কথা ছিল। নির্বাচনে আওয়ামী লীগ ছাড়াও বঙ্গবীর আবদুল কাদের সিদ্দিকীসহ বেশ কয়েকটি রাজনৈতিক দলের প্রার্থী মনোনয়নপত্র দাখিল করেন। মনোনয়ন যাচাই-বাছাইয়ে ঋণ খেলাপের দায়ে কাদের সিদ্দিকীর মনোনয়নপত্র বাতিল হয়ে যায়। আপিল করা হলে নির্বাচন কমিশন, হাই কোর্ট মনোনয়নপত্র অবৈধ ঘোষণা করে। এর বিরুদ্ধে কাদের সিদ্দিকী আপিল করেন। সর্বশেষ ১৮ জানুয়ারি সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ হাই কোর্টের রায় বহাল রাখে। এর পরই তড়িঘড়ি করে অল্প সময়ের মধ্যে ৩১ জানুয়ারি ভোট গ্রহণের দিন নির্ধারণ করে নির্বাচন কমিশন।গতকাল সোমবার নির্বাচনী এলাকা ঘুরে দেখা যায়, সরকারদলীয় প্রার্থী হাসান ইমাম খান সোহেল হাজারীর নির্বাচনী প্রতীক নৌকা মার্কার পোস্টার ছাড়া অন্য কোনো প্রার্থীর প্রচার-প্রচারণা চোখে পড়েনি। নৌকা মার্কার কিছু পোস্টার লাগানো হলেও অনেক এলাকার ভোটার জানেন না কবে কখন ভোট। ভোটার আনছার আলী বলেন, ‘দীর্ঘ ১৪ মাস নির্বাচন না হওয়ায় অনেক উন্নয়ন কাজ হচ্ছে না। আটকে রয়েছে এমপি কোটার অনেক উন্নয়ন কাজের বরাদ্দ। নির্বাচনে যিনিই জয়লাভ করুন না কেন, তিনি যেন উপজেলায় উন্নয়ন কাজ করেন।’  ভোটার কমল কান্তি সাহা বলেন, ‘যদি কাদের সিদ্দিকী বা বিএনপির কোনো প্রার্থী থাকত, তাহলে নির্বাচনের মোড় অন্যদিকে যেত। তখন নির্বাচনের লড়াই জমজমাট হতো এবং কেউ কাউকে ছেড়ে কথা বলত না। তখন ভোটের মাঠ উত্তাপ থাকত। সরগরম থাকত নির্বাচনী এলাকাগুলো।’ এ বিষয়ে কথা হয় উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার মিজানুর রহমান মজনুর সঙ্গে। তিনি এ প্রতিবেদককে বলেন, কাদের সিদ্দিকী থাকলে নির্বাচন ‘কনটেস্ট’ হতো। কিন্তু কাদের সিদ্দিকী জয়লাভ করতে পারতেন না। ভোটার সুশান্ত পাল বললেন উল্টো, ‘কাদের সিদ্দিকীর জন্মভূমি কালিহাতী। তাই তিনি প্রার্থী হলে সরকারি দলের যত বড় মাপের প্রার্থীই থাকত, তাকে পরাজিত হতে হতো। সেই ভয়েই কাদের সিদ্দিকীকে নির্বাচন থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে।’ জেলা নির্বাচন অফিসার এবং টাঙ্গাইল-৪ আসনের (কালিহাতী) উপনির্বাচনের সহকারী রিটার্নিং অফিসার তাজুল ইসলাম বলেন, প্রার্থীরা বিধি অনুযায়ী প্রচার-প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছেন। কোনো প্রার্থী আচরণবিধি লঙ্ঘন করলে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে। তিনি বলেন, নির্বাচন সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ করতে প্রয়োজনীয় সব ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। ১৩টি ইউনিয়ন ও দুটি পৌরসভা নিয়ে গঠিত এ আসনের  মোট ভোটার দুই লাখ ৮৯ হাজার ৯৯২ জন। এর মধ্যে পুরুষ এক লাখ ৪৩ হাজার ২৩২ জন আর মহিলা এক লাখ ৪৬ হাজার ৭৬০ জন।

সর্বশেষ খবর