শুক্রবার, ১০ ফেব্রুয়ারি, ২০১৭ ০০:০০ টা

সম্পূরক অভিযোগপত্র রেলের সেই মৃধার বিরুদ্ধে

সাইদুল ইসলাম, চট্টগ্রাম

দেশের আলোচিত রেলওয়ে পূর্বাঞ্চলের সেই বরখাস্ত মহাব্যবস্থাপক (জিএম) ইউসুফ আলী মৃধার বিরুদ্ধে সাত মামলায় আদালতে সম্পূরক অভিযোগপত্র জমা দিয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। নিয়োগে দুর্নীতির অভিযোগে দায়ের হওয়া এসব মামলার অভিযোগপত্র নগরীর কোতোয়ালি থানায়ও পাঠানো হয়েছে। তবে দুই বছর আগে এসব মামলায় মৃধাকে অব্যাহতি দিয়ে আদালতে অভিযোগপত্র দিয়েছিল দুদক। গতকাল অধিকতর তদন্ত কর্মকর্তা  হিসেবে দুদকের দুই কর্মকর্তা চট্টগ্রামের মুখ্য মহানগর হাকিম আদালতে অভিযোগপত্রগুলো জমা দেন বলে জানান তদন্ত কর্মকর্তা আজিজুর রহমান ভূঁইয়া।

এই তদন্ত কর্মকর্তা বলেন, ‘হাই কোর্টের নির্দেশে আমরা সাতটি মামলার সম্পূরক অভিযোগপত্র আদালতে ও সংশ্লিষ্ট থানায় জমা দিয়েছি। অভিযোগপত্রে ইউসুফ আলী মৃধা এবং রেলওয়ে পূর্বাঞ্চলের সাবেক ওয়েলফেয়ার অফিসার গোলাম কিবরিয়াকে আসামি করা হয়েছে। এ ছাড়া দুর্নীতির মাধ্যমে যারা নিয়োগ পেয়েছেন, আসামি করা হয়েছে তাদেরও। তিনি বলেন, চট্টগ্রাম মহানগর দায়রা জজ মো. শাহে নূর ২০১৬ সালের ৩ জানুয়ারি ইউসুফ আলী মৃধার বিরুদ্ধে করা সাত মামলার নথি অধিকতর তদন্তের জন্য দুদকে ফেরত পাঠান। এসব মামলায় মৃধাকে অব্যাহতির সুপারিশ করে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেওয়া হয়েছিল। এরপর চলতি বছর ৪ জানুয়ারি সাতটি মামলার সম্পূরক অভিযোগপত্র দুদক অনুমোদন দেয়। দুদক সূত্রে জানা যায়, এ সাত মামলার মধ্যে কার্পেন্টার, সিনিয়র ডাটা এন্ট্রি কন্ট্রোল অপারেটর ও গুডস সহকারী পদে নিয়োগে অনিয়মের মামলায় অভিযোগপত্র দিয়েছেন তদন্ত কর্মকর্তা আজিজুর রহমান ভূঁইয়া। দুদকের চট্টগ্রাম বিভাগীয় সাবেক এই পরিচালক বর্তমানে রাজশাহীতে পরিচালক হিসেবে দায়িত্বে আছেন।

এ ছাড়া রেকর্ডকিপার, ট্রেড অ্যাপ্রেন্টিস, শরীরচর্চা শিক্ষক ও রেলওয়ের আদালত পরিদর্শক পদে নিয়োগে অনিয়ম, জালিয়াতি এবং দুর্নীতির মামলায় অভিযোগপত্র দিয়েছেন তদন্ত কর্মকর্তা সৈয়দ আহমেদ রাসেল। তিনি চট্টগ্রাম বিভাগীয় উপ-পরিচালক হিসেবে দায়িত্বে আছেন। জানা যায়, ২০১২ সালের ৯ এপ্রিল ঢাকায় বিজিবি হেডকোয়ার্টারে টাকার বস্তাসহ আটক হন তৎকালীন রেলমন্ত্রী সুরঞ্জিত সেনগুপ্তের এপিএস ফারুক। এ ঘটনায় দেশজুড়ে আলোড়ন সৃষ্টি হয়। দুদক তদন্ত করে ঘটনার সঙ্গে রেলওয়ে পূর্বাঞ্চলের তৎকালীন মহাব্যবস্থাপক ইউসুফ আলী মৃধার সম্পৃক্ততা পায়। রেলের ১৩টি ক্যাটাগরিতে ১ হাজার ৬৯ জন কর্মী নিয়োগের প্রক্রিয়া নিয়ে অনিয়মের তথ্য পায় দুদক। ২০১২ সালের সেপ্টেম্বর থেকে ২০১৩ সালের ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত নগরীর কোতোয়ালি থানায় ইউসুফ আলী মৃধাসহ একাধিক ব্যক্তিকে আসামি করে দুদক ১৩টি দুর্নীতির মামলা করে। ২০১২ সাল থেকে দুই বছর পলাতক ছিলেন ইউসুফ আলী মৃধা। পরে ২০১৪ সালের ৩ মার্চ চট্টগ্রাম আদালতে আত্মসমর্পণ করেন তিনি। সেই থেকে কারাগারে আছেন মৃধা। তার বিরুদ্ধে পাঁচটি মামলার অভিযোগপত্র দাখিলের পর বিচার শুরু হয়েছে। বিচার শুরু হওয়া মামলাগুলো হলো— ফুয়েল চেকার, সহকারী কেমিস্ট, টুলকিপার, টিকিট ইস্যুয়ার ও ট্রেন নাম্বার চেকার পদে নিয়োগ দুর্নীতির মামলা।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর