শুক্রবার, ১০ ফেব্রুয়ারি, ২০১৭ ০০:০০ টা
প্রকৃতি

বাংলা বাবুই প্রকৃতির বন্ধু পাখি

মোস্তফা কাজল

বাংলা বাবুই প্রকৃতির বন্ধু পাখি

প্রকৃতির বন্ধু পাখি বাংলা বাবুই হারিয়ে যেতে বসেছে। এক সময় এ পাখির বাসা তাল গাছের শোভা বর্ধন করত। গাছে গাছে ঝুলতে দেখা যেত বাবুই পাখির বাসা। কিন্তু এদের রক্ষার জন্য তেমন কোনো উদ্যোগ না থাকায় এরা এখন বিলুপ্ত হতে চলেছে।

জানা গেছে, জাতীয় চিড়িয়াখানা ও গাজীপুরের সাফারি পার্ক কর্তৃপক্ষ হারিয়ে যেতে থাকা বাংলা বাবুই সংরক্ষণে বেশ কিছু উদ্যোগ গ্রহণ করলেও গ্রাম বাংলায় এ পাখির অস্তিত্ব এখন বিপন্ন। ওয়াকিবহালরা জানান, এক সময় দেশ জুড়ে বড় বড় ঘাস আর নলবনে এ পাখির দেখা মিলত। কিন্তু সেই এক সময়ের জনমানবহীন হাওর-বিল বা পাহাড়ি বনের পরিত্যক্ত জায়গাটুকুতেও এখন ভাগ বসিয়েছেন মানুষ। অপ্রয়োজনে ক্ষতি করছেন প্রাকৃতিকভাবে বেড়ে ওঠা নানা জাতের ঘাস আর লতাগুল্মের। সূত্র মতে, বড় বড় ঘাস আর লম্বা হয়ে বেড়ে ওঠা দীর্ঘ নলবনে এখন আর আগের মতো এ পাখির দেখা মেলে না। এ বিষয়ে পাখি বিশেষজ্ঞ এবং গবেষক ড. আবদুল ওয়াদুদ বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, পাখিটি এক সময় গ্রাম-বাংলার সবুজ প্রকৃতির সঙ্গে মিলেমিশে ছিল। বাংলাদেশে তিন প্রজাতির বাবুইয়ের মধ্যে বাংলা বাবুই পাখি একেবারে হারিয়ে যেতে বসেছে। এ পাখিটি তালগাছ বা অন্যান্য বড় গাছে ঝুলন্ত বাসা বানায়। তিনি আরও বলেন, আমাদের দেশে মানুষ বেশি, পাখির জায়গা কম। এ পাখি এখনো টিকে আছে সিলেটের চা বাগানগুলোর বিভিন্ন টিলা-পাহাড়ের বাঁশ আর ঘাসের মাঝে। আছে চট্টগ্রাম হিলট্রাকের উঁচু ঘাসের বনাঞ্চলে। কর্ণফুলী নদীর তীরবর্তী কোনো কোনো এলাকায়ও এদের দেখা মেলে। এ ছাড়া দেখা মেলে রাজশাহীর পদ্মা-যমুনার বিভিন্ন চর এলাকায়। তার মতে, বাংলাদেশই পাখিটির শেষ আশ্রয়স্থল। কেননা অন্য সব দেশ থেকে হারিয়ে গেছে এ পাখি।

প্রাপ্ত তথ্যানুযায়ী, বাংলা বাবুই পাখি উঁচু নলবন বা কাশবনে বাসা করে। বাতাসে যেন বাসাটি বেশি দোল না খায়— সেজন্য এরা নির্মাণাধীন বাসায় কাদার প্রলেপ লাগিয়ে থাকে। এদের বাসা দেখতে দেশি বাবুইয়ের বাসার মতোই। পাখিটিকে চেনার সহজ উপায় হলো— এদের বুকের ওপরে কালো রঙের বড় একটি বেল্টের মতো দাগ থাকে। এরা আকারে চড়ুইয়ের মতোই। দৈর্ঘ্যে ১৪ সেন্টিমিটার। দেহ হয় বাদামি রঙের। বাদামি পিঠে অনেক কালচে খাড়া লাইন এবং বুকে চওড়া কালো দাগ থাকে। পেট ফিকে-বাদামি, পা হলদে হয়। পাখি বিজ্ঞানীদের মতে, নলঘাস, হোগলা বা কাশের মধ্যে এরা বাসা তৈরি করে। তাই এদের বাঁচিয়ে রাখতে এসব এলাকাগুলোকে সংরক্ষণ করতে হবে।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর