সোমবার, ২০ ফেব্রুয়ারি, ২০১৭ ০০:০০ টা

হোশি কোনিও হত্যা মামলার রায় ২৮ ফেব্রুয়ারি

নিজস্ব প্রতিবেদক, রংপুর

হোশি কোনিও হত্যা মামলার রায় ২৮ ফেব্রুয়ারি

রংপুরে জাপানের নাগরিক হোশি কোনিও হত্যা মামলার রায় ২৮ ফেব্রুয়ারি ঘোষণা করা হবে। গতকাল দুপুরে রংপুরের বিশেষ জজ নরেশ চন্দ্র সরকার এ মামলায় দুই পক্ষের যুক্তিতর্ক শেষে রায়ের এই দিন ধার্য করেন। এ মামলায় হোশি কোনিওকে হত্যা করার অভিযোগ আনা হয়েছে রংপুরের পীরগাছা উপজেলার পশুয়া টাঙ্গাইলপাড়া এলাকার জেএমবির আঞ্চলিক কমান্ডার মাসুদ রানা ওরফে মন্ত্রী (৩৩), একই এলাকার জেএমবি সদস্য ইছাহাক আলী (৩৪), লিটন মিয়া (৩২) ও আবু সাঈদ (২৮), গাইবান্ধার সাঘাটা উপজেলার হলদিয়ার চর এলাকার সাখাওয়াত হোসেন ওরফে রাহুল (৩০) এবং কুড়িগ্রামের রাজারহাট উপজেলার মকর রামাল্লী এলাকার আহসান উল্লাহ আনসারী ওরফে বিপ্লব (৩১)। এদের মধ্যে রংপুরের বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিসংখ্যান বিভাগের তৃতীয় বর্ষের ছাত্র আহসান উল্লাহ আনসারী ওরফে বিপ্লব পলাতক এবং অপর দুই আসামির মধ্যে জেএমবির সদস্য সাদ্দাম হোসেন ওরফে রাহুল গত ৫ জানুয়ারি রাতে ঢাকার মোহাম্মদপুর বেড়িবাঁধ এলাকায় কাউন্টার টেরোরিজম পুলিশের সঙ্গে ‘বন্দুকযুদ্ধে’ এবং নজরুল ইসলাম ওরফে বাইক নজরুল ওরফে হাসান গত বছরের ২ আগস্ট ভোরে রাজশাহীতে পুলিশের সঙ্গে ‘বন্দুকযুদ্ধে’ নিহত হন। রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী রথীশ চন্দ্র ভৌমিক বাবু সোনা জানান, আসামিরা পরিকল্পিতভাবে দেশকে অস্থিতিশীল করার জন্য জাপানি নাগরিক কোনিওকে হত্যা করেছে। আমরা আদালতে তথ্য প্রমাণ উপস্থাপন করতে সক্ষম হয়েছি। আদালত সর্বোচ্চ সাজা প্রদান করবে বলে আশা করছি। আসামি পক্ষের আইনজীবী আবুল হোসেন জানান, রাষ্ট্রপক্ষ আসামিদের বিরুদ্ধে সঠিক তথ্য প্রমাণ উপস্থাপন করতে পারেনি। আসামিরা নির্দোষ। তাদের পরিকল্পিকভাবে এ হত্যাকাণ্ডে যুক্ত করা হয়েছে। আশা করছি আমরা ন্যায় বিচার পাব। আদালতের রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী রথীশ চন্দ্র ভৌমিক বাবু সোনা জানান, ৬০ কার্যদিবসে ৫৭ সাক্ষীর মধ্যে ৫৫ জনের সাক্ষ্য নেওয়ার মধ্য দিয়ে গত ৬ ফেব্রুয়ারি সাক্ষ্য গ্রহণ শেষ হয়। দুই সাক্ষী ভারতে পালিয়ে যাওয়ায় আদালত সাক্ষ্য গ্রহণ শেষে ঘোষণা দেয়। তবে ১৪ ফেব্রুয়ারি আসামি সাখাওয়াতের পক্ষে একজন সাফাই সাক্ষী দেন। ২০১৫ সালের ৩ অক্টোবর সকালে নগরীর মুন্সিপাড়ার ভাড়া বাড়ি থেকে রিকশায় করে কাউনিয়া উপজেলার সারাই ইউনিয়নের আলুটারি গ্রামে ঘাষের খামারে যাওয়ার পথে দুর্বৃত্তের গুলিতে নিহত হন ৬৬ বছর বয়সী জাপানি নাগরিক হোশি কোনিও। ওই দিনই কাউনিয়া থানার তৎকালীন ওসি রেজাউল করিম বাদী হয়ে অজ্ঞাতনামা ব্যক্তির নামে হত্যা মামলা দায়ের করেন। মামলার তদন্ত কর্মকর্তা গত বছরের ৩ জুলাই জেএমবির আট সদস্যের বিরুদ্ধে রংপুরের জ্যেষ্ঠ বিচারিক হাকিমের আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন। পরে মামলাটি বিশেষ জজ আদালতে স্থানান্তর করা হয়। মামলার অভিযোগপত্রে বলা হয়, হোশি কোনিওকে লক্ষ্য করে পর পর তিনটি গুলি করেন জেএমবির আঞ্চলিক কমান্ডার মাসুদ রানা ওরফে মন্ত্রী। মোটরসাইকেলে তারা তিনজন ছিলেন। গুলি করার পর মোটরসাইকেলে করে তারা পালিয়ে যান। ঘটনাস্থলেই মারা যান কোনিও। মাসুদ রানা ওরফে মন্ত্রী, ইছাহাক আলী, লিটন মিয়া, আবু সাঈদ, সাখাওয়াত হোসেন ওরফে রাহুল হোশি কোনিও হত্যা মামলার আসামি ছাড়াও কাউনিয়া উপজেলায় মাজারের খাদেম রহমত আলী হত্যা এবং বাহাই নেতা রুহুল আমীনকে গুলি করে হত্যা চেষ্টা মামলার অভিযোগপত্রভুক্ত আসামি। আর আহসান উল্লাহ আনসারী ওরফে বিপ্লব বাহাই নেতা হত্যা চেষ্টা মামলার অভিযোগপত্রভুক্ত আসামি।

সর্বশেষ খবর