শনিবার, ২৫ ফেব্রুয়ারি, ২০১৭ ০০:০০ টা

ইন্টারকন্টিনেন্টাল সংস্কার হয়নি ২৯ মাসেও

সময় বেড়েছে ৫ দফা, ব্যয় বেড়েছে ২৯০ কোটি টাকা

নিজামুল হক বিপুল

ইন্টারকন্টিনেন্টাল সংস্কার হয়নি ২৯ মাসেও

২৯ মাসেও সংস্কার কাজ শেষ হয়নি হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালের। কবে শেষ হবে সেটিও নিশ্চিত করে কেউ বলতে পারছেন না। নির্ধারিত সময়ে কাজ শেষ না করে বরং পাঁচ দফায় কাজের সময় বাড়ানো হয়েছে। একই সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বেড়েছে ব্যয়ও। ফলে ৪৩০ কোটি টাকার সংস্কার প্রকল্প এখন দাঁড়িয়েছে ৭২০ কোটি টাকায়। আর নির্ধারিত সময়ে হোটেলটির সংস্কার কাজ শেষ না হওয়ায় হোটেলের শ্রমিক কর্মচারীদের মধ্যে অসন্তোষ বিরাজ করছে। হোটেল সংস্কারের জন্য তাদের যে অগ্রিম ছুটি দেওয়া হয়েছিল সেই ছুটির মেয়াদও শেষ হচ্ছে চলতি বছর। হোটেল শেরাটন দায়িত্ব ছেড়ে দেওয়ার পর সরকারি এই হোটেলটির নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সার্ভিসেস লি. (বিএসএল) ‘রূপসী বাংলা’ নামে কিছুদিন পরিচালনা করে। ২০১২ সালের ১৯ ফেব্রুয়ারি হোটেলটি পরিচালনার জন্য সরকারের চুক্তি হয় আন্তর্জাতিক চেইন হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালের সঙ্গে। ৩০ বছর মেয়াদি এই চুক্তির পর ইন্টারকন্টিনেন্টাল কর্তৃপক্ষ সংস্কারের লক্ষ্যে ২০১৪ সালের ১ সেপ্টেম্বর হোটেলটি পুরোপুরি বন্ধ করে দেয়।

সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, ২০১৪ সালে সংস্কার কাজ শুরুর সময় ইন্টারকন্টিনেন্টাল ও ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান চারুতা জানিয়েছিল ১৬ মাসের মধ্যে হোটেলটির সংস্কার হবে। কিন্তু নির্ধারিত সময় পার হয়ে গেলেও চুক্তি অনুযায়ী পাঁচতারকা এই হোটেলটির সংস্কার কাজ যেন শেষই হচ্ছে না। গত ২৯ মাসেও কাজ শেষ হয়নি। এমনকি এখন পর্যন্ত রুমের ৫০ শতাংশ কাজও শেষ হয়নি। অথচ এই সময়ে পাঁচ দফায় কাজের মেয়াদ বাড়ানো হয়েছে। একই সঙ্গে বেড়েছে খরচও। প্রথমে এই সংস্কার প্রকল্পে ব্যয় ধরা হয়েছিল ৪৩ মিলিয়ন বা ৪৩০ কোটি টাকা। কিন্তু কয়েক দফায় ব্যয় বাড়িয়ে এখন এটি দাঁড়িয়েছে ৭২ মিলিয়ন বা ৭২০ কোটি টাকায়। আর এই প্রকল্পের পুরো টাকাই ঋণ হিসেবে অগ্রণী ব্যাংক শেরাটন শাখা থেকে নেওয়া হয়েছে। বিএসএল কর্তৃপক্ষ বলছে, চলতি বছরের জুন-জুলাইয়ের মধ্যে হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালের সংস্কার কাজ শেষ হবে। কিন্তু সংশ্লিষ্ট একাধিক সূত্র জানায়, আগামী জুন-জুলাই মাসেও হোটেলটির সংস্কার কাজ শেষ হওয়ার কোনো সম্ভাবনা নেই। সূত্র জানায়, ইন্টারকন্টিনেন্টাল মনোনীত দুবাইভিত্তিক পরামর্শক প্রতিষ্ঠান আইএম প্রকল্প রেখে বাংলাদেশ ছেড়ে চলে গেছে গত বছরের আগস্ট মাসে। বেসামরিক বিমান চলাচল ও পর্যটন মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, ১৬ মাসের কথা বলে ২৯ মাসেও কাজ শেষ না হওয়ায় বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রী রাশেদ খান মেনন ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। আর হোটেলের কাজ নির্ধারিত সময়ে শেষ না হওয়ায় এবং দীর্ঘ সময় ধরে বন্ধ থাকায় সরকারকে লোকসান গুনতে হচ্ছে। যত সময় যাচ্ছে এই লোকসানের পরিমাণ ততই বাড়ছে। হোটেলের নতুন নকশা অনুযায়ী সংস্কারের পর পাঁচতারকা এই হোটেলটির রুম সংখ্যা দাঁড়াবে ২২৬টিতে। মূল হোটেলটিতে রুম সংখ্যা ছিল মোট ২৭২টি।

সর্বশেষ খবর