শিরোনাম
মঙ্গলবার, ২৮ ফেব্রুয়ারি, ২০১৭ ০০:০০ টা

বসুন্ধরা এলপি গ্যাস জোগান দেবে চাহিদার ৫০ ভাগ

নিজস্ব প্রতিবেদক

ইন্টারন্যাশনাল কনভেনশন সিটি বসুন্ধরা—আইসিসিবিতে দুই দিনব্যাপী আয়োজিত এলপিজি সামিট গতকাল শেষ হয়েছে। সামিটে সিলিন্ডারের সর্বোচ্চ নিরাপত্তা নিশ্চিত রেখে গ্যাসের বাজারের ৫০ ভাগ চাহিদা পূরণের কথা জানিয়েছে বসুন্ধরা এলপি গ্যাস লিমিটেড। দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে অংশ নেওয়া উদ্যোক্তাদের মাঝে এ সামিট অভূতপূর্ব সাড়া জাগিয়েছে। স্টল, প্যাভিলিয়নে জ্বালানির বিকল্প হিসেবে গ্যাসসম্পদ সম্পর্কে জানতে উদ্যোক্তারা ভিড় জমিয়েছেন। এতে আয়োজকরা যেমন খুশি হয়েছেন তেমনি উৎসাহিত হয়েছেন অংশগ্রহণকারীরাও। আয়োজকরা বলেন, ‘আমাদের ধারণার চেয়ে অনেক বেশি সাড়া পেয়েছি।’ সারা দেশ থেকেই আসেন দর্শনার্থী। সমাপনী দিনে সামিটে অংশ নেওয়া বসুন্ধরা এলপি গ্যাসের প্যাভিলিয়নে গিয়ে কথা হয় কর্মকর্তাদের সঙ্গে। এ সময় বসুন্ধরা এলপি গ্যাস লিমিটেডের সহকারী মহাব্যবস্থাপক (বিজনেস, অপারেশন ও প্ল্যানিং) প্রকৌশলী মো. জাকারিয়া জালাল বলেন, এই সামিটে সারা দেশ থেকে উদ্যোক্তা ব্যবসায়ীরা এসেছেন। আমরা তিন থেকে পাঁচ বছরের মধ্যে বাংলাদেশের বাজারে গ্যাসের চাহিদার ৫০ শতাংশ জোগান দেওয়ার লক্ষ্যমাত্রা নিয়ে এগোচ্ছি। গ্রাহকদের নিরাপত্তার বিষয়টিও মাথায় রাখা হচ্ছে। এজন্য সর্বোচ্চ নিরাপত্তা নিশ্চিত করে তৈরি করা হচ্ছে বসুন্ধরা এলপি গ্যাসের সিলিন্ডার। শুরু থেকেই এ সিলিন্ডারের নিরাপত্তাব্যবস্থা দেশের যে কোনো এলপি গ্যাস কোম্পানি থেকে অনেক ভালো।’ তিনি উল্লেখ করেন, দেশে যতগুলো এলপি গ্যাসের কোম্পানি রয়েছে তার মধ্যে বসুন্ধরা এলপি গ্যাস লিমিটেডই শুধু সিলিন্ডার উৎপাদন করে। বাকি কোম্পানিগুলো বিদেশ থেকে সিলিন্ডার আমদানি করে। তিনি জানান, এখন থেকে বসুন্ধরা আবাসিক এলাকার বাসিন্দারা বসুন্ধরা এলপি গ্যাসের অর্ডার পয়েন্টে অর্ডার করে পাঁচ মিনিটেই পেয়ে যাবেন সিলিন্ডার। তিনি বলেন, ‘এজন্য আমাদের একটি ফোন নম্বরে কল করে নিজের বাসার লোকেশন এবং কয়টি সিলিন্ডার লাগবে সেই তথ্য জানাতে হবে। অর্ডারের পাঁচ মিনিটের মধ্যেই ডেলিভারি পেয়ে যাবেন গ্রাহক।’ সমাপনী দিনে আয়োজিত সেমিনারে বক্তারা উল্লেখ করেন, বাসাবাড়িতে এলপিজি (লিকুইফাইড পেট্রোলিয়াম গ্যাস) বা এলপি গ্যাস জনপ্রিয় করতে এর নিরাপত্তা সম্পর্কে সচেতনতা বাড়াতে হবে। সংশ্লিষ্টরা বলেন, ‘আমাদের কাছে গ্রাহকরা প্রথমেই জানতে চান এলপিজি সিলিন্ডার নিরাপদ কিনা। আমরা যদি প্রাকৃতিক গ্যাসের চাহিদা কমিয়ে এলপিজিকে জনপ্রিয় করতে চাই তাহলে সবার আগে নিরাপত্তার বিষয়ে সচেতনতা বৃদ্ধি করতে হবে। আমাদের গ্রাহকদের বোঝাতে হবে এলপিজি সিলিন্ডার সঠিকভাবে ব্যবহার করলে কোনো ধরনের ঝুঁকি নেই।’ বসুন্ধরা এলপি গ্যাস লিমিটেডের মার্কেটিং বিভাগের প্রধান এম এম জসীম উদ্দিন বলেন, ‘বাংলাদেশে বর্তমানে প্রতি মাসে সাড়ে ৩ লাখ এলপিজি সিলিন্ডারের চাহিদা রয়েছে। কিন্তু আমরা দেশে মাত্র ১ লাখ সিলিন্ডার উৎপাদন করতে পারছি, বাকি সিলিন্ডার আমদানি করতে হচ্ছে। আমদানি করা এসব সিলিন্ডারের মান নির্ণয়ে আমাদের দেশে কোনো পরীক্ষাগার নেই। এজন্য সরকারি ও বেসরকারি পর্যায়ে পরীক্ষাগার তৈরি করতে হবে। বাংলাদেশে সঠিকভাবে এলপি গ্যাসের ব্যবসা সম্প্রসারণ করতে হলে সরকারকে এর মূল্য নির্ধারণ করতে হবে। কিন্তু এখনই কোনো ভ্যাট বসানো যাবে না। বেশি দামে সিলিন্ডার কিনলে ক্রেতারা এলপিজি সিলিন্ডার ব্যবহারে নিরুৎসাহিত হবেন।’ সেমিনারে উপস্থিত ছিলেন ওমেরা পেট্রোলিয়াম লিমিটেডের এজিএম তানজিন চৌধুরী, টোটাল গ্যাস বাংলাদেশের জেনারেল ম্যানেজার মুজিবর রহমান, লাফস গ্যাসের সিইও মো. সাইদুল ইসলাম প্রমুখ। এ সামিটে কোম্পানিগুলোর প্যাভিলিয়ন ও স্টলে দেশের বিভিন্ন জায়গায় স্থাপিত এলপি গ্যাসের প্লান্ট প্রদর্শন করা হয়। সহজে একজন উদ্যোক্তা কীভাবে প্লান্ট নির্মাণ করবেন তার প্রকৌশল সহায়তা দিতে পরামর্শ দেন স্টল কর্মীরা। গ্রাহকরা আসেন সিলিন্ডারের নিরাপত্তা সম্পর্কে জানতে। শিল্প কারখানার বয়লারে ব্যবহূত সিলিন্ডার সম্পর্কেও উদ্যোক্তাদের অবহিত করা হয়। এসব বিষয়ে আয়োজক প্রতিষ্ঠান গ্লোবাল ইভেন্ট ম্যানেজমেন্টের প্রধান মার্কেটিং কর্মকর্তা মাজহারুল ইসলাম বলেন, ‘সামিটে আমরা ধারণার চেয়েও বেশি সাড়া পেয়েছি। ভবিষ্যতে এ ধরনের আরও সামিট করার ইচ্ছা আছে। চতুর্থ এশিয়ান এলপিজি সামিটে বসুন্ধরাসহ দেশি-বিদেশি ৫৬টি প্রতিষ্ঠান অংশ নিয়েছে, যারা মূলত এলপি গ্যাস সিলিন্ডার বাজারজাত, সিলিন্ডার ও অন্যান্য খুচরা যন্ত্রাংশের উৎপাদক হিসেবে কাজ করছে।’

সর্বশেষ খবর