বাংলাদেশে আসার উত্তেজনা ও এ দেশের আতিথেয়তায় মুগ্ধ হয়ে একটি নতুন রাগ সৃষ্টি করেছিলেন সংগীতাচার্য্য জয়ন্ত বোস। সেই রাগ দিয়েই শাস্ত্রীয় সংগীতের পরিবেশনা শুরু করলেন। নাতিদীর্ঘ, মধ্যলয়ের এই রাগের পরিবেশনার মধ্য দিয়ে শাস্ত্রীয় আয়োজনের শুরুতেই এ দেশের সংগীতানুরাগীদের বিমোহিত করলেন উপমহাদেশের প্রখ্যাত এই সংগীতসাধক। সংগীতের সমঝদাররা বিপুল করতালিতে অভিনন্দন জানান শাস্ত্রীয় সংগীতের এই রত্নকে। দীর্ঘসময় একাধারে উচ্চাঙ্গ সংগীত, তবলা এবং হারমোনিয়ামের অপূর্ব সংমিশ্রণে দখল করলেন উপস্থিত শ্রোতাদের হৃদয়। শিল্পীর সঙ্গে তবলায় সঙ্গত করেন ভারতের পণ্ডিত বিপ্লব ভট্টাচার্য ও সুব্রত দাস। বীণকার মিউজিক্যাল সোসাইটি অব বাংলাদেশের আয়োজনে ও শিল্পকলা একাডেমি এবং উদীচী শিল্পীগোষ্ঠীর সহযোগিতায় গতকাল সন্ধ্যায় একাডেমির জাতীয় নাট্যশালার মূল মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত হয় শাস্ত্রীয় সংগীতের এই আসর। এর আগে সংক্ষিপ্ত বক্তৃতায় জয়ন্ত বোস বলেন, বাংলাদেশের আতিথেয়তায় আমি মুগ্ধ। বাংলাদেশে আসার উত্তেজনায় আমি একটি নতুন রাগও সৃষ্টি করেছি। যার নাম দিয়েছি ‘সোহাগ রঞ্জনী’। সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব কামাল লোহানীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে আরও বক্তৃতা করেন রবীন্দ্রনাথ রায়, উদীচীর সভাপতি ড. সফিউদ্দিন আহমদ, নাট্যজন ড. ইনামুল হক, গণসংগীত শিল্পী মাহমুদ সেলিম ও নাট্যজন শংকর শাওজাল।
‘পাটের ক্যানভাসে বাংলাদেশ’ : পাটের লড়াইর আয়োজনে বিশ্ব সাহিত্য কেন্দ্রের চিত্রশালায় শুরু হলো ‘পাটের ক্যানভাসে বাংলাদেশ’ শীর্ষক চিত্রকর্ম প্রদর্শনী। গতকাল বিকেলে তিন দিনব্যাপী এ প্রদর্শনীর উদ্বোধন করেন ভাস্কর হামিদুজ্জামান খান। উদ্বোধনীতে আরও উপস্থিত ছিলেন অধ্যাপক আবদুল্লাহ আবু সাইয়ীদ। দেশের তরুণ ১৮ শিল্পীর মোট ৩৫টি চিত্রকর্ম দিয়ে সাজানো হয়েছে এই প্রদর্শনী। এ ছাড়া স্কুলপড়ুয়া ৩৬ শিশুশিল্পীর চিত্রকর্মও এতে স্থান পেয়েছে। সরকার ঘোষিত জাতীয় পাট দিবসকে সামনে রেখে আয়োজিত এ চিত্রকর্ম প্রদর্শনীতে চটের ওপর আঁকা চিত্রকর্মগুলোতে বাংলাদেশের প্রকৃতি, ইতিহাস, ঐতিহ্যসহ নানা বিষয় উঠে এসেছে। প্রতিদিন বিকাল ৩টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত প্রদর্শনীটি সবার জন্য উন্মুক্ত থাকবে। প্রদর্শনীটি চলবে ৫ মার্চ পর্যন্ত। উল্লেখ্য, ‘পাটের ক্যানভাসে বাংলাদেশ’ শীর্ষক এ প্রদর্শনীটি চিত্রশিল্পী এসএম সুলতানকে উৎসর্গ করা হয়েছে।
৪০ জন শিল্পীর চিত্রকর্ম নিয়ে আজ শুরু হচ্ছে ‘বঙ্গবন্ধু বাংলাদেশ’ শীর্ষক চিত্র প্রদর্শনী : শিল্পকলা একাডেমি ও ‘সমতট সোনারগাঁ’ এর যৌথ আয়োজনে আজ শিল্পকলা একাডেমিতে শুরু হচ্ছে ‘বঙ্গবন্ধু বাংলাদেশ’ শীর্ষক ১৪ দিনব্যাপী চিত্র প্রদর্শনী। বাংলাদেশের প্রতিথযশা ৪০ শিল্পীর ১০০টি শিল্পকর্ম থাকবে এই প্রদর্শনীতে। প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে সন্ধ্যায় শিল্পকলা একাডেমির জাতীয় চিত্রশালায় এই প্রদর্শনীর উদ্বোধন করবেন সংস্কৃতিমন্ত্রী আসাদুজ্জামান নূর। একাডেমির মহাপরিচালক লিয়াকত আলী লাকীর সভাপতিত্বে উদ্বোধনী আয়োজনে অতিথি থাকবেন সংসদ সদস্য মঈনউদ্দিন খান বাদল, বরেণ্য শিল্পী হাশেম খান, অধ্যাপক মুনতাসির মামুন এবং বীমা ব্যক্তিত্ব নাসির এ চৌধুরী। গতকাল বিকালে একাডেমির জাতীয় চিত্রশালা ভবনের সেমিনার হলে অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান এই আয়োজনের সঙ্গে সংশ্লিষ্টরা। সংবাদ সম্মেলনে বক্তৃতা করেন শিল্পকলা একাডেমির মহাপরিচালক লিয়াকত আলী লাকী, শিল্পী হাশেম খান, আবু তাহের, একাডেমির চারুকলা বিভাগের পরিচালক শিল্পী মো. মনিরুজ্জামান ও সরগম পত্রিকার সম্পাদক কাজী রওনাক হোসেন।প্রদর্শনীতে অংশগ্রহণকারী শিল্পীরা হলেন : কাইয়ুম চৌধুরী, আবু তাহের, সমরজিৎ রায় চৌধুরী, হাশেম খান, ধীরাজ চৌধুরী, সৈয়দ জাহাঙ্গীর, মনিরুল ইসলাম, শাহাবুদ্দিন আহম্মেদ, অলকেশ ঘোষ, বীরেন সোম, রেজাউল করিম, আব্দুর শাকুর শাহ, আবদুল মান্নান, জামাল আহমেদ, রণজিৎ দাস, মুহাম্মদ ইউনুস, আহমেদ শামসুদ্দোহা, শেখ আফজাল, মো. মনিরুজ্জামান, নিসার হোসেন, মুহাম্মদ ইকবাল, রাব্বানী শামীম, রাফী হক, আনিসুজ্জামান, ফরিদা জামান, রোকেয়া সুলতানা, শুভ্রানা শামীম, গুলশান হোসেন, বিপাশা হায়াত, ছামিনা নাফিজ, সর্বরী রায় চৌধুরী, আলপ্তগীন তুষার, আব্দুস সাত্তার তৌফিক, মোহাম্মদ কামালুদ্দিন, দুলাল চন্দ গাইন, শহীদ কাজী, সুমন ওয়াহিদ, প্রদ্যোত কুমার দাস, আবদুল মোমেন মিল্টন ও মাহমুদুল হাসান সোহাগ।
প্রতিদিন বেলা ১১টা থেকে রাত ৮টা এবং শুক্রবার দুপুর ৩টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত দর্শকদের জন্য উন্মুক্ত থাকবে এই প্রদর্শনী। ১৭ মার্চ শেষ হবে ১৪ দিনের এই প্রদর্শনী।