জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে ফের অবমাননা করেছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাবি)। বিশ্ববিদ্যালয়টির ভেরিফাইড ফেসবুক পেজে ৫০তম সমাবর্তন উপলক্ষে শুভেচ্ছা জানাতে গিয়ে জাতির জনকের নামের আগে নোবেল বিজয়ী ড. মুহাম্মদ ইউনূস, সত্যেন বসুসহ অন্যান্য নাম জুড়ে দিলে অবমাননা ও বিতর্ক সামনে আসে।
এর আগেও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানটির গ্রন্থাগারে যুদ্ধাপরাধের দায়ে অভিযুক্ত গোলাম আযমের বই ও বঙ্গবন্ধুর ওপর লিখিত বই পাশাপাশি রাখায় বিতর্কের সৃষ্টি হয়েছিল। এ ছাড়া বিশ্ববিদ্যালয়টির ৯৫তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর স্মরণিকায় সাবেক সামরিক শাসক জিয়াকে ‘বাংলাদেশের প্রথম রাষ্ট্রপতি’ বলা হয়েছিল, যিনি বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ডের পর রাজনৈতিক পট পরিবর্তনে রাষ্ট্রক্ষমতায় অধিষ্ঠিত হয়েছিলেন। তখন ইতিহাস বিকৃতির অভিযোগ এনে ছাত্রলীগ উপাচার্য আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিকের পদত্যাগ দাবিসহ বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করেছিল।
গতকাল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ৫০তম সমাবর্তন ছিল। এ অনুষ্ঠানের শুভেচ্ছা জানাতে গিয়ে ‘ইউনিভার্সিটি অব ঢাকা’ ফেসবুক পেজে যে শুভেচ্ছা বার্তা দেওয়া হয়েছিল, তা নিয়ে ব্যাপক সমালোচনা ?ওঠে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে। অনেকে উপাচার্য অধ্যাপক আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিকের তীব্র সমালোচনাও করেছেন। সমালোচনা চলতে থাকায় তাতে কয়েকবার পরিবর্তন আনা হয়। সরানো হয় মুহাম্মদ ইউনূসের নাম। ‘আমরা গর্বিত হয়েছি স্যার জগদীশ চন্দ্র বসু, রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর, অমর্ত্য সেনের মতো বুদ্ধিজীবীদের সম্মানসূচক ডক্টরেটে ভূষিত করতে পেরে। গর্বিত হয়েছি ড. মুহাম্মদ ইউনূস, সত্যেন বসু, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের মতো ছাত্রদের ধারণ করতে পেরে।’ এই বার্তা দেখে অনেকেই সমালোচনা করেন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে। আবদুর রহমান শ্রাবণ নামে একজন লেখেন, ‘আর কত দীনতা, মূর্খতা দেখব আপনাদের?’ আলি আশরাফ চাই রাসেল নামে একজন কমেন্ট করেন, ‘দেশের সর্বোচ্চ বিদ্যাপীঠের এহেন অবস্থা দেখে খুবই দুঃখ পাই।’ কেউ কমেন্ট করেছেন, ‘পেজটা জামাতিরা চালায় মনে হচ্ছে!!! এখুনি খুঁজে বের করা উচিত।’ ব্যাপক সমালোচনার পর ওই শুভেচ্ছা বার্তাটি কয়েক দফা পরিবর্তন করা হয়। এ নিয়ে একজন লিখেছেন, ‘তিনবার এডিট এবং ড. ইউনূস হাওয়া?’বর্তমানে শুভেচ্ছা বার্তার ওই অংশটি রয়েছে এভাবে— ‘আমরা গর্বিত হয়েছি স্যার জগদীশ চন্দ্র বসু, রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর, অমর্ত্য সেনের মতো বুদ্ধিজীবীদের সম্মানসূচক ডক্টরেটে ভূষিত করতে পেরে। গর্বিত হয়েছি জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান, শামসুর রাহমানের মতো ছাত্র; সত্যেন বসুদের মতো শিক্ষকদের ধারণ করতে পেরে।’ এর আগে বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় লাইব্রেরির শেলফে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জীবনীভিত্তিক সম্পাদিত গ্রন্থ ও যুদ্ধাপরাধী গোলাম আযমের লেখা বই পাশাপাশি রাখলে বিতর্কের সৃষ্টি হয়। এর মাধ্যমে বঙ্গবন্ধুকে অবমাননা করা হয়েছে বলে অনেকেই মন্তব্য করেছিলেন। বাংলাদেশ প্রতিদিন এ নিয়ে গত ২৮ আগস্ট প্রতিবেদন প্রকাশ করেছিল।