জঙ্গিবাদ ও সন্ত্রাসসহ আন্তদেশীয় অপরাধ দমনে দক্ষিণ এশিয়া ও পার্শ্ববর্তী ১৪টি দেশের পুলিশপ্রধানদের নিয়ে জোট গঠন হচ্ছে। এ লক্ষ্যে ইন্টারপোল ও বাংলাদেশ পুলিশের যৌথ উদ্যোগে ১২ থেকে ১৪ মার্চ ঢাকায় প্রথমবারের মতো ‘চিফ অব পুলিশ কনফারেন্স’ শুরু হচ্ছে। এতে ৫৮ জন বিদেশি অতিথি যোগ দেবেন বলে জানিয়েছেন পুলিশ মহাপরিদর্শক (আইজিপি) এ কে এম শহীদুল হক। গতকাল দুপুরে পুলিশ সদর দফতরে এ বিষয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন। এ সময় পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

আইজিপি বলেন, জঙ্গিবাদ ও সন্ত্রাসবাদ একটি বৈশ্বিক সমস্যা। জঙ্গিবাদ ও সন্ত্রাসবাদ দমন পুলিশ ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর জন্য চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে। দক্ষিণ এশীয় অঞ্চলের দেশের মানুষের সংস্কৃতি, চিন্তা-চেতনা, জীবনধারা ও অর্থনৈতিক কাঠামো প্রায় একই। এ অঞ্চলে অপরাধের ধরন ও বৈশিষ্ট্যে অনেক মিল। এসব অপরাধী দমনে প্রয়োজন আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর মধ্যে আঞ্চলিক এবং আন্তর্জাতিক পর্যায়ে সহযোগিতা ও সমন্বয়।

পুলিশপ্রধান বলেন, বাংলাদেশ এবং সম্মেলনে অংশগ্রহণকারী বিভিন্ন দেশের প্রতিনিধিরা বিষয়ভিত্তিক বক্তব্য উপস্থাপন করবেন। জঙ্গিবাদ দমন, মানব পাচার, অর্থনৈতিক অপরাধ ও সন্ত্রাসী অর্থায়ন, মাদক পাচার রোধ, অবৈধ অস্ত্র চোরাচালান প্রতিরোধ, গোয়েন্দা তথ্য আদান-প্রদান, সাইবার অপরাধ নিয়ন্ত্রণ ইত্যাদি বিষয় আলোচনায় স্থান পাবে। সম্মেলন শেষে জঙ্গিবাদ ও সন্ত্রাস দমনসহ আন্তঃদেশীয় অপরাধ প্রতিরোধের কর্মপন্থা নির্ধারণ করে যৌথ ঘোষণা স্বাক্ষরিত হবে।

আইজিপি বলেন, ‘এ দেশে বাইরের কোনো জঙ্গি সংগঠন নেই। যা আছে তা এ দেশেরই সৃষ্টি। অনেক জঙ্গিকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তাদের তথ্যে নেপথ্যের অনেক কিছু বেরিয়ে এসেছে। জঙ্গিদের নেটওয়ার্ক আমরা জানতে পেরেছি। এদের দমনে পুলিশ কাজ করছে। জঙ্গিরা বিভিন্ন সময় ব্লগারসহ বেশ কয়েকজনকে হত্যা এবং হলি আর্টিজান, শোলাকিয়াসহ কয়েকটি স্থানে হামলা করেছে। এসব ঘটনার তদন্ত করতে গিয়ে নানা তথ্য পাওয়া গেছে। ছয়-সাতটি জঙ্গি আস্তানায় সফল অপারেশন করা হয়েছে। পুলিশের এ সাফল্য দেশে-বিদেশে ব্যাপক প্রশংসা অর্জন করে।’ আইজিপি এ কে এম শহীদুল হক সম্মেলন চলাকালে ইন্টারপোল মহাসচিব এবং বিভিন্ন দেশের পুলিশপ্রধানদের সঙ্গে পৃথক বৈঠকে বসবেন। এ সময় আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতিসহ পারস্পরিক স্বার্থসংশ্লিষ্ট বিষয়ে আলোচনা হবে। সাংবাদিকদের এক প্রশ্নে আইজিপি বলেন, পাকিস্তানকে এ সম্মেলনে অংশগ্রহণ করার জন্য চিঠি পাঠানো হয়েছে। কিন্তু তারা সাড়া দেয়নি। এ ছাড়া অন্য দেশগুলো সম্মেলনে যোগদান করতে সম্মতি প্রকাশ করেছে।