শনিবার, ১১ মার্চ, ২০১৭ ০০:০০ টা

মামলা নেই সীমার, সাক্কুর বিরুদ্ধে দুর্নীতির

কুমিল্লায় দুই প্রার্থীর হলফনামা

গোলাম রাব্বানী

মামলা নেই সীমার, সাক্কুর বিরুদ্ধে দুর্নীতির

সীমা - সাক্কু

কুমিল্লা সিটি করপোরেশন নির্বাচনে বিএনপি সমর্থিত মেয়র প্রার্থী মনিরুল হক সাক্কুর বিরুদ্ধে রয়েছে দুর্নীতি ও আয়করের মামলা। আওয়ামী লীগের মেয়র প্রার্থী আঞ্জুম সুলতানা সীমা ও আরেক মেয়র প্রার্থীর কোনো মামলা নেই। সম্পদ বেশি সাক্কুর আর শিক্ষাগত যোগ্যতায় এগিয়ে রয়েছেন সীমা। নির্বাচন কমিশনে জমা দেওয়া হলফনামা বিশ্লেষণ করে এসব তথ্য পাওয়া গেছে। এ নির্বাচনে মেয়র পদে পাঁচজন মনোনয়নপত্র দাখিল করলেও বর্তমানে তিনজন প্রার্থী রয়েছেন। বাকি দুজনের মনোনয়নপত্র বাতিল করেছেন রিটার্নিং অফিসার। আগামী ১৪ মার্চ প্রার্থিতা প্রত্যাহারের শেষ দিন। ৩০ মার্চ এ সিটিতে ভোট।

হলফনামায় দেওয়া তথ্যানুযায়ী, বিএনপির মেয়র প্রার্থী মনিরুল হক সাক্কু এসএসসি পাস। বিগত নির্বাচনে মেয়র হওয়ার আগে ব্যবসা করতেন। তার বিরুদ্ধে বর্তমানে মামলা রয়েছে দুটি। এর মধ্যে একটি দুর্নীতির আর একটি আয়কর সংক্রান্ত। ঢাকার রমনা থানায় দায়েরকৃত (মামলা নম্বর-১১)। ধারা-২৬(২) এবং ২৭ (১) দুর্নীতি দমন কমিশন আইন ২০০৪। আরেক মামলার ধারা-১৬৫ এবং আয়কর অধ্যাদেশ ১৯৮৪। কমপ্লেইন পিটিশন নম্বর-০৪/২০০৮। এ ছাড়া তার বিরুদ্ধে আগেও ১০টি মামলা ছিল। এমনকি তিনি হলফনামায় উল্লেখ করেছেন তার বিরুদ্ধে আরও মামলা থাকতে পারে, তবে তার জানা নেই। সম্পদেও এগিয়ে রয়েছেন এই মেয়র প্রার্থী। সাক্কুর বাড়ি ভাড়া থেকে আয় হয় ৭২ হাজার টাকা। অন্যান্য খাত থেকে তার আয়ের মধ্যে রয়েছে ব্যাংক সুদ ২ লাখ ১২ হাজার টাকা ও সম্মানী ভাতা ১১ লাখ ৩৪ হাজার টাকা। অস্থাবর সম্পত্তির মধ্যে নগদ রয়েছে ৮৭ লাখ ৭৭ হাজার টাকা। তার স্ত্রীর নামে নগদ আছে ৫৫ লাখ ৮৬ হাজার ৫২৩ টাকা। তার ব্যাংকে জমা ৮৭ হাজার ১০১ টাকা। সঞ্চয়পত্র বাবদ সাক্কুর রয়েছে ২ লাখ টাকা। তার স্ত্রীর নামে এ খাতে আছে ২৯ লাখ ৮৬ হাজার ৯৮০ টাকা। তার গাড়ি আছে দুটি। দুজনের সোনা আছে ১০ তোলা করে। সাক্কুর স্ত্রী ব্যবসায় পুঁজি খাটিয়েছেন ২ কোটি ১২ লাখ ৩৪ হাজার টাকা। স্থাবর সম্পদের মধ্যে সাক্কুর অকৃষি জমি আছে দশমিক ০৯২৩ একর। ঢাকায় তার নামে ৫টি প্লট রয়েছে। আর স্ত্রীর নামে অকৃষি জমি রয়েছে দশমিক ০৫ একর ও প্লট। এ ছাড়াও স্ত্রীর নামে রয়েছে আবাসিক ও বাণিজ্যিক সম্পদের মধ্যে কুমিল্লায় নিসা টাওয়ারে তিনটি বাণিজ্যিক  দোকান, দ্বিতীয় তলায় ১২টি দোকান, তৃতীয় ও চতুর্থ তলার ৭ হাজার ২৫৬ বর্গফুটের দুটি স্পেস, ফাতেমা জাহানারা টাওয়ারে ষষ্ঠ ও সপ্তম তলায় দুটি ফ্ল্যাট এবং ৩ হাজার ২২৯ বর্গফুটের স্পেস। একই সঙ্গে সাক্কুর নামে ৪ হাজার ৬৯০ বর্গফুটের দোকান ও ফ্ল্যাট (নির্মাণ অসম্পূর্ণ) ও দোকান পজেশন (মূল্য-৭,০০,০০০ টাকা)। হলফনামায় দেওয়া তথ্যানুযায়ী, আওয়ামী লীগ মনোনীত মেয়র প্রার্থী আঞ্জুম সুলতানা সীমার শিক্ষাগত যোগ্যতা বিএবিএড। পেশায় তিনি শিক্ষক। তার বিরুদ্ধে কোনো মামলা নেই। সীমার বাড়ি ও দোকান ভাড়া থেকে বার্ষিক আয় ৫৪ হাজার টাকা। তিনি শিক্ষকতা পেশা থেকে আয় করেন আড়াই লাখ টাকা এবং অন্যান্য খাত থেকে ২ লাখ ৪৫ হাজার ২৫০ টাকা। অস্থাবর সম্পদের মধ্যে রয়েছে নগদ ৫০ হাজার টাকা, ব্যাংকে জমা ৪৬ লাখ ৮ হাজার ৪৪ টাকা, সঞ্চয়পত্র বাবদ ২০ লাখ টাকা ও সোনা ৩০ তোলা। এ ছাড়া তার স্বামীর নামে ৩০ তোলা সোনা ও নগদ ৪ লাখ ৩৭ হাজার ৫০০ টাকা রয়েছে। আঞ্জুম সুলতানার স্থাবর সম্পদের মধ্যে আছে অকৃষি জমি ১০ শতক ও টিনশেড দালান। তার স্বামীর অকৃষি জমি আছে ২০ শতক, ২ হাজার বর্গফুটের দ্বিতলবিশিষ্ট আবাসিক দালান ও ১২০০ বর্গফুটের ৩য় তলা আবাসিক দালান। আরেক মেয়র প্রার্থী শিরিন আক্তারের শিক্ষাগত যোগ্যতা এসএসসি পাস। পেশায় তিনি মৌসুমি ব্যবসায়ী। তার নামে কোনো মামলা নেই। তার অস্থাবর সম্পদের মধ্যে নগদ রয়েছে ৩ লাখ ২০ হাজার টাকা, ৩০ ভরি সোনা। তার স্থাবর সম্পদ ১৪ শতক জমি।

সর্বশেষ খবর