রবিবার, ১২ মার্চ, ২০১৭ ০০:০০ টা

গুরুতর মানবিক বিপর্যয়ে বিশ্ব

--— জাতিসংঘ

প্রতিদিন ডেস্ক

জাতিসংঘ বলছে, ১৯৪৫ সালে জাতিসংঘের প্রতিষ্ঠার পর বিশ্ব এখন সবচেয়ে বড় মানবিক বিপর্যয়ের মুখে পড়েছে। চারটি দেশে অন্তত দুই কোটি মানুষ চরম দুর্ভিক্ষের মুখোমুখি হয়েছে।

খবর : বিবিসির। জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক প্রধান স্টিফান ওব্রায়েন নিরাপত্তা পরিষদকে জানিয়েছেন, ইয়েমেন, দক্ষিণ সুদান, সোমালিয়া আর নাইজেরিয়ার অন্তত দুই কোটি মানুষ অনাহার আর অভাবের মধ্যে পড়েছেন। তিনি এ বিষয়ে সবার সহযোগিতা কামনা করে জানিয়েছেন, জাতিসংঘের জরুরি শিশু তহবিল (ইউনিসেফ) সতর্কতা জারি করে বলেছে, ১৪ লাখ শিশু এ বছর খাদ্যাভাবে মারা যেতে পারে। এ বিপর্যয় এড়াতে আগামী জুলাই মাসের মধ্যে ৪৪০ কোটি ডলার প্রয়োজন। গত শুক্রবার স্টিফেন জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদকে বলেন, ‘আমরা ইতিহাসের কঠিন সময়ে দাঁড়িয়ে আছি। এ বছরের শুরুতে আমরা সবচেয়ে বেশি মানবিক বিপর্যয়ের মুখে পড়েছি। জাতিসংঘ সৃষ্টির পর  থেকে এমন সংকট আর হয়নি। চার দেশে এখন দুই কোটির বেশি মানুষ খাদ্যাভাব ও দুর্ভিক্ষের মুখে। বিশ্বের সমন্বিত এবং গোষ্ঠীগত প্রচেষ্টা ছাড়া মানুষ খাদ্যাভাবে মারা যাবে। অনেকে রোগে আক্রান্ত হবে এবং মারা যাবে।’ স্টিফান ওব্রায়েন উল্লেখ করেন, শিশুদের বুদ্ধিবিকাশ ব্যাহত হচ্ছে। তারা স্কুলে যেতে পারছে না। মানুষের জীবন-জীবিকা, ভবিষ্যৎ ও আশা হারিয়ে যাচ্ছে। অনেকে গৃহহারা হয়ে পড়েছে। তারা টিকে থাকার জন্য লড়াই করে যাচ্ছে। তুলে ধরা তথ্যানুযায়ী, ইয়েমেনে প্রতি ১০ মিনিটে প্রতিরোধযোগ্য রোগে আক্রান্ত হয়ে একটি শিশু মারা যাচ্ছে। পাঁচ বছরের কম বয়সী প্রায় পাঁচ লাখ শিশু চরম অপুষ্টিতে ভুগছে। প্রায় দুই কোটি ইয়েমেনি মানবিক সংকটে রয়েছে। একইভাবে দক্ষিণ সুদানে এক লাখ মানুষ খাদ্যাভাবের মধ্যে রয়েছে। আরও এক লাখ দুর্ভিক্ষের দ্বারপ্রান্তে। দেশটির ৪০ লাখ লোক অথবা জনসংখ্যার ৪০ শতাংশের জন্য জরুরি খাদ্য, কৃষি ও পুষ্টি সহায়তা প্রয়োজন। নাইজেরিয়ার উত্তর-পূর্বাঞ্চল সবচেয়ে বেশি মানবিক বিপর্যয়ে রয়েছে। হাজারো মানুষ সেখানে দুর্ভিক্ষের মতো পরিস্থিতিতে রয়েছে। তাদের জরুরি সহায়তা প্রয়োজন। সোমালিয়ায় ছয় বছর আগে সর্বশেষ দুর্ভিক্ষ  ঘোষণা করা হয়। এতে ২ লাখ ৬০ হাজার মানুষের মৃত্যু হয়। মার্চ মাসের শুরুতে মাত্র ৪৮ ঘণ্টার ব্যবধানে দেশটির একটি এলাকায় ১১০ জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে। এল নিনোর প্রভাবে সৃষ্ট পানি সংকটের কারণে গবাদিপশু মরে গেছে এবং ফসল ধ্বংস হয়েছে। ৬২ লাখ মানুষের জরুরি ত্রাণ প্রয়োজন।

সর্বশেষ খবর