মঙ্গলবার, ২১ মার্চ, ২০১৭ ০০:০০ টা

লাতিন আমেরিকা হতে পারে রপ্তানির নতুন বাজার

নিজস্ব প্রতিবেদক

বাংলাদেশের রপ্তানি বাণিজ্যের অন্যতম বাজার হতে পারে ক্যারিবীয় অঞ্চল ও ল্যাটিন আমেরিকার দেশগুলো। বর্তমানে এ অঞ্চলগুলোতে বাংলাদেশের রপ্তানি নেই বললেই চলে। অথচ এখানে রয়েছে বাণিজ্য সম্প্রসারণের বিশাল সম্ভাবনা যা এখন ভারত ও চীনের দখলে। এ অঞ্চলের ২২ দেশে বাণিজ্য সম্প্রসারণে এই সম্ভাবনা কাজে লাগাতে পারলে ভিশন-২০২১ বাস্তবায়নে অনেকটাই এগিয়ে যাবে বাংলাদেশ। একই সঙ্গে দূর হবে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বাণিজ্য ঘাটতি। আর এজন্য প্রয়োজন শুধু প্রচার। পণ্য প্রদর্শনীর ব্যবস্থা করা।

রবিবার বাংলাদেশ প্রতিদিনের সঙ্গে আলাপচারিতায় সম্ভাবনার এ কথাগুলো বলেন বাংলাদেশ এক্সপোর্ট ডেভেলপমেন্ট ইন-করপোরেশনের প্রেসিডেন্ট গোলাম মেহরাজ। বহু বছর ধরে আমেরিকায় বসবাসরত গোলাম মেহরাজ বাংলাদেশি আমেরিকান রিপাবলিকান পার্টির চেয়ারম্যান। তিনি রিপাবলিকান পার্টির সঙ্গে প্রায় দুই যুগ ধরে মার্কিন প্রশাসনে কাজ করছেন। ভিতর থেকে দেখেছেন প্রশাসনের নানা খুঁটিনাটি। খুঁজেছেন আমেরিকার সঙ্গে বাংলাদেশের বাণিজ্য ঘাটতির কারণগুলো। গোলাম মেহরাজ বলেন, যুক্তরাষ্ট্রে বর্তমানে আরএমজি সেক্টরে ৫.৮ বিলিয়ন ডলার রপ্তানি করে বাংলাদেশ। এ ছাড়াও ৭০০ মিলিয়ন ডলারের বেশি বাণিজ্যিক ডিউটি দিয়ে থাকে। পণ্য পরিচিতির মাধ্যমে এ রপ্তানি বাড়তে পারে আরও বহুগুণ। ২০১৬ সালে যুক্তরাষ্ট্রে বাংলাদেশের রপ্তানিতে ঘাটতি তৈরি হয়েছে। সেটি পূরণসহ ল্যাটিন আমেরিকা ও ক্যারিবীয় অঞ্চলে বাণিজ্য সম্প্রসারণে বিশাল সম্ভাবনা রয়েছে বাংলাদেশের। আমাদের দেশে অনেক পণ্য আছে যার ভালো বাজার রয়েছে যুক্তরাষ্ট্রসহ ল্যাটিন আমেরিকা ও ক্যারিবীয় অঞ্চলের দেশগুলোতে। বাংলাদেশের পাট, তৈরি পোশাক পণ্য, চামড়াজাত পণ্য ও ওষুধের বিশাল বাজার হতে পারে ল্যাটিন আমেরিকার দেশগুলো। এ ক্ষেত্রে বেসরকারি উদ্যোগের পাশাপাশি সরকারিভাবেও কিছু কাজ করতে হবে। ওই দেশগুলোতে দূতাবাস ও বিজনেস সেন্টার স্থাপন করে বাংলাদেশি পণ্য প্রদর্শনীর ব্যবস্থা করলে তা বাণিজ্য সম্প্রসারণে কার্যকরী ভূমিকা রাখবে। তিনি বলেন, বর্তমান মার্কিন প্রশাসন ট্রান্স-প্যাসিফিক পার্টনারশিপ (টিপিপি) চুক্তি বাতিল করেছে। যার ফলে বাংলাদেশ আরএমজি সেক্টরে স্বস্তিতে আছে। বাংলাদেশের সঙ্গে ল্যাটিন আমেরিকার দেশগুলোর বিদ্যমান বাণিজ্য ও বিনিয়োগ বাধা দূর করা সম্ভব হলে অর্থনৈতিক সম্পর্ক জোরদার হবে। এ দেশগুলোর সঙ্গে সাংস্কৃতিক সম্পর্ক বিনিময় ও বাংলাদেশি ব্যবসায়ীদের ভিসা প্রাপ্তি সহজীকরণ জরুরি।

 মেহরাজ জানান, শিগগিরই যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কের হিলটনে বাংলাদেশ এক্সপোর্ট ডেভেলপমেন্ট ইন-করপোরেশন আন্তর্জাতিক বাণিজ্যমেলার আয়োজন করতে যাচ্ছে। প্রদর্শনীতে বাংলাদেশি পণ্যের তালিকায় থাকবে রেডিমেড গার্মেন্ট, নিটওয়্যার, পাট ও পাটজাত পণ্য, চামড়া ও চামড়াজাত পণ্য, সিরামিকস, মেলামাইন, ইলেক্ট্রনিক্স, কাগজ, হস্তশিল্প, ওষুধ, চিংড়ি, বেভারেজ ও পানীয়, জাহাজ নির্মাণ শিল্পসহ অন্যান্য পণ্য। এ মেলায় উপস্থিত থাকবেন কনগ্রেসশনাল হোমল্যান্ড সিকিউরিটি অ্যান্ড কাউন্টার টেররিজমের সদস্যরা। ইন্টারন্যাশনাল রিলেশন কমিটির সাবেক চেয়ারম্যান এবং মার্কিন কংগ্রেসের ডেমোক্রেটিক পার্টির অনেক সদস্য এ মেলায় উপস্থিত থাকবেন। এ ছাড়া মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নীতি-নির্ধারণী কর্মকর্তারাও এ মেলায় উপস্থিত থাকবেন। বর্তমানে বাণিজ্যিক সম্প্রসারণ ছাড়াও বাংলাদেশের জিএসপি ফিরে পাওয়ার জন্য তারা এ মেলার দাবি তুলবেন বলে জানান গোলাম মেহরাজ। ল্যাটিন আমেরিকা ও ক্যারিবীয় অঞ্চলে বাংলাদেশের বাণিজ্য সম্প্রসারণে সম্ভাবনা কাজে লাগাতে বাংলাদেশি পণ্যের পরিচিতি তুলে ধরার প্রতি গুরুত্ব আরোপ করে মেহরাজ বলেন, আমাদের এখানে এমন অনেক পণ্য আছে, যেগুলো মানের দিক দিয়ে বিশ্বের অন্য দেশগুলোর চেয়ে অনেক ভালো। শুধু প্রচারের অভাবে এ পণ্যগুলোর বাজার সৃষ্টি হচ্ছে না।

সর্বশেষ খবর