বুধবার, ২২ মার্চ, ২০১৭ ০০:০০ টা

এরশাদের নেতৃত্বে জোট করে ভোট

——— এবিএম রুহুল আমিন হাওলাদার

এরশাদের নেতৃত্বে জোট করে ভোট

দলের চেয়ারম্যান সাবেক রাষ্ট্রপতি হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের নেতৃত্বে জোট করে আগামী নির্বাচনে জাতীয় পার্টি অংশ নেবে বলে জানিয়েছেন দলটির মহাসচিব সাবেক মন্ত্রী এ বি এম রুহুল আমিন হাওলাদার। তিনি বলেন, শিগগিরই এই জোটের আত্মপ্রকাশ ঘটবে। আগামী নির্বাচনে দেশবাসীর  সমর্থন নিয়ে এই জোট সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জন করবে ইনশা আল্লাহ। গতকাল বাংলাদেশ প্রতিদিনের সঙ্গে একান্ত আলাপচারিতায় এ কথা বলেন তিনি। জাতীয় পার্টির সাংগঠনিক অবস্থা সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘নির্বাচন সামনে রেখে তুণমূল পর্যায়ে পার্টির ৭৬টি সাংগঠনিক জেলা কমিটি সংগঠিত করছি। মেয়াদোত্তীর্ণ জেলাগুলোর কাউন্সিল শেষ করছি। সম্ভাব্য প্রার্থীদের সাংগঠনিকভাবে গড়ে তোলার সর্বোচ্চ প্রচেষ্টা চালাচ্ছি।’ তিনি বলেন, জাতীয় পার্টি গত ২৬ বছর ক্ষমতার বাইরে থেকেও আন্দোলন-সংগ্রামের মাধ্যমে প্রতিটি নির্বাচনে অংশ নিচ্ছে। জাতীয় পার্টি শান্তির রাজনীতিতে বিশ্বাসী। মানুষের উন্নয়ন ও জীবনের নিরাপত্তাকে অগ্রাধিকার দিয়ে আসছে। জোট গঠনের লক্ষ্যে জাতীয় পার্টি তার অতীতের সরকার পরিচালনার অভিজ্ঞতা কাজে লাগাতে চায়। তিনি বলেন, ‘দুটি বড় দলের সফলতা ও ব্যর্থতা মানুষের বিবেচনায় আছে। পরিসংখ্যানে দেখা যাচ্ছে এইচ এম এরশাদের গ্রহণযোগ্যতা দেশের সাধারণ মানুষের কাছে তুলনামূলকভাবে অনেক অনেক বেশি। আমরা চেষ্টা করে যাচ্ছি সাংগঠনিকভাবে সব দুর্বলতা দ্রুত কীভাবে কাটিয়ে ওঠা যায়।’ তিনি বলেন, ‘জাতীয় পার্টি নিয়ে ২৫ বছরে বহু ষড়যন্ত্র হয়েছে। পার্টির চেয়ারম্যানের দূরদর্শিতা, প্রজ্ঞা ও অভিজ্ঞতার কারণে দলটি জনগণের কাছে সময়ের ব্যবধানে অনেক জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। আর তা প্রমাণিত হয়েছে গত কাউন্সিল ও প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর মহাসমাবেশে। আমাদের হাজার হাজার নেতা-কর্মী জেলা, উপজেলা এবং তৃণমূল পর্যায় থেকে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে এসে তা প্রমাণ করেছেন। তবে সুযোগসন্ধানী ও বিপথগামী কিছু নেতা আমাদের দল থেকে চলে গেছেন এটা সত্য, কিন্তু লাখ লাখ নেতা-কর্মী পল্লীবন্ধুকে ছেড়ে যাননি। সম্ভাবনার কথা হলো, বড় বড় দল থেকে বহু নেতা-কর্মী প্রতিনিয়ত জাতীয় পার্টিতে যোগদান করছেন। এতে প্রমাণ হয় আগামী দিনে জাতীয় পার্টির সম্ভাবনা খুবই উজ্জ্বল।’ জঙ্গিবাদ প্রসঙ্গে সাবেক এই মন্ত্রী বলেন, ‘আমরা সন্ত্রাস ও নৈরাজ্যের বিরুদ্ধে।’ তিনি বলেন, একটি স্থিতিশীল সরকারই দিতে পারে উন্নয়ন। জনজীবনের নিরাপত্তা। প্রধানমন্ত্রীর ভারত সফর প্রসঙ্গে বলেন, ‘ভারত আমাদের বন্ধু দেশ। ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধে ১ কোটি মানুষকে আশ্রয় দিয়েছে। মিত্রবাহিনীর সহযোগিতায় আমরা পাক হানাদার বাহিনীকে পরাভূত করে দেশ স্বাধীন করেছি। তাদের সহযোগিতার কথা কৃতজ্ঞচিত্তে স্মরণ করি। একই সঙ্গে প্রধানমন্ত্রীর আসন্ন ভারত সফরে দেশের উন্নয়নের স্বার্থে দ্বিপক্ষীয় চুক্তিগুলো জনগণের কাছে গ্রহণযোগ্য হবে এটাই আমাদের প্রত্যাশা।’

 রুহুল আমিন হাওলাদার বলেন, সাংগঠনিক কাঠামোর মধ্য দিয়ে সাধারণত জাতীয় নির্বাচন হয়ে থাকে। অনাকাঙ্ক্ষিত পরিস্থিতির সৃষ্টি না হলে নির্বাচন কমিশনের অধীনে জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। বিএনপির আগামী নির্বাচনে আসা-না আসা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘অতীত থেকেই আমরা শিক্ষা নিই। সে ক্ষেত্রে আগামী নির্বাচনে সব দল অংশ নেবে বিষয়টি নিশ্চিতভাবে বলা যায়।’ আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি প্রসঙ্গে সাবেক এই মন্ত্রী বলেন, ‘জিরো টলারেন্স নীতিতে সরকার। দেখামাত্র গুলি। আইনশৃঙ্খলা স্বাভাবিক রাখার জন্য তাদের চেষ্টার কোনো ত্রুটি নেই। তার পরও প্রশ্ন থেকে যায়। আশা করি সরকার বিষয়টি আন্তরিকভাবে দেখবে।’ তিনি বলেন, নির্বাচন সন্নিকটে। সব বিষয়ের বিরাজমান পরিস্থিতি সামনে রেখে দেশের মানুষ কীভাবে দেখে তাই বিবেচ্য বিষয়। সরকারের সফলতা-ব্যর্থতাসংক্রান্ত প্রশ্নের জবাবে রুহুল আমিন হাওলাদার বলেন, ‘সব কথা বলা যায় না। গুরুজন শিখিয়েছেন স্থান-কাল ভেদে কথা বলতে হয়। কিছু কথা বাকি থেকে যাক। তবু কিছু কথা বলতে হবে। এখানেই শেষ নয়।’

সর্বশেষ খবর