শুক্রবার, ২৪ মার্চ, ২০১৭ ০০:০০ টা

দক্ষিণ এশীয় স্যাটেলাইটে যুক্ত হচ্ছে বাংলাদেশ

কূটনৈতিক প্রতিবেদক

ভারতের উদ্যোগে ও খরচে দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর জন্য মহাকাশে স্যাটেলাইট পাঠানোর চুক্তিতে স্বাক্ষর করেছে বাংলাদেশ। তবে বাংলাদেশের নিজস্ব স্যাটেলাইটে যেন কোনো বাধার সৃষ্টি না হয় সেই শর্ত রাখা হয়েছে বাংলাদেশের পক্ষ থেকে। গতকাল ঢাকায় বিটিআরসি কার্যালয়ে বিটিআরসির চেয়ারম্যান শাহজাহান মাহমুদ ও ভারত সরকারের পক্ষে ঢাকার হাইকমিশনার হর্ষবর্ধন শ্রিংলা এই চুক্তিতে সই করেন। অনুষ্ঠানে উপস্থিত পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম বলেন, ‘এ যুগান্তকারী চুক্তির ফলে সার্ক অঞ্চল স্যাটেলাইটের মতো হাইটেক সহযোগিতায় যুক্ত হলাম। শুধু বাংলাদেশ নয়, এ অঞ্চলের অন্যান্য দেশও যুক্ত হয়েছে। পাশাপাশি অন্যান্য অঞ্চলে বার্তা যাবে যে, আমরা  কোনো অংশে পিছিয়ে নেই।’ ‘এগ্রিমেন্ট বিটুইন দ্য গভর্নমেন্টস অব রিপাবলিক অব ইন্ডিয়া অ্যান্ড দ্য গভর্নমেন্ট অব দ্য পিপলস রিপাবলিক অব বাংলাদেশ কনসার্নিং টু অরবিট ফ্রিকোয়েন্সি কো-অর্ডিনেশন অব সাউথ এশিয়া স্যাটেলাইট প্রোপোজড অ্যাট ফোর্টি এইট ডিগ্রি ইস্ট’ শিরোনামে চুক্তিটি স্বাক্ষর হয়েছে। এ প্রকল্পে অংশগ্রহণের জন্য নেপাল, ভুটান, ইন্দোনেশিয়াসহ কয়েকটি  দেশ ইতিমধ্যে সম্মতি দিয়েছে। অনুষ্ঠানে হাইকমিশনার হর্ষবর্ধন শ্রিংলা বলেন, কৃত্রিম উপগ্রহটি উেক্ষপণের সব ব্যয়ভার বহন করছে ভারত সরকার। এটি উেক্ষপণে ৪০  কোটি ডলার খরচ হবে। এ স্যাটেলাইট প্রায় প্রস্তুত রয়েছে, খুব শিগগিরই উেক্ষপণ সম্ভব হবে। বিটিআরসির চেয়ারম্যান শাহজাহান মাহমুদ চুক্তি স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে বলেন, ‘সাউথ এশিয়া স্যাটেলাইট’ এর ১২টি  ট্রান্সপন্ডারের মধ্যে একটি বিনামূল্যে পাচ্ছে বাংলাদেশ এবং তা যেভাবে ইচ্ছা ব্যবহার করা যাবে। দেশের বাইরে থাকা ডাক ও  টেলিযোগাযোগ প্রতিমন্ত্রী তারানা হালিম একটি অডিও বার্তায় চুক্তি স্বাক্ষরকারীদের অভিনন্দন জানান।  চুক্তি স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে পররাষ্ট্র সচিব শহীদুল হক, ডাক ও টেলিযোগাযোগ সচিব শ্যাম সুন্দর শিকদার, বিটিআরসির ভাইস চেয়ারম্যান আহসান হাবিব খানসহ অন্যান্য কর্মকর্তা উপস্থিত ছিলেন। ভারতীয় হাইকমিশনের সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ভারত, ইন্ডিয়ান স্পেস রিসার্চ অর্গানাইজেশন (আইএসআরও)-এর মাধ্যমে দক্ষিণ এশীয় অঞ্চলসমূহে সেবাদানের জন্য আইএসআরও-এর জিওসিনক্রোনাস স্যাটেলাইট লঞ্চ  ভেহিকেল (জিএসএলভি এমকে-ওও) ব্যবহার করে ১২-কু ব্যান্ড ট্রান্সপন্ডারস (প্রতিটি ৩৬ মেগা হার্জ)-এর সঙ্গে ২ টন  শ্রেণির যোগাযোগ স্যাটেলাইট চালু করবে। স্যাটেলাইট সিস্টেমের আওতায় প্রস্তাবিত আবেদনটির মধ্যে রয়েছে  টেলিকমিউনিকেশন, টেলি-মেডিসিন ও ইন্টার-গভর্নমেন্ট  নেটওয়ার্কস, দুর্যোগ অবস্থায় জরুরি যোগাযোগ, টেলিভিশন ব্রডকাস্ট এবং ডিটিএইচ টেলিভিশন সার্ভিস।

প্রত্যেকটি অংশগ্রহণকারী দেশ তাদের নিজস্ব অভ্যন্তরীণ ব্যবহারের জন্য ৩৬ থেকে ৫৪ মেগা হার্জ ক্ষমতাসম্পন্ন একটি সার্বক্ষণিক সেবাদানকারী ট্রান্সপন্ডারের সুবিধা পাবে। প্রত্যেকটি দেশই বিষয়বস্তু সংযোজন ও এর ব্যবহারের জন্য দায়ী থাকবে। হাইকমিশন আরও জানায়, ২০১৪ সালে কাঠমান্ডুতে অনুষ্ঠিত সার্ক সামিট চলাকালে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র  মোদি ভারতের প্রতিবেশীদের জন্য উপহার হিসেবে স্যাটেলাইটটি উেক্ষপণের ঘোষণা দেন। এই স্যাটেলাইটটি দক্ষিণ এশীয় অঞ্চলের উন্নয়ন এবং অঞ্চলটির উন্নয়নের জন্য অভিজ্ঞতা ও প্রযুক্তি বিনিময়ে ভারতের প্রতিজ্ঞার প্রতিফলন। পাকিস্তান ছাড়া সব দক্ষিণ এশীয় দেশসমূহ এই পরিকল্পনার অংশ, যেটি অংশগ্রহণকারী দেশসমূহের জনগণের সুবিধার জন্য একটি সহযোগিতামূলক প্রচেষ্টার মাধ্যমে অঞ্চলটিকে এক সূত্রে গেঁথে দেবে।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর