শনিবার, ২৫ মার্চ, ২০১৭ ০০:০০ টা

খুলনা-মংলা রেলপথে নতুন সম্ভাবনা

সামছুজ্জামান শাহীন, খুলনা

খুলনা-মংলা রেলপথে নতুন সম্ভাবনা

খুলনা-মংলা রেল লাইন স্থাপনে মাটি ভরাটের কাজ পুরোদমে চলছে। প্রথম দফায় খুলনার ফুলতলা থেকে বিল ডাকাতিয়ার মাঝ দিয়ে বটিয়াঘাটা পর্যন্ত ভরাটের কাজ চলছে। ধাপে ধাপে মংলা বন্দর পর্যন্ত মাটি ভরাট করা হবে।

খুলনা-মংলা রেললাইন প্রকল্পের প্রকল্প প্রধান মজিবুর রহমান বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, রেললাইনের জমি অধিগ্রহণের পর এখন রেললাইন স্থাপনের কাজ শুরু হয়েছে। প্রকল্পের মেয়াদ অনুযায়ী যত দ্রুত সম্ভব এই কাজ শেষ করা হবে।

সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, বাংলাদেশের সঙ্গে পার্শ্ববর্তী তিন দেশের ব্যবসা-বাণিজ্য সম্প্রসারণ ও আঞ্চলিক সহযোগিতা বাড়াতে বাংলাদেশ ও ভারত সরকারের যৌথ অর্থায়নে প্রায় ৩ হাজার ৮০১ কোটি ৬১ লাখ টাকা ব্যয়ে এ প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করা হচ্ছে। এ পর্যন্ত প্রকল্পের ২৫ শতাংশ কাজ শেষ হয়েছে। আগামী ২০১৮ সালের ৩০ জুন এই প্রকল্পের কাজ শেষ হওয়ার কথা। গুরুত্বপূর্ণ এ রেলপথ চালু হলে বাংলাদেশের সঙ্গে ভারত, নেপাল ও ভুটানের সঙ্গে ব্যবসায়িক সংযোগ স্থাপন সম্ভব হবে। এতে মংলা বন্দরে গতি আসবে।

প্রকল্প সূত্রে জানা গেছে, খুলনা-মংলা রেলপথ প্রকল্পটি মূলত ৩টি অংশে বিভক্ত করা হয়েছে। একটি রেল সেতু অপরটি রেললাইন এবং অন্যটি টেলিকমিউনিকেশন ও সিগন্যালিং। এই প্রকল্পের অধীনে লুপ লাইনসহ রেলওয়ে ট্র্যাকের দৈর্ঘ্য ৮৬ দশমিক ৮৭ কিলোমিটার। এর মধ্যে ৬৪ দশমিক ৭৫ কিলোমিটার ব্রডগেজ রেলপথ নির্মাণ হবে। রূপসা সেতুর দেড় কিলোমিটার দূরে যুক্ত হবে ৫ দশমিক ১৩ কিলোমিটার রেল সেতু। এ ছাড়া ২১টি ছোটখাটো সেতু ও ১১০টি কালভার্ট নির্মিত হবে। খুলনার ফুলতলা উপজেলা থেকে মংলা বন্দর পর্যন্ত ৮টি স্টেশন থাকবে। এগুলো হলো ফুলতলা, আড়ংঘাটা, মোহাম্মদ নগর, কাটাখালী, চুলকাঠি, ভাগা, দিগরাজ ও মংলা। এই প্রকল্পের অন্যতম কম্পোনেন্ট রূপসা নদীতে রেল সেতু নির্মাণের কাজও এগিয়ে চলেছে।

সূত্র জানায়, বর্তমান বিশ্বে মংলাই একমাত্র সমুদ্রবন্দর, যার সঙ্গে রেলপথের কোনো সংযোগ নেই। ফলে বড় বড় কনটেইনার পরিবহনে প্রতিনিয়ত ব্যবসায়ীরা ভোগান্তিতে পড়েন। এ কারণে মংলা বন্দরে বহির্বিশ্বের কোনো বড় মালবাহী জাহাজ ভেড়াতে আগ্রহী হয় না। এতে আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে বন্দর কর্তৃপক্ষ।

অর্থনীতিবিদ অধ্যাপক আনোয়ারুল কাদির বলেন, খুলনা-মংলা রেললাইন হলে দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের ব্যবসা বাণিজ্যের ক্ষেত্রে ব্যাপক উন্নতি হবে। এখানকার উৎপাদিত পণ্য বাইরে বাজারজাত করা যাবে। প্রচুর কর্মসংস্থান হবে। তিনি বলেন, খুলনার যেসব অঞ্চল দিয়ে এই রেললাইন যাবে সেখানে প্রচুর জলাভূমি রয়েছে। এ কারণে জলাবদ্ধতা নিরসনে রেললাইন তৈরির সময় এর নিচে প্রচুর কালভার্ট দেওয়া প্রয়োজন। যাতে ভবিষ্যতে পানি চলাচলে প্রতিবন্ধকতা তৈরি না হয়।

সর্বশেষ খবর