শনিবার, ২৫ মার্চ, ২০১৭ ০০:০০ টা

চবি ছাত্র হত্যার রহস্য উদঘাটন বলি হয়েছেন প্রেমের

নিজস্ব প্রতিবেদক, চট্টগ্রাম

চবি ছাত্র হত্যার রহস্য উদঘাটন বলি হয়েছেন প্রেমের

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় (চবি)’র শিক্ষার্থী আলাউদ্দিন চৌধুরী আলাউলের সঙ্গে দীর্ঘদিনের প্রেমের সম্পর্ক ছিল প্রতিবেশী এক তরুণীর। তার সঙ্গে সম্পর্কের জেরে ওই তরুণীর প্রথম বিয়ের বিচ্ছেদও হয়। দ্বিতীয় বিয়ে হওয়ার পরও অব্যাহত থাকে তাদের সেই গোপন প্রণয়। দ্বিতীয় স্বামী স্ত্রীর পরকীয়ার কথা জেনে আলাউলকে হত্যার পরিকল্পনা নেয়। ওই পরিকল্পনার অংশ হিসেবে বুধবার রাতে আলাউলকে কৌশলে ডেকে এনে হত্যা করা হয়। আলোচিত এ হত্যাকাণ্ড তদন্ত করতে গিয়ে এসব বিষয় জানতে পারে পুলিশ। খুনের মোটিভ নিশ্চিত হওয়ার পর আলাউলের প্রেমিকা ও তার দ্বিতীয় স্বামীকে গ্রেফতার করতে হন্যে হয়ে খুঁজছে পুলিশ।

বায়েজীদ থানার ওসি মোহাম্মদ মহসিন বলেন, ‘আলাউল খুনের মোটিভের বিষয়ে আমরা নিশ্চিত হয়েছি। এ খুনের সঙ্গে আলাউলের প্রেমিকা ও তার স্বামী জড়িত থাকতে পারে। তাদের গ্রেফতার করা গেলে খুনের রহস্য পুরোপুরি উন্মোচিত হবে। তাই তাদের গ্রেফতারের জন্য প্রচেষ্টা চালানো হচ্ছে।’ পুলিশ ও আলাউলের কয়েকজন বন্ধুর সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, কলেজে পড়ার সময় প্রতিবেশী এক তরুণীর সঙ্গে আলাউলের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। ওই সময় আলাউল তরুণীকে প্রাইভেটও পড়াতেন। তাদের সম্পর্কের মধ্যেই হাটহাজারীর বড় দিঘীরপাড় এলাকার এক যুবকের সঙ্গে বিয়ে হয় ওই তরুণীর। বিয়ে হওয়ার পরও ওই তরুণীর সঙ্গে সম্পর্ক অব্যাহত ছিল তার। পরে পরকীয়ার বিষয়টি জানতে পারলে স্বামী ওই তরুণীকে ডিভোর্স দেয়। কয়েক মাস আগে রাউজান উপজেলার এক যুবকের সঙ্গে দ্বিতীয় বিয়ে দেওয়া হয় ওই তরুণীকে। দ্বিতীয় বিয়ের পরও ওই তরুণীর সঙ্গে সম্পর্ক অব্যাহত ছিল আলাউলের। কিছুদিন আগে ওই তরুণীর স্বামী দুজনের পরকীয়ার কথা জেনে যায়। এরপর আলাউলকে ফোন করে হত্যার হুমকি দেন ওই তরুণীর দ্বিতীয় স্বামী। ওই হুমকির কিছুদিনের মধ্যেই খুন হন আলাউল। নিহত আলাউলের ছোট ভাই সালাউদ্দিন বলেন, ‘ভাইয়ের সঙ্গে প্রতিবেশী বিবাহিত এক মেয়ের সম্পর্ক ছিল। ওই মেয়ের স্বামীই ভাইকে ফোন করে হত্যার হুমকি দেন। ওই মেয়ে ও তার দ্বিতীয় স্বামীকে গ্রেফতার করা হলে এ খুনের রহস্য উন্মোচন হবে।’ আলাউলের বিশ্ববিদ্যালয়ের বন্ধু সাদেক হোসাইন বলেন, কলেজ জীবন থেকে প্রতিবেশী এক মেয়ের সঙ্গে সম্পর্ক ছিল আলাউলের। পরবর্তীতে মেয়েটির দুই জায়গায় বিয়ে হয়। বিয়ে হওয়ার পরও ওই মেয়ের সঙ্গে তার প্রেমের সম্পর্ক ছিল। ওই মেয়েটির দ্বিতীয় স্বামী তাদের ফোনে নানান রকম হুমকি দিত। হুমকি পাওয়ার কথা সে কয়েকবার বলেছিল। বুধবার বাসা থেকে বের হওয়ার সময় আলাউলের সঙ্গে দেখা হয় মো. জাফর নামে এক যুবকের সঙ্গে। ওই যুবক বলেন, ‘আলাউল ও আমি বুধবার মদনহাট থেকে চবির ৩নং রুটের বাস ‘তরী’তে করে অক্সিজেনের উদ্দেশে রওনা দেই। পথে আমি বড়দিঘী এলাকায় নেমে যাই। গাড়ি থেকে নামার আগে আলাউল এক তরুণীর ছবি দেখিয়ে তার সঙ্গে দেখা করতে যাচ্ছে বলে জানায়।’ প্রসঙ্গত, গত বুধবার রাতে বায়েজীদ থানার পশ্চিম শহীদনগর এলাকার চারতলা ভবন থেকে আলাউলের লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। এ ঘটনায় আলাউলের বাবা শাহ আলম বাদী হয়ে অজ্ঞাতনামাদের আসামি করে বায়েজীদ থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেছেন।

সর্বশেষ খবর