শনিবার, ২৫ মার্চ, ২০১৭ ০০:০০ টা
কৃষি সংবাদ

কালিজিরা বদলে দিয়েছে জীবন

লালমনিরহাট প্রতিনিধি

কালিজিরা বদলে দিয়েছে জীবন

লালমনিরহাটের মাঠে মাঠে এখন শোভা পাচ্ছে ভাগ্য বদলের ফসল ‘কালিজিরা’। আবাদি এলাকার বাতাসে ভাসছে এর মিষ্টি গন্ধ। ঘন সবুজ পাতার ভিতর হালকা নীল রঙের ফুলে ফুলে ছেয়ে আছে গাছ। এ দৃশ্য যে কাউকেই কাছে টানার। আগে অনেকে শখের বসে কালিজিরার চাষ করতেন। কিন্তু চলতি রবি মৌসুমে রেকর্ড পরিমাণ জমিতে কালিজিরার চাষ করেছেন কৃষক। মাঠজুড়ে পরিকল্পিতভাবে এ ফসলের আবাদ হচ্ছে। উৎপাদন খরচ কম, ব্যাপক চাহিদা আর লাভজনক হওয়ায় এ আবাদ এভাবে বিস্তৃত হয়েছে। যা লালমনিরহাট সদরসহ ৪টি উপজেলার ৫ সহস্রাধিক কৃষক পরিবারে নতুন সম্ভাবনার দিগন্ত খুলে দিয়েছে। কারণ এরই মধ্যে ‘কালিজিরা’ তাদের ভাগ্য ফিরিয়েছে। লালমনিরহাট আঞ্চলিক মসলা গবেষণা ইনস্টিটিউট ও কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের তথ্যানুযায়ী, লালমনিরহাট জেলায় এবার ৩০২ হেক্টর জমিতে কালিজিরার আবাদ হয়েছে। সবচেয়ে বেশি আবাদ হয়েছে সদর উপজেলায়। কৃষি বিভাগ হেক্টরে প্রায় ২০-৩০ মণ কালিজিরা উৎপাদনের আশা করছে। সে হিসেবে লালমনিরহাটে এবার এক হাজার ৭০০ মণ কালিজিরা উৎপাদন হবে। চাষিরা জানান, অগ্রহায়ণ মাস কালিজিরা চাষের উপযুক্ত সময়। বপনের তিন থেকে চার মাস পর ফসল পাওয়া যায়। পতিত জমি কম টাকায় লিজ নিয়েও অনেকে কালিজিরার চাষ করছেন। কেউ কেউ আবার উৎপাদিত ফসলের তিন ভাগের এক ভাগ জমির মালিককে দিয়েও আবাদ করছেন। কালিজিরা চাষের জন্য প্রথমবার বীজ কিনলেই চলে। পরে নিজের খেতের বীজ দিয়েই আবাদ করা যায়। রোগবালাই নেই বললেই চলে, তাই কীটনাশকের খরচ নেই। গড়ে এক বিঘা জমিতে চাষে খরচ পড়ে  ৪ হাজার ২০০ টাকার মতো। ওই জমি থেকে তিন থেকে চার মণ কালিজিরা পাওয়া যায়। প্রতি মণ কালিজিরা বিক্রি হয় পাঁচ হাজার থেকে ছয় হাজার টাকায়। এই আবাদ থেকে কৃষক বাড়তি উপার্জন করছেন। কালিজিরার বহুমুখী ব্যবহার ও বহুজাতিক কোম্পানিগুলো প্রক্রিয়াজাত করে বিক্রি করায় এর কদর বেড়েছে আগের চেয়ে অনেক বেশি। লালমনিরহাট মসলা গবেষণা উপ-কেন্দ্রের ঊর্ধ্বতন বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ডক্টর মো. কামরুল ইসলাম বলেন, ‘এ জেলার প্রায় সব গ্রামে ব্যাপকহারে কালিজিরার আবাদ হচ্ছে। পাঁচ হাজারেরও বেশি কৃষক প্রতি বছর কালিজিরা চাষে লাভবান হচ্ছেন। কৃষি বিভাগের পক্ষ থেকে কৃষকদের সার্বক্ষণিক পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে।’

সর্বশেষ খবর