সোমবার, ২৭ মার্চ, ২০১৭ ০০:০০ টা

নাও ছাইড়া দে রে পাল উড়াইয়া দে

নিজস্ব প্রতিবেদক

নাও ছাইড়া দে রে পাল উড়াইয়া দে

রাজধানীর হাতিরঝিলে গতকাল মনোজ্ঞ নৌকাবাইচ প্রতিযোগিতা —বাংলাদেশ প্রতিদিন

‘নাও ছাইড়া দে রে, পাল উড়াইয়া দে’ গানের তালে ডিঙ্গি-কোশা নৌকার বৈঠায় জোর দিয়ে কার আগে কে কূলে যাবে এটা নদীমাতৃক বাংলার নৌকাবাইচের চিরাচরিত দৃশ্য। স্বাধীনতার ৪৬ বছর উদযাপনে রাজধানীর হাতিরঝিলে বাংলাদেশ রোয়িং ফেডারেশন এবং জে কে বি কোম্পানির উদ্যোগে আয়োজন করা হয়েছিল নৌকাবাইচের।

সূর্য তখন মধ্য গগন থেকে আস্তে আস্তে তেজ কমিয়ে ঢলে পড়ছে পশ্চিমে। ছুটির দিনে দর্শনার্থীর ভিড়ে সরগরম হাতিরঝিল। ঘড়ির কাঁটা ৩টা পার হতেই হাতিরঝিলের মাঝখানে লাল বলের সীমানায় সারি ধরে সাজানো হয় বাহারি সাইজের নৌকা। নৌকাবাইচের জন্য বৈঠা হাতে প্রস্তুত হতে শুরু করে অংশগ্রহণকারী দলগুলো। এই প্রতিযোগিতায় পুরুষদের পাশাপাশি অংশ নিয়েছেন নারীরাও। মাইকে ঘোষণা দেওয়ার সঙ্গে সঙ্গে ঝিলের বুক চিড়ে ধেয়ে চলে বাইচের নৌকা আর পাড় থেকে ভেসে আসতে থাকে দর্শকদের হুল্লোড় ধ্বনি। সময় গড়ানোর সঙ্গে সঙ্গে বাড়তে থাকে উত্তেজনা। একবার দেখা যায় এক নৌকা এগিয়ে গেছে কয়েক সেকেন্ডের ব্যবধানে তাকে পেছনে ফেলে ধেয়ে চলে আরেক নৌকা। এরকম হাড্ডাহাড্ডি লড়াই শেষে পুরুষ গ্রুপে বিজয়ী হয় নিউ গাজী রোয়িং ক্লাব, দ্বিতীয় স্থান অর্জন করে নিউ ইয়ং স্টার রোয়িং ক্লাব এবং তৃতীয় স্থান অর্জন করে ইউনিভার্সাল রোয়িং ক্লাব। আর নারী গ্রুপে প্রথম স্থান অর্জন করে সুবাড্ডা রোয়িং ক্লাব, দ্বিতীয় স্থান অর্জন করে নর্থ বেঙ্গল রোয়িং ক্লাব এবং তৃতীয় স্থান অর্জন করে আলী নগর রোয়িং ক্লাব। নৌকাবাইচে বিজয়ীদের হাতে প্রধান অতিথি হিসেবে পুরস্কার তুলে দেন, যুব ও ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী ড. শ্রী বীরেন শিকদার। বাংলাদেশ রোয়িং ফেডারেশনের সভাপতি অ্যাডভোকেট মোল্লা মোহাম্মদ আবু কাওছারের সভাপতিত্বে এই প্রতিযোগিতায় বিশেষ অতিথি ছিলেন মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব মোহাম্মদ মাহমুদ রেজা খান, যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. আসাদুল ইসলাম এবং জে কে বি কোম্পানির চেয়ারম্যান গোলাম কিবরিয়া শামীম। প্রধান অতিথির বক্তব্যে প্রতিমন্ত্রী বলেন, ক্রীড়া জগতে বাংলাদেশ এখন জ্বলে ওঠা সূর্য। তাই দেশীয় সংস্কৃতিকে ধারণ করতে স্বাধীনতা দিবসে এই নৌকাবাইচের আয়োজন করা হয়েছে। নারী-পুরুষ উভয়ের অংশগ্রহণ আর দর্শক সমাগমে এই প্রতিযোগিতা পরিণত হয়েছে বাঙালি সংস্কৃতির মিলনমেলায়। আমাদের দেশীয় খেলা এবং বিনোদনকে আরও সামনে নিয়ে আসতে হবে।

সর্বশেষ খবর