সোমবার, ২৭ মার্চ, ২০১৭ ০০:০০ টা

এরশাদের ‘জাতীয় ঐক্যজোট’

শফিকুল ইসলাম সোহাগ

এরশাদের ‘জাতীয় ঐক্যজোট’

সাবেক রাষ্ট্রপতি হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের নেতৃত্বে ‘জাতীয় ঐক্যজোট’ নামে নতুন রাজনৈতিক জোটের আত্মপ্রকাশ ঘটতে যাচ্ছে। শনিবার জাতীয় পার্টির সর্বোচ্চ নীতি নির্ধারণী ফোরাম প্রেসিডিয়াম সভায় এ ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।

সংশ্লিষ্ট সূত্র জানিয়েছে, সভায় দলের সিনিয়র কো-চেয়ারম্যান ও বিরোধী দলের নেতা রওশন এরশাদসহ অধিকাংশ নেতাই নামসর্বস্ব দলকে নিয়ে জোট গঠনের বিরোধিতা করেন। এ ব্যাপারে পার্টির মহাসচিব এ বি এম রুহুল আমিন হাওলাদার বলেন, ‘জোট করে আমরা আগামীতে ৩০০ আসনে প্রার্থী দেব। আমরা চমকপ্রদ কিছু দেওয়ার অপেক্ষা করছি। নতুন এই জোটের চেয়ারম্যান হবেন হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ। প্রেসিডিয়ামের বৈঠকে নির্বাচন উপলক্ষে জোট করার ব্যাপারে সিদ্ধান্ত হয়েছে। আগামী মাসের ১ তারিখের মধ্যে এ জোটের আত্মপ্রকাশ ঘটবে বলে আমরা আশাবাদী।’ জানা গেছে, প্রেসিডিয়াম সভায় ৩২ জন সদস্য উপস্থিত ছিলেন। টানা আড়াই ঘণ্টাব্যাপী চলা বৈঠকে মূল আলোচনা হিসেবে ছিল নতুন জোট গঠন। সভায় রওশন এরশাদ বলেন, ‘আমরা জোট করব তাদের সঙ্গে— যেসব দলের মানুষের সঙ্গে সম্পর্ক রয়েছে। প্যাডসর্বস্ব কোনো দলের সঙ্গে না।’ তিনি যোগদানের সঙ্গে সঙ্গে খুলনা সিটি করপোরেশন নির্বাচনে এস এম মুশফিকুর রহমানকে প্রার্থী ঘোষণা করার বিরোধিতা করেন। রওশন এরশাদ বলেন, ‘দলের ত্যাগী নেতারা নির্বাচনের চূড়ান্ত পর্যায়ে যেন বাদ না যান, তা লক্ষ্য রাখতে হবে।’ রওশনের সমালোচনার মুখে দলের চেয়ারম্যান এরশাদ বলেন, ‘আমরা কোনো নাম সর্বস্ব দলকে জোটে সরাসরি টানছি না। নিবন্ধিত দল ইসলামী ঐক্যজোট, বাংলাদেশ খেলাফত মজলিস, ইসলামী ফ্রন্টসহ বিভিন্ন দলের সঙ্গে আমাদের আলোচনা চলছে। আমাদের জোটে আসতে আগ্রহী ইসলামী ১০টি দল প্রথমে একটি মোর্চা করবে, আর সেই মোর্চা আমাদের সঙ্গে জোট করবে। এমনিভাবে আরও ছোট ছোট ১৫টি দল একটি মোর্চা করবে। এই দুটি মোর্চা এবং নিবন্ধিত দলগুলো স্বতন্ত্রভাবে আমাদের সঙ্গে জোট করবে। জোটের শীর্ষ নেতা হবেন সেই মোর্চার প্রধানরা এবং নিবন্ধিত দলের প্রধান।’ তিনি খুলনা সিটি করপোরেশন নির্বাচনে মুশফিকুর রহমান প্রাথমিকভাবে চূড়ান্ত বলে জানান। সভায় আরও বক্তব্য রাখেন কো-চেয়ারম্যান জি এম কাদের, মহাসচিব এ বি এম রুহুল আমিন হাওলাদার। জোট গঠনের ক্ষেত্রে রওশন এরশাদের সঙ্গে একমত পোষণ করে বক্তব্য রাখেন প্রেসিডিয়াম সদস্য কাজী ফিরোজ রশীদ, অধ্যাপক দেলোয়ার হোসেন খান, সৈয়দ আবু হোসেন বাবলা, সাহিদুর রহমান টেপা, অ্যাডভোকেট শেখ সিরাজুল ইসলাম, মুজিবুল হক চুন্নু, লিলি চৌধুরী, সুনীল শুভ রায়, ফয়সল চিশতি, মীর আবদুস সবুর আসুদ, এটিইউ তাজ রহমান, তাজুল ইসলাম চৌধুরী, মাসুদ পারভেজ, হাজী সাইফুদ্দিন মিলন ও মেজর (অব.) খালেদ আখতার।

সংবাদ সম্মেলন : বৈঠক শেষে পার্টির মহাসচিব এ বি এম রুহুল আমিন হাওলাদার সাংবাদিকদের বলেন, ‘নির্বাচন উপলক্ষে জোট করার ব্যাপারে সিদ্ধান্ত হয়েছে। এপ্রিলের যে কোনো সময় জোট আত্মপ্রকাশ করবে।’ জোট ঘোষণার আগে সরকার থেকে জাতীয় পার্টি বেরিয়ে আসবে কিনা— জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘জোট নিয়ে আমরা চমকপ্রদ কিছু দেওয়ার অপেক্ষা করছি। প্রেসিডিয়ামের বৈঠকে দলের ঐক্য, সাংগঠনিক পরিস্থিতি নিয়েও আলোচনা হয়েছে।’ তিনি বলেন, ‘অন্তত ১০টি নিবন্ধিত দলের সঙ্গে আমরা বসব।’ জঙ্গিবাদ নিয়ে জাতীয় পার্টির অবস্থান সম্পর্কে জানতে চাইলে জাপা মহাসচিব বলেন, ‘বাংলাদেশ একটি জনবহুল দেশ, এ ধরনের ঘটনা অস্বাভাবিক কিছু নয়। সব সরকারই চায় এ ধরনের ঘটনা মোকাবিলা করতে। এ সরকারও জঙ্গিবাদ মোকাবিলায় আন্তরিক।’

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর