সোমবার, ২৭ মার্চ, ২০১৭ ০০:০০ টা

স্বাধীনতা দিবস পালন ঘিরে রূপগঞ্জে ব্যাপক সংঘর্ষ, গুলিবিদ্ধ ৪

রূপগঞ্জ (নারায়ণগঞ্জ) প্রতিনিধি

নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জে মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস পালনে যোগদানকে কেন্দ্র করে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষে কায়েতপাড়া এলাকা রণক্ষেত্রে পরিণত হয়েছে। দফায় দফায় সংঘর্ষে সাংবাদিকসহ চারজন গুলিবিদ্ধ ও পথচারীসহ ৪০ জন আহত হয়েছেন। এ সময় ২৫টি গাড়ি ভাঙচুর করা হয়েছে। এ ছাড়া গুলিবিদ্ধ দৈনিক প্রথম ভোরের সাংবাদিক দিগ্বিজয়ের মোটরসাইকেল আগুন দিয়ে পুড়িয়ে দেওয়া হয়। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশ ৪০ থেকে ৫০ রাউন্ড টিয়ার শেল ও রাবার বুলেট ছোড়ে। এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে এলাকায় চরম উত্তেজনা বিরাজ করছে। গতকাল দুপুরে উপজেলার কায়েতপাড়া ইউনিয়নের ইছাখালী ও বিকালে নাওড়া এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।

পুলিশ, প্রত্যক্ষদর্শী ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস পালন উপলক্ষে রূপগঞ্জ আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান শাহজাহান ভূঁইয়া, ভাইস চেয়ারম্যান হাবিবুর রহমান হারেজ ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সিনিয়র সহ-সভাপতি আবুল বাশার টুকুর নেতৃত্বে একটি বিশাল গাড়িবহর বের করে স্থানীয় আওয়ামী লীগ। গাড়িবহর ইছাখালী এলাকায় পৌঁছলে কায়েতপাড়া ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি জাহেদ আলী, সফিকুর রহমান বাদল ও বিউটি আক্তার কুট্টির নেতৃত্বে ৪০-৫০ জন মিলে হামলা চালিয়ে মোটরসাইকেল, পিকআপ ভ্যান ও প্রাইভেটকারসহ ২৫টি গাড়ি ভাঙচুর করে। এ ঘটনায় নগরপাড়া এলাকার ৫ নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মহিবুর রহমান, আওয়ামী লীগ নেতা শমসের মিয়া, নিজাম উদ্দিন, জাহিদুল ইসলামকে মারধর করে আহত করা হয়। নারায়ণগঞ্জ জেলা পুলিশের সহকারী পুলিশ সুপার (গ অঞ্চল) আবদুল্লাহ আল মাসুদ ও রূপগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ইসমাইল হোসেনের নেতৃত্বে বিপুলসংখ্যক পুলিশ ৪০ থেকে ৫০ রাউন্ড টিয়ার শেল ও রাবার বুলেট ছুড়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। অন্যদিকে বিকালে নাওড়া এলাকায় স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবসের কর্মসূচি শেষে বাড়ি ফেরার পথে রূপগঞ্জের শীর্ষ সন্ত্রাসী, হত্যাসহ ২৩ মামলার আসামি সন্ত্রাসী মোশারফ বাহিনীর সদস্য সাখাওয়াতুল্লা, আবুল, রুবেল, আব্বাস, নাজমুল, আনার হোসেন, বাদল, মহিউদ্দিন, রাসেল ও অজ্ঞাতনামা ২০-৩০ জন মিলে হামলা চালায়। হামলায় গুলিবিদ্ধ ও কুপিয়ে জখম করা হয় নাওড়া এলাকার দৈনিক প্রথম ভোরের সাংবাদিক দিগ্বিজয়কে। এ ছাড়া গুলিবিদ্ধ হন উপজেলার পূর্বগ্রাম এলাকার আওলাদ, নগরপাড়া এলাকার দ্বীন ইসলাম, নাওড়া এলাকার রুবেল। আহতদের ঢাকার বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। এ ছাড়া সন্ত্রাসী হামলায় আরও আহত হন কায়েতপাড়া ইউপি সদস্য আবুল হোসেন, রিফাত হোসেন, নূর আলম, জামাল বাদশা, শাহাদাৎ হোসেন, রবিউল ইসলাম, জুবায়ের হোসেন, শাকিব মিয়া, আবিদ হোসেন ও মোহাম্মদ মিয়া আহত হন। হামলার সময় পুরো এলাকায় আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। স্থানীয় লোকজনসহ পথচারীরা ছোটাছুটি করতে শুরু করেন। পরে পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। এলাকায় আতঙ্ক বিরাজ করছে। নারায়ণগঞ্জ জেলা পুলিশের (গ অঞ্চল) সহকারী পুলিশ সুপার আবদুল্লাহ আল মাসুদ বলেন, পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে ইছাখালী ও নাওড়া এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। এলাকায় থমথমে অবস্থা বিরাজ করছে।

সর্বশেষ খবর