মঙ্গলবার, ২৮ মার্চ, ২০১৭ ০০:০০ টা
মন্ত্রিসভা বৈঠক

অষ্টম শ্রেণি পাস ছাড়া ড্রাইভিং লাইসেন্স নয়

নিজস্ব প্রতিবেদক

সড়ক পরিবহন আইন, ২০১৭-এর খসড়ায় নীতিগত অনুমোদন দিয়েছে মন্ত্রিসভা। প্রস্তাবিত এ আইনে ড্রাইভিং লাইসেন্স পেতে ন্যূনতম অষ্টম শ্রেণি পাসের বাধ্যবাধকতা এবং গাড়ি চালানোর সময় মোবাইল ফোন ব্যবহার করলে শাস্তির বিধান রাখা হয়েছে। গতকাল সচিবালয়ে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সভাকক্ষে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত মন্ত্রিসভার বৈঠকে খসড়াটি অনুমোদন দেওয়া হয়। বৈঠক শেষে মন্ত্রিপরিষদ সচিব মোহাম্মদ শফিউল আলম সাংবাদিকদের বলেন, উচ্চ আদালতের নির্দেশে আগের অধ্যাদেশকে নতুন করে আইনে পরিণত করা হয়েছে। তবে আইনে বড় পরিবর্তন আনা হয়েছে। পরিবর্তন আনা হয়েছে শাস্তিতেও। তিনি বলেন, প্রস্তাবিত নতুন আইনের খসড়ায় বলা হয়েছে, ড্রাইভিং লাইসেন্স পেতে চালককে কমপক্ষে অষ্টম শ্রেণি পাস হতে হবে। আগের আইনে ড্রাইভিং লাইসেন্স পেতে শিক্ষাগত যোগ্যতার শর্ত ছিল না। চালকের সহকারীরও পঞ্চম শ্রেণি পর্যন্ত লেখাপড়া থাকতে হবে এবং সহকারী হতে হলেও বাধ্যতামূলকভাবে লাইসেন্স নিতে হবে। আগের অধ্যাদেশে সহকারীদের লাইসেন্সের কথা থাকলেও তাদের শিক্ষাগত যোগ্যতার শর্ত ছিল না। মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, গাড়ি চালানোর ক্ষেত্রে চালকের বয়স আগের মতোই কমপক্ষে ১৮ বছর হতে হবে। আর পেশাদার চালকদের বয়স হতে হবে কমপক্ষে ২১ বছর। প্রস্তাবিত আইনের খসড়ায় ড্রাইভিং লাইসেন্স ছাড়া গাড়ি চালালে অনধিক ছয় মাসের কারাদণ্ড বা ৫০ হাজার টাকা অর্থদণ্ড বা উভয় দণ্ড দেওয়ার বিধান রাখা হয়েছে। একইভাবে চালকের সহকারীর লাইসেন্স না থাকলে এক মাসের জেল বা ২৫ হাজার টাকা জরিমানার বিধান রাখা হয়েছে। তিনি বলেন, প্রস্তাবিত আইনটি পাস হলে চালক গাড়ি চালানোর সময় মোবাইল ফোন ব্যবহার করতে পারবেন না। আইন অমান্য করলে এক মাসের কারাদণ্ড বা পাঁচ হাজার টাকা জরিমানা গুনতে হবে। মন্ত্রিপরিষদ সচিব আরও জানান, ছয় মাসের কারাদণ্ড বা ৫০ হাজার টাকা জরিমানার বিধান রয়েছে এমন অপরাধের ক্ষেত্রে পুলিশ বিনা পরোয়ানায় চালকদের গ্রেফতার করতে পারবে। সচিব বলেন, চালকরা যাতে আইন মেনে চলেন, সে জন্য পয়েন্টভিত্তিক ব্যবস্থা চালু হবে। মোট ১২ পয়েন্ট বরাদ্দ থাকবে। বিভিন্ন অপরাধের জন্য চালকের পয়েন্ট কাটা যাবে। পয়েন্ট শূন্য হয়ে গেলে তার ড্রাইভিং লাইসেন্স বাতিল হয়ে যাবে। মোহাম্মদ শফিউল আলম জানান, প্রস্তাবিত আইনে মোটরযান চলাচলে সাধারণ নির্দেশাবলি নামে একটি নতুন ধারায় ২৫টি নির্দেশনা যুক্ত করা হয়েছে, যাতে বলা হয়েছে, গণপরিবহনে নারী, শিশু, প্রতিবন্ধী ও বয়স্কদের জন্য সংরক্ষিত আসনে অন্য কোনো যাত্রী বসবেন না। বসলে এক মাসের কারাদণ্ড বা পাঁচ হাজার টাকা জরিমানা অথবা উভয় দণ্ডে দণ্ডিত হতে হবে। মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, উচ্চ আদালতের নির্দেশে ১৯৮৩ সালের মোটরযান অধ্যাদেশকে নতুন আইনে পরিণত করা হয়েছে। এ ছাড়া গতকালের বৈঠকে বাংলাদেশ মত্স্য গবেষণা ইনস্টিটিউট আইন, ২০১৭ এবং আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইনস্টিটিউট (সংশোধন) আইন, ২০১৭-এর খসড়ায় নীতিগত অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। মন্ত্রিপরিষদ সচিব জানান, আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইনস্টিটিউট আইনে মাত্র একটি পরিবর্তন আনা হয়েছে। সেটি হচ্ছে মহাপরিচালকের পদে। সংশোধিত আইন অনুযায়ী মহাপরিচালকের জায়গায় ইনস্টিটিউটের প্রধান হবেন পরিচালক।

সর্বশেষ খবর