বুধবার, ২৯ মার্চ, ২০১৭ ০০:০০ টা
রিজার্ভ চুরি

মামলা করার চিন্তা ফেডের বিরুদ্ধে

নিজস্ব প্রতিবেদক

মামলা করার চিন্তা  ফেডের বিরুদ্ধে

বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভ চুরির ঘটনায় নিউইয়র্কের ফেডারেল রিজার্ভ সিস্টেমের (ফেড) বিরুদ্ধে আবারও মামলার কথা ভাবছে সরকার। এজন্য আইনি বিষয়গুলো খতিয়ে দেখতে আইনমন্ত্রী, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী এবং অ্যাটর্নি জেনারেলকে পরামর্শ দিয়েছেন অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত। ফিলিপাইনের কেন্দ্রীয় ব্যাংকও এখন অর্থ ফেরতে করণীয় নির্ধারণে বাংলাদেশ ব্যাংকের সঙ্গে যোগাযোগ রক্ষা করছে বলে অর্থমন্ত্রীকে জানানো হয়েছে। এ ঘটনায় ফেড কোনোভাবেই দায় এড়াতে পারে না। ফলে প্রতিষ্ঠানটির বিরুদ্ধে মামলা করা হলে বাংলাদেশই সুবিধাজনক অবস্থানে থাকবে বলে তিনি মনে করেন। গতকাল সচিবালয়ে অর্থমন্ত্রীর সভাপতিত্বে এক বৈঠকে এসব বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়েছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভ চুরি, ই-মেইল হ্যাক এবং অগ্নিকাণ্ডের ইস্যুকে প্রাধান্য দিয়ে গতকাল রুদ্ধদার বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। বৈঠকে আইনমন্ত্রী আনিসুল হক, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল, পুলিশের আইজি কে এম শহীদুল হকসহ মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। বৈঠক শেষে অর্থমন্ত্রী সাংবাদিকদের বলেন, বাংলাদেশ ব্যাংকের অগ্নিকাণ্ড একটি নিছক দুর্ঘটনা। শর্টসার্কিট থেকে আগুন লেগেছে। অর্থমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশ ব্যাংকের আইটি স্থাপনার নিরাপত্তা ব্যবস্থাটি বেশ পুরনো। ২০০৮ থেকে ২০১৩ সাল মেয়াদি ছিল এ নিরাপত্তা ব্যবস্থা। সেখানে সংস্কার করার সিদ্ধান্ত হয়েছে। চুরি হওয়া রিজার্ভের টাকা ফেরত পাওয়ার বিষয়ে ফের আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন অর্থমন্ত্রী। সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আমরা আশাবাদী। রিজার্ভের বাকি টাকা ফেরত পাব। তবে এতে সময় লাগতে পারে। এদিকে, বৈঠকের একটি সূত্র জানায়, বাংলাদেশ ব্যাংকের আইটি ব্যবস্থা (সার্ভার, রাউটার, সুইচ, স্টোরেজ, ফায়ার ওয়াল, ইউপিএস, প্রিসিশন এয়ারকন্ডিশনার ইত্যাদি) ২০০৮ সালে স্থাপন করা হয়, যার রক্ষণাবেক্ষণের মেয়াদ ২০১৩ সালে উত্তীর্ণ হয়েছে। এটি সংস্কারের জন্য ব্যাংক সম্প্রতি অর্থ মন্ত্রণালয়কে চিঠি দিয়েছে। এজন্য বাংলাদেশ ব্যাংকের নিরাপত্তা জোরদার করার সিদ্ধান্ত হয়েছে। বিশেষ করে বাংলাদেশ ব্যাংকের আইটি বিভাগকে নিরাপত্তার চাদরে ঢেকে ফেলা হবে। ভবিষ্যতে যেন এই বিভাগের কোনো ধরনের তথ্য হ্যাক করা সম্ভব না হয় সেজন্য নেওয়া হবে সর্বাধুনিক ব্যবস্থা। আর এসব পদক্ষেপ নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করা হয়েছে গতকাল। সম্প্রতি বাংলাদেশ ব্যাংকের অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন অর্থমন্ত্রী। আপাতত দৃষ্টিতে শর্টসার্কিটের ফল্ট মনে হলেও এর আড়ালে কোনো ষড়যন্ত্র রয়েছে কিনা-তা খুঁজে বের করার নির্দেশ দিয়েছেন তিনি। এ ছাড়া ই-মেইল হ্যাক হওয়ার বিষয়টি কতটা গুরুতর তা নিয়েও তিনি প্রশ্ন তোলেন বৈঠকে। সতর্কতা সত্ত্বেও এ ধরনের ঘটনা কীভাবে ঘটল, এতে কারও গাফিলতি ছিল কিনা-তা খুঁজে বের করে দোষীদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন অর্থমন্ত্রী।

সর্বশেষ খবর