শনিবার, ১ এপ্রিল, ২০১৭ ০০:০০ টা

ছাত্রদল নেতা নূরুর দাফন অভিযোগ পুলিশের বিরুদ্ধে

বৃহত্তর চট্টগ্রামে কাল অর্ধদিবস হরতালের ডাক

নিজস্ব প্রতিবেদক, চট্টগ্রাম

ছাত্রদল নেতা নূরুর দাফন অভিযোগ পুলিশের বিরুদ্ধে

লাশ উদ্ধার হওয়া ছাত্রদল কেন্দ্রীয় কমিটির সহসাধারণ সম্পাদক নূরুল আলম নূরুর দাফন সম্পন্ন হয়েছে। তবে মরদেহ উদ্ধারের ঘটনায় এখনো মামলা হয়নি। তবে পরিবারের কেউ মামলা না করলে পুলিশ বাদী হয়ে মামলা করবে। বিএনপি ও পরিবারের অভিযোগ, নূরুকে পুলিশ ধরে নিয়ে গিয়ে ‘হত্যা’ করেছে।

গতকাল বাদজুমা জমিয়তুল ফালাহ মসজিদ মাঠে জানাজা শেষে নূরুল আলমকে মিসকিন শাহ্ মসজিদ সংলগ্ন কবরস্থানে দাফন করা হয়। বিএনপি ও অঙ্গ সহযোগী সংগঠন, নূরুর বন্ধুবান্ধবসহ হাজারো শুভানুধ্যায়ী জানাজায় শরিক হন। নুরুর বাড়ি রাউজানের গুজরা ইউনিয়নের নোয়াপাড়া গ্রামের কমলার দীঘির পাড় এলাকায়। এদিকে নূরুহত্যার প্রতিবাদে আগামীকাল বৃহত্তর চট্টগ্রামে হরতাল আহ্বান করেছে জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল। এতে সমর্থন জানিয়েছে কেন্দ্রীয় যুবদল ও স্বেচ্ছাসেবক দল। গতকাল যুবদল সভাপতি সাইফুল আলম নীরব ও সাধারণ সম্পাদক সুলতান সালাউদ্দিন টুকু হরতাল পালনে বৃহত্তর চট্টগ্রামের সংগঠনের নেতা-কর্মীদের আহ্বান জানিয়েছেন।

নূরুর লাশ পাওয়া প্রসঙ্গে রাউজান থানার ওসি মো. কেফায়েত উল্লাহ সাংবাদিকদের বলেন, নিহতের পরিবার হয়তো মরদেহের দাফন নিয়ে ব্যস্ত ছিলেন। তাই পরিবারের কেউ এখনো মামলা করতে আসেননি। তবে পরিবার মামলা না করলে পুলিশ বাদী হয়ে মামলা করবে। গতকাল সকালে নূর আলমের মরদেহ নিতে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতাল মর্গে ভিড় করেছেন দলীয় নেতা-কর্মীরা। বেলা সাড়ে ১১টায় মর্গ থেকে অ্যাম্বুল্যান্সে করে নছিমন ভবনের দলীয় কার্যালয়ে নেওয়া হয়। এ সময় মর্গে লাশ দেখতে আসেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান, আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী, ভাইস চেয়ারম্যান গিয়াস কাদের চৌধুরী, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আমান উল্লাহ আমান, যুগ্ম মহাসচিব খায়রুল কবীর খোকন, ছাত্রবিষয়ক সম্পাদক শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানী, স্বাস্থ্যবিষয়ক সম্পাদক ডা. ফাওয়াজ হোসেন শুভ, নগর বিএনপির সভাপতি ডা. শাহাদাত হোসেন, সিনিয়র সহসভাপতি আবু সুফিয়ান, সাধারণ সম্পাদক আবুল হাশেম বক্কর, বিএনপি সমর্থিত চিকিৎসক নেতা ডা. খুরশিদ জামিল চৌধুরী প্রমুখ। চট্টগ্রামের কর্ণফুলীর তীরে পাওয়া ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় নেতা নুরুল আলম নুরুর লাশের জানাজা হয়েছে ঢাকাতে। গতকাল বাদআসর রাজধানীর নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে গায়েবানা জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। এতে বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান আবদুল্লাহ আল নোমান, মোহাম্মদ শাহজাহান, সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী, যুগ্ম মহাসচিব হাবিব-উন নবী খান সোহেল, আবদুস সালাম, আবুল খায়ের ভুঁইয়া, অ্যাডভোকেট সানাউল্লাহ মিয়া ও মাসুদ আহমেদ তালুকদার, ছাত্রদল সাধারণ সম্পাদক আকরামুল হাসান প্রমুখ অংশ নেন।ৎ চট্টগ্রামে আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেন, অমানবিক এ হত্যাকাণ্ড রাজনৈতিক পরিবেশকে কলুষিত করেছে, যা কারও জন্য মঙ্গল বয়ে আনবে না। বিএনপি হত্যার রাজনীতিতে বিশ্বাসী নয়। নিয়মতান্ত্রিক রাজনীতি দিয়ে বিএনপি হত্যার রাজনীতি মোকাবিলা করবে। ডা. শাহাদাত হোসেন বলেন, ছাত্রদল নেতা নূরুকে নগর এলাকা থেকে তুলে নেওয়া হয়েছে। তাই এ হত্যাকাণ্ডের পেছনে কারা জড়িত তা বের করা সিএমপির দায়িত্ব। তৃণমূল থেকে উঠে আসা ত্যাগী ছাত্রনেতা ছিলেন নুরু। তার বিরুদ্ধে রাজনৈতিক মামলা ছাড়া অন্য কোনো মামলা নেই। বুধবার রাত সাড়ে ১১টার দিকে নগরীর কাতালগঞ্জ এলাকার বাসা থেকে নুরুল আলম নুরুকে তুলে নিয়ে যাওয়া হয় বলে অভিযোগ বিএনপি ও পরিবারের। পরদিন বৃহস্পতিবার বিকাল ৪টায় চট্টগ্রামের কর্ণফুলী নদীতীরে রাউজানের বাগোয়ান ইউনিয়নের কোয়েপাড়া গ্রামের খেলাঘাট এলাকায় উপুড় হওয়া অবস্থায় তার মরদেহ উদ্ধার করা হয়। উদ্ধারকৃত লাশের মাথায় গুলির ও সারা শরীরে আঘাতের চিহ্ন ছিল। তার হাত-পা রশি দিয়ে বাঁধা, পরনে ছিল লুঙ্গি। চোখ বাঁধা ছিল শার্ট দিয়ে। মুখের ভিতর ওড়না ঢোকানো পাওয়া গেছে বলে ওইদিন পুলিশ জানিয়েছিল।

সর্বশেষ খবর