শনিবার, ১ এপ্রিল, ২০১৭ ০০:০০ টা
কৃষি সংবাদ

জিরা চাষ করে সাড়া ফেললেন

সালমা আহমেদ, বাঞ্ছারামপুর (ব্রাহ্মণবাড়িয়া)

জিরা চাষ করে সাড়া ফেললেন

সকাল থেকে সন্ধ্যা। জিরাচাষি আলমগীরের ফুরসৎ নেই। দূর-দূরান্ত থেকে তার জিরার চাষ দেখতে উৎসুক জনতা ভিড় করছেন। তাতে তিনি ক্লান্ত নন, বরং খুশি। বাঞ্ছারামপুর উপজেলার পার্শ্ববর্তী গ্রাম হোমনার (কুমিল্লা) দৌলতপুরের আলমগীর হোসেন বৃহত্তর কুমিল্লায় এই প্রথম জিরা চাষ করে সাড়া ফেলেছেন সারা দেশে। কথা বলে জানা গেছে, আলমগীর ৯ শতাংশ জমিতে পরীক্ষামূলকভাবে জিরা চাষ করেন অনেকটা শখের বশে। এতেই সফলতা। এ বছর তো তাক লাগিয়ে দিয়েছেন বৃহত্তর কুমিল্লার সেরা কৃষকদের। তিনি জানান, তার ছোটভাই মো. আবুল হোসেন ১৪ বছর ধরে সৌদি আরব থাকেন। সেখানে নড়াইলের এক ব্যক্তির সঙ্গে পরিচয় হয় হোসেনের। নড়াইলের ওই ব্যক্তির এক ভাই ইরান প্রবাসী। ইরান প্রবাসী ওই ব্যক্তি ইরান থেকে রোপণ করার উদ্দেশে কিছু জিরা দেশে নিয়ে আসেন। তার কাছ থেকে আধা কেজি জিরা এনেছেন আলমগীর। সেই জিরা থেকে প্রায় আড়াইশ গ্রাম মাস তিনেক আগে ৯ শতক জমিতে চাষ করেন আলমগীর। তিনি বলেন, ‘আমাদের জমিতে জিরা হবে, তা কখনো কল্পনা করতে পারিনি। সাধারণ ফসলের মতোই জমিতে জিরা চাষ করেছি। ৯ শতক জমিতে জিরা চাষে ১৫ কেজি সার এবং আগাছা পরিষ্কার বাবদ কিছু খরচ হয়েছে। ফুলে ফুলে ভরে গেছে জিরাগাছগুলো। প্রতিটি গাছে জিরাও এসেছে প্রচুর। তবে কখন চাষ করতে হবে, সেই মৌসুম সম্পর্কে আমাদের জানা নেই। আমার জমিতে জিরা চাষ হয়েছে শুনে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা এসেছিলেন কয়েক দিন আগে। তিনি আমাকে নানা পরামর্শ দিয়ে গেছেন। গতকাল ২০ মার্চ দৌলতপুর গ্রামে পৌঁছার আগেই অনেক দূর থেকে হলুদ আর সবুজের সমারোহ চোখে পড়ে। হালকা বাতাসে জমির ২০০ থেকে ৩০০ মিটার দূর থেকেই জিরার গন্ধ ভেসে আসছিল। ৩০-৩৬ ইঞ্চি লম্বা গাছগুলো ফুলে ফুলে ভরে গেছে। জিরাগাছের পাতা চিকন ও এক থেকে দেড় সেন্টিমিটার লম্বা হয়ে থাকে। প্রায় প্রতিটি গাছেই জিরা ধরেছে প্রচুর।

এলাকাবাসী জানান, এতদিন ধারণা ছিল আমাদের দেশের আবহাওয়া জিরা চাষের উপযোগী নয়। কিন্তু কৃষক আলমগীর সেটা ভুল প্রমাণ করেছেন। বাঞ্ছারামপুরের বিশিষ্ট কৃষি বিশেষজ্ঞ মেহেদী পলাশ বলেন, বাংলাদেশে জিরা চাষ একেবারেই নতুন একটি বিষয়। হোমনার দৌলতপুর গ্রামে জিরা চাষ হচ্ছে, এমন খবর পেয়ে সেখানে গিয়ে দেখি প্রতিটি গাছে উল্লেখযোগ্য পরিমাণ জিরা এসেছে। জিরার এই চাষ সফল হলে হোমনা তথা দেশে জিরা চাষের একটি বিপ্লব ঘটবে বলে আমার বিশ্বাস।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর